ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নেত্রকোনার শ্যামগঞ্জ দুর্গাপুর সড়ক

সড়ক নয়, যেন হালচাষ করা ক্ষেত

প্রকাশিত: ০৪:০২, ৮ এপ্রিল ২০১৬

সড়ক নয়, যেন হালচাষ করা ক্ষেত

সঞ্জয় সরকার/নিতাই সাহা, নেত্রকোনা ॥ সড়ক নয়, যেন হালচাষ করা ক্ষেত। বড় বড় খানাখন্দ। পুরোটাই কাঁদাপানিতে সয়লাব। মরণফাঁদ বললেও অত্যুক্তি হবে না। তবু এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন চলছে শত শত ট্রাক-বাসসহ অন্যান্য যানবাহন। এক ঘণ্টার পথ পাড়ি দিচ্ছে দু-তিন ঘণ্টায়। বছরের পর বছর ধরে চলছে এমন অবস্থা। কিন্তু সড়কটি সংস্কারের কোন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়- এ সড়কটির যেন কোন কর্তৃপক্ষই নেই! সরেজমিন জেলার শ্যামগঞ্জ-দুর্গাপুর সড়কে গিয়ে দেখা গেছে এমন অবস্থা। জানা গেছে, সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ ২০১১-১২ অর্থবছরে ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২টি সেতুসহ পূর্বধলার শ্যামগঞ্জ থেকে দুর্গাপুর উপজেলা সদর পর্যন্ত ৩৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কটি নির্মাণ করে। এরপর আর এটির তেমন সংস্কার হয়নি। রাজধানী ঢাকা, বিভাগীয় শহর ময়মনসিংহ এবং নেত্রকোনা জেলা সদর থেকে দুর্গাপুর উপজেলা সদরে যাতায়াতের একমাত্র সড়ক এটি। দুর্গাপুর ছাড়াও পূর্বধলা এবং কলমাকান্দা উপজেলার লোকজনও এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। দুর্গাপুর একটি প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ জনপদ। এখান থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় চিনামাটি, সোমেশ্বরীর সিলিকা বালি, কয়লা, নুড়ি পাথর এবং পাহাড়ী কাঠ সরবরাহ করা হয়। প্রতিদিন পাঁচ-ছয় শ’ ট্রাক ও থ্রি-হুইলার শ্যামগঞ্জ-দুর্গাপুর সড়ক দিয়ে এসব প্রাকৃতিক পণ্য পরিবহন করে। এছাড়া দুর্গাপুরের গারো পাহাড়, গারো-হাজং জীবনধারা, বিরিশিরির ক্ষুদ্র ও নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক একাডেমিসহ নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টানেও শত শত পর্যটকবাহী গাড়ি আসে দুর্গাপুরে। অন্যদিকে দুর্গাপুর ও জারিয়া থেকে নিয়মিত ময়মনসিংহ এবং ঢাকার পথে চলে অন্তত ৫০টি পাবলিক বাস। দীর্ঘদিন যাবত সংস্কার না হওয়ায় এবং উল্লিখিত ধরনের ভারি যান চলাচলের কারণে সড়কটির অবস্থা এখন বেহাল। পিচ-সুড়কি ওঠে গেছে। সরে গেছে ভিত্তির মাটি। প্রায় পুরোটাই সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দ। কোন কোন অংশ রীতিমতো খাল বা হালচাষ করা ক্ষেতে পরিণত হয়েছে। দেখে বোঝার উপায় নেই যে এক সময় এখানে পিচঢালা রাস্তা ছিল। সামান্য বৃষ্টিতেই কাদা-পানিতে সয়লাব হয়ে যাচ্ছে পুরো সড়ক। একবার কাদা হলে গাড়ি তো দূরের কথা, হাঁটাও সম্ভব হয় না। যখন তখন আটকে যায় ট্রাক-বাস। আর একবার একটি ট্রাক বা বাস আটকে গেলে তার সামনে-পেছনে আটকা পড়ে আরও শত শত যানবাহন। গর্ত আর খানাখন্দের কারণে ঘটে দুর্ঘটনাও।
×