ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

গুম-খুনের বিচার একদিন হবেই ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৪:১১, ৮ এপ্রিল ২০১৬

গুম-খুনের বিচার একদিন হবেই ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে যেসব গুম-খুনের ঘটনা ঘটছে এর বিচার একদিন হবেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছাত্রদল আয়োজিত গুম হওয়া তেজগাঁও কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি আমিনুল ইসলাম জাকিরের জন্য দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, এ সরকারকে বাধ্য করতে হবে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে। ফখরুল বলেন, গুম হচ্ছে সবচেয়ে বড় মানবতাবিরোধী অপরাধ। গত ক’বছরে দেশে গুম চরম আকার ধারণ করেছে। আমিনুল ইসলাম জাকিরকে সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুম করেছে। বিএনপির আন্দোলন চলাকালে গত বছর ৭ এপ্রিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গুলশান-২ থেকে তাকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। এরপর থেকে সে নিখোঁজ। আমরা জানি না, সে বেঁচে আছে না মারা গেছে। তিনি বলেন, গত ক’বছর ধরে মানুষকে যত্রতত্র গুম করা হচ্ছে। এ গুমকা- শুরু হয়েছিল ঢাকার কমিশনার চৌধুরী আলমকে দিয়ে। এরপর সিলেটের অকুতোভয় নেতা ইলিয়াস আলী ও তারপর বিএনপির ৫ শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছে। কেউ আইন ও বিচারের উর্ধে নয় মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ৪০ বছর পরে হলেও গুম-খুনের বিচার হবেই। তিনি বলেন, বুধবার ভারতে একটি খবর বের হয়েছে, প্রায় চল্লিশ বছর আগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কয়েকজনকে ক্রসফায়ারে হত্যা করেছিল। তাদের বিচার হয়েছে এবং রায়ে তাদের যাবজ্জীবন কারাদ- হয়েছে অথচ আমাদের অসংখ্য মানুষকে গুম করা হয়েছে। তারপরও অপরাধীদের বিচার হচ্ছে না। বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আসুন, মহান রাব্বুল আল-আমিনের কাছে দোয়া করি, তিনি যেন আমিনুল ইসলাম জাকিরসহ গুম হওয়া সব নেতাকর্মীকে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেন। আর দেশে যেন গুমের সংস্কৃতির অবসান হয় এবং মানুষ যেন সুষ্ঠু পরিবেশে নিরাপদে চলাফেরা করতে পারে। মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাঁকে আদালতপাড়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা দেয়া হয়েছে। দেশের কেউ শান্তিতে নেই। এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। গণতন্ত্র ও আইনের শাসন ফিরিয়ে আনতে হবে। ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসানের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, দলের নেতা আব্দুস সালাম, ফজলুল হক মিলন, নাজিমউদ্দিন আলম, ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুনুর রশিদ মামুন, সহ-সভাপতি এজমল হোসেন পাইলট, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ প্রমুখ। কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকা-ের বিচারের অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন পর্যন্ত তনু হত্যার কোনকিছুই হলো না। পত্রিকা খুললেই মানুষ হত্যার খবর। এর বিরুদ্ধে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের রুখে দাঁড়াতে হবে। জিয়ার মাজার নিয়ে বাড়াবাড়ির পরিণাম ভাল হবে নাÑ শাহ মোয়াজ্জেম ॥ জিয়াউর রহমানের মাজার স্থানান্তরের চেষ্টার নিন্দা জানিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেছেন, এটা লাল শালুর কবর নয়, এটা দেশের স্বাধীনতার ঘোষকের মাজার। তাই জিয়ার মাজার নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে পরিণাম ভাল হবে না। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে অল কমিউনিটি ফোরাম নামক একটি সংগঠন আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। শাহ মোয়াজ্জেম বলেন, শেরেবাংলা নগর থেকে জিয়ার মাজার সরিয়ে ফেললে জনগণ বসে থাকবে, এমনটি ভাবার কোন কারণ নেই। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ক্ষমতা শেষ হলে তার যে কী পরিণাম হবে আল্লাহই ভাল জানেন। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আশরাফ উদ্দিন বকুলের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম, নাজিমউদ্দিন আলম, কাবিরুল হায়দার চৌধুরী প্রমুখ। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে শাহ মোয়াজ্জেম বলেন, সরকার বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে চল্লিশ বছরের স্মৃতিবিজড়িত বাসা থেকে বের করেছে। এর বিরুদ্ধে তখন আমরা আন্দোলন করতে পারিনি, আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এবার জিয়ার মাজার সরানো হলে বসে থাকলে হবে না। সরকার মনে করছে বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাবে গিয়ে কথা বলবে। সময়মতো তারা সরেও যাবে। মাজার সরানো হলেও তারা কোন আন্দোলন করতে পারবে না।
×