ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মাটির সঙ্গে সম্পর্ক ছাড়ছে কুমাররা

প্রকাশিত: ০৩:৪১, ৯ এপ্রিল ২০১৬

মাটির সঙ্গে সম্পর্ক ছাড়ছে কুমাররা

একটা সময় ছিল যখন গ্রামীণ পরিবারের পাশাপাশি শহুরে জীবনেও সংসারের প্রয়োজনীয় জিনিস বলতে ছিল মাটির হাড়ি-পাতিল, কলস, কড়াই, ঢাকনা, সরাই, সানকি থেকে শুরু করে দইয়ের পাত্র। নব্বইয়ের দশকেও গ্রামের বাড়ি বাড়ি দেখা মিলেছে মাটির হাড়ি-পাতিলের। পবার বাগধানি এলাকার মৃৎশিল্পী সরেন পাল জানান, তাদের এলাকায় হাড়ি ও খেলনা তৈরি হয়। এসবও মৌসুমভিত্তিক হয়ে গেছে। তিনি বলেন, সব পেশার মানুষের জন্য ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবস্থা আছে। অথচ তারা এ থেকে বঞ্চিত। রাজশাহীর পবা উপজেলার আরেকটি গ্রাম বসন্তপুর। ওই গ্রামের ৫০ পরিবার এ পেশায় জড়িত। তবে নানা কারণে তারাও এ পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। এ গ্রামে ২৭ বছর ধরে এ পেশা ধরে রেখেছেন সুশান্ত কুমার পাল। এরই মধ্যে অনেক পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি। জাপানে গিয়েও মাটির কারুকাজ রপ্ত করে এসেছেন। কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি জানান, এখনও তিনি ও তাঁর পরিবার ধরে রেখেছেন এ পেশা। বাড়ির সবাই মিলে কাজ করেন। ঝিমিয়ে পড়া এ গ্রামটিতে নতুন করে হাওয়া লেগেছে। প্রথমবারের মতো প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শখের হাড়ি, মুখোশ, মাটির পুতুল, পঞ্চসাজি, তৈরি করা হচ্ছে। এবার এ কাজে যুক্ত হয়েছে নতুন প্রজন্মের শিশুরাও। তারাও তৈরি করছে মাটির পুতুল থেকে শুরু করে হাতি, ঘোড়া, পাখি, কলস, বাটি-ঘটি। সুশান্ত কুমার পাল বলেন, সময়ের পরিবর্তনে মাটির তৈরি সামগ্রীর প্রয়োজন ফুরিয়েছে। টিকে আছে শুধু শখ। বংশপরম্পরায় শিল্পটির সঙ্গে জড়িয়ে ছিল যাদের নাম, তাদের মধ্যেই এখন চলছে পেশাবদলের হিড়িক। মাটি-কাদার সম্পর্ক ছেড়ে কেউ বেছে নিচ্ছে কৃষি শ্রমিকের পেশা। কেউ রিকশা-ভ্যান চালিয়ে জীবিকার সংগ্রামে ব্যস্ত। -মামুন-অর-রশিদ রাজশাহী থেকে
×