ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আবাসিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল রাখার সিদ্ধান্ত নেবে এলাকাবাসী

প্রকাশিত: ০৬:০০, ৮ এপ্রিল ২০১৬

আবাসিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল রাখার সিদ্ধান্ত নেবে এলাকাবাসী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আবাসিক এলাকায় গড়ে ওঠা হাসপাতালসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সেবামূলক কিনা তা স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করে রাখা না রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। স্থানীয়রা যদি কোন প্রতিষ্ঠান রাখার পক্ষে মত দেন তাহলে ওইসব প্রতিষ্ঠান রাখা হবে। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের বেলায় স্থানীয় সরকার, স্বরাষ্ট্র, পূর্ত ও সড়ক যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হবে। ওই কমিটি আবাসিক এলাকায় অনুমতি ছাড়া বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি তালিকাও তৈরি করেছে। আমরা আবাসিক এলাকায় কোন রকম বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থাকতে দেব না। অনুমোদন নিয়ে আবাসিক এলাকায় যারা ব্যবসা করছেন তারাও অবৈধ। ৬ মাসের মধ্যে এ সব অবৈধ প্রতিষ্ঠান উঠে না গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এসব কথা বলেন। আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবহার বিষয়ে সম্প্রতি মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের পর বিষয়টি বাস্তবায়ন করতে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। আবাসিক এলাকায় বিভিন্ন রকম প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় আবাসিক এলাকার চরিত্রই বদলে গেছে। এই চরিত্র ফিরিয়ে আনতে এসব প্রতিষ্ঠান ৬ মাসের মধ্যে তুলে নেয়ার সময় সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠানগুলো সরানো না হলে সরকার অভিযান শুরু করবে। গত ৪ এপ্রিল মন্ত্রিসভা এক সিদ্ধান্তে জানায়, নগর এলাকায় আগামী ছয় মাসের মধ্যে আবাসিক প্লট, ভবনের রেস্টুরেন্ট ও বারসহ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সরাতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, এসব প্রতিষ্ঠানের কারণে আবাসিক এলাকা স্বকীয়তা হারাচ্ছে। এ কারণে একটি সুন্দর শহর গড়ার পরিকল্পনা করা যাচ্ছে না। গ্যারেজের মধ্যে দোকান, রেস্টুরেন্ট, লন্ড্রি, বার, গেস্ট হাউসসহ নানা ধরনের বাণিজ্যিক কর্মকা- চলছে। আবাসিক এলাকা শুধু আবাসিক হিসেবেই থাকবে। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জন্য ছয় মাস সময় দিচ্ছি, ব্যর্থতায় পরবর্তী এক মাসের মধ্যে রাজউক ও সিটি কর্পোরেশন দ্রুত অপসারণ করবে এবং ইউটিলিটি সেবা বন্ধ করে দেয়া হবে। আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জন্য কেউ লাইসেন্স দিয়ে থাকলে তা বেআইনী এবং যে নিয়েছে সেটাও বেআইনী কাজ হয়েছে। বেআইনী কাজ করতে দেয়া হবে না। হাসপাতাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেবামূলক হতে পারে। আবার বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোও সেবামূলক হতে পারে। আমরা স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনা করব, যদি সেবামূলক হয়ে থাকে তাহলে অনুমতি দিতে অসুবিধা নেই। আর যদি স্থানীয়রা আপত্তি করেন যে বাণিজ্যিকভাবে চলছে তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্থানীয়দের আপত্তি থাকলে তাহলে চলে যেতে হবে, দ্বিতীয় কোন কথা নেই। আবাসিক এলাকায় যদি অনুমোদন নিয়ে বার চালানো হয় তাহলে সেটাও অবৈধ। ছয় মাসের মধ্যে না সরালে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে এমন এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ছয় মাসের মধ্যে না তুলে নিলে তখন লাইসেন্স বাতিল, এ্যাকশনের প্রশ্ন চলে আসবে। তবে আমরা দেখব কেউ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হন। আবাসিকে কেউ বাণিজ্যিকের জন্য আবেদন করলে বৈধতা পাবে। বনশ্রী আবাসিক এলাকা হিসেবে থাকলে বাণিজ্যিক করতে পারবে না। কাউকে কোনভাবে ছাড় দেয়া হবে না। প্লটের মোট বাণিজ্যিক ব্যবহার হচ্ছে পাঁচ হাজার ৪৮৮টি, বৈধ ৫৬৮ ও অবৈধ চার হাজার ৯২০টি। সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় সরকার সচিব আব্দুল মালেক বলেন, ঢাকাসহ সব সিটি কর্পোরেশনে যে আবাসিক প্লট সরকার বরাদ্দ দিয়েছে সেগুলোর মধ্যে সামাজিক-বাণিজ্যিক এবং সেবামূলক-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল সরকার করে দিয়েছে। ওই প্লটগুলো অক্ষত রাখব। আর যেগুলো ব্যক্তিগতভাবে বা অননুমোদিতভাবে করা হয়েছে সেগুলো তালিকা তৈরি করে দেখা হবে। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের তালিকা হাতে এসেছে। কতগুলো বার রযেছে সে তালিকাও হাতে এসেছে। অননুমোদিত রেস্টুরেন্টে আমরা হাত দেব। অনুমতি ছাড়া রেস্ট হাউসগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×