ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

হিরোয়ি মিয়াতার লাশ জাপানী দূতাবাসের কাছে হস্তান্তর

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ৯ এপ্রিল ২০১৬

হিরোয়ি মিয়াতার লাশ জাপানী দূতাবাসের কাছে হস্তান্তর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাপানী নারী হিরোয়ি মিয়াতার (৬১) লাশ জাপানী দূতাবাসের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ৫ মাস দশ দিন পর শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে তার লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গ থেকে জাপান দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি সুধি ওনু ও সেকেন্ড সেক্রেটারি কসু মাতসোনাগার কাছে মরদেহটি বুঝিয়ে দেন পুলিশ। উত্তরা-পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুশফিকুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, দূতাবাসের কর্মকর্তারা লাশ কোথায় নেবেন। তা তারা পুলিশকে জানাননি। পুলিশ জানায়, প্রায় ১০ বছর ধরে ঢাকায় ছিলেন হিরোয়ি। দীর্ঘদিন ধরে হিরোয়ি মিয়াতা উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরে ১৩/বি নম্বর সড়কের ৮ নম্বর হোল্ডিংয়ে সিটি হোমস নামের একটি আবাসিক হোটেলে থাকতেন। ঢাকার কয়েক ব্যক্তির সঙ্গে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন তিনি। এ ছাড়া জাপান সরকারের পেনশনও পেতেন। গত বছরের ১৯ নবেম্বর জাপান দূতাবাসের এক কর্মকর্তা উত্তরা-পূর্ব থানায় হিরোয়ি মিয়াতা নিখোঁজ রয়েছেন বলে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এই জিডির তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে ২৯ অক্টোবর মিয়াতার মৃত্যু হয়। এরপর তার পরিচয় ও নাগরিকত্ব গোপন করে হালিমা খাতুন নামে মুসলিম পরিচয়ে উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরের খালেরপাড়ের ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন কবরস্থানে গোপনে দাফন করা হয়। মামলার সূত্রে জানা গেছে, মিয়াতা প্রতি সপ্তাহে তার মাকে ফোন করতেন। গত বছরের ২৬ অক্টোবর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার মা মিয়াতাকে খুঁজে বের করে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে ঢাকায় জাপানী দূতাবাসের কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেন। জাপান দূতাবাসের অনুরোধে পুলিশ মিয়াতার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় তদন্ত করে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে উত্তরা-পূর্ব থানায় মামলা করে। হিরোয়ি মিয়াতাকে অপহরণের পর খুন করে লাশ গুম করা হয় বলে মামলায় উল্লেখ করেছে পুলিশ। পুলিশ ঢাকা ও লক্ষ্মীপুরে অভিযান চালিয়ে এই মামলায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। এরা হচ্ছেন মোঃ মারুফুল ইসলাম (৩০), রাশেদুল হক ওরফে বাপ্পী (৪২), ফখরুল ইসলাম (২৭), বিমল চন্দ্র শীল (৪০) ও মোঃ জাহাঙ্গীর (২৮)। এঁদের মধ্যে বিমল ছিলেন পেশায় চিকিৎসক। পুলিশ বলেছে, গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা তৈরি পোশাক ব্যবসায়ী। জাপানের নাগরিক মিয়াতার মাধ্যমে তারা জাপানসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ব্যবসা করতেন। জিডির পরে তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে এজাহারভুক্ত আসামি জাকিরুল ইসলাম পাটোয়ারি (৪২) ও মারুফুল ইসলাম ব্যবসায়ী অংশীদার মিয়াতার। তারা মিয়াতাকে সিটি হোমস হোটেলে রাখতেন। রাশেদুল সুকৌশলে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যান। এরপর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ফখরুলের বাসায় আটকে রাখেন। তারা মিয়াতাকে আটকে রেখে জাপানে তার স্বজনদের কাছে মুক্তিপণ দাবি করেন। এজাহারে বলা হয়, বিমল চন্দ্র শীলের উপস্থিতি ও সহায়তায় পাঁচ আসামি ২৯ অক্টোবর ভোর চারটার দিকে সুকৌশলে মিয়াতাকে হত্যা করেন। ওই দিন বিকেলে মারুফুল মিয়াতার লাশ সমাহিত করেন। মিয়াতার ল্যাপটপটি রাশেদুলের প্রতিষ্ঠান থেকে জব্দ করে পুলিশ।
×