ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কিয়ারোস্তামি ৭

প্রকাশিত: ০৬:৪৬, ৭ এপ্রিল ২০১৬

কিয়ারোস্তামি ৭

খ্যাতিমান পরিচালক আব্বাস কিয়ারোস্তামি শেষ বয়সে এসে লড়ছেন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি তাঁর শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়েছে। সফল অস্ত্রোপচারও হয়েছে। বিশ্ব চলচ্চিত্রের এই দুঃসময়ে আব্বাস কিয়ারোস্তামির কিছু অপূর্ব সৃষ্টি আবারও সামনে আনলো আনন্দকণ্ঠ। গ্রন্থনা- জারিন নিম্মি দ্য ট্রাভেলার (১৯৭৪) এ ছবির গল্পটি এক কিশোরকে নিয়ে, যে ফুটবল খেলা ভালবাসে। স্বপ্ন দেখে তেহরানের আমজাদি স্টেডিয়ামে বসে ম্যাচ দেখবে। সে স্বপ্নপূরণ করার জন্য টাকা চুরি করে, এবং পুরনো ঘড়ি ও ভাঙ্গা ক্যামেরা বিক্রির চেষ্টা চালায়। অনেকদিন পর যখন তার কাছে টাকা হল, সে স্টেডিয়ামে গেল, এবং সেখানে পৌঁছে সে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। জেগে উঠল যখন, দেখল, খেলা শেষ। ক্লোজআপ (১৯৯০) কিয়ারোস্তামি সব সময়ই তার ছবিতে তথ্যনির্ভর ও বাস্তবধর্মী চিত্র তুলে ধরতে চেয়েছেন। ‘কেøাজআপ’ও তার ব্যতিক্রম নয়। ছবিটির গল্প এমন একজনকে নিয়ে যে বিখ্যাত ইরানি পরিচালক মোহসিন মাখমালবাফের ভূমিকায় রূপদান করতে আগ্রহী দর্শক। ছবিটি কিয়ারোস্তামিকে আন্তর্জাতিক খ্যাতি এনে দিয়েছে। দ্য উইক উইল ক্যারি আস (১৯৯৯) ‘টেস্ট অব চেরি’ ছবির মত এ ছবিটিও জীবন ও মৃত্যুর ঠিকানা বহন করে। ছবির টাইটেলটি বিখ্যাত ইরানি মহিলা কবি ফাররুখজাদের কবিতা থেকে নেয়া। ছবির বিষয়বস্তুতেও ওমর খৈয়ামের কবিতার ছায়া বিদ্যমান। ছবিটি বিশ্বের বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে প্রশংসিত হয়েছে। পুরস্কার জিতেছে। দ্য রিপোর্ট (১৯৭৭) এ ছবিতে দেখানো হয়েছে চাকরিচ্যুত হওয়ার পর একজন পুরুষের জীবনে কেমন ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। এক পর্যায়ে গল্পের যে নায়ক, পুরুষটি, স্ত্রী-সন্তানদের ফেলে চলে যায় এ কারণে যে, সে ব্যর্থ পুরুষ। সে ভেবেছে, তার অবর্তমানে বেঁচে থাকার জন্য তার পরিবার নিশ্চয়ই কোন না কোন পথ খুঁজে নেবে। ‘দ্য রিপোর্ট’ কিয়ারোস্তামির একটি গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্র। হোয়্যার ইজ দ্য ফ্রেন্ড’স হোম? (১৯৮৭) এ ছবিটি কিয়ারোস্তামির ক্যারিয়ারের কেন্দ্রবিন্দু, যেটি দিয়ে তাকে আলাদা করে চেনা যায়। ছবিতে গ্রামের মানুষের নৈতিকতা ও শিশুদের সারল্যকে তুলে ধরেছেন তিনি। কিয়ারোস্তামি ডকুমেন্টারি ও ফিল্মের এক অভূতপূর্ব সমন্বয় ঘটিয়েছেন। সার্টিফাইড কপি (২০১০) এটি কিয়ারোস্তামির প্রথম ছবি, যেখানে ইরানি শিল্পীদের বাইরে এক ইংরেজ অভিনেত্রী জুলিয়েট বিনোচ অভিনয় করেছেন। তিনি ছিলে পরিচালকের বহুদিনের বন্ধু। কীভাবে ভালবাসা খাঁটি অথবা নকল হতে পারে, সেটিকে উপজীব্য করেই বানানো হয়েছে ছবিটি। ২০১০ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবে জুলিয়েট সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতে নেন এতে অভিনয় করে। টেন (২০০২) এটি কিয়ারোস্তামির একটি মার্জিত এক্সপেরিমেন্টাল ছবি। তার নির্মিত প্রথম নারীপ্রধান ছবিও এটি। গল্পের মূলে এক বৃদ্ধা ও তার পুত্র। ২০০২ সালে কান উৎসবে মনোনীত হয় ‘টেন’।
×