ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

‘কমরেড আলাউদ্দিন সমগ্র’ গ্রন্থের ওপর আলোচনা

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ৭ এপ্রিল ২০১৬

‘কমরেড আলাউদ্দিন সমগ্র’ গ্রন্থের ওপর আলোচনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘আমার বাবা আজীবন সাধারণ মানুষের জন্যই লড়াই করেছেন। ছাত্রাবস্থা থেকেই তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৫২-১৯৫৪ শিক্ষাবর্ষে পাবনা এডওয়ার্ড মহাবিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন ভাষা আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। গ্রামের উন্নয়ন করাই ছিল তার লক্ষ্য। তিনি নিজে মাটি কেটে রাস্তা তৈরির কাজে সাহায্য করেছেন। তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশের জন্য সাংস্কৃতিক চর্চার ব্যবস্থা করেছিলেন। সর্বক্ষণিক রাজনীতির কারণে সবসময় তাকে আন্ডারগ্রাউন্ডে থাকতে হতো। তিনি কৃষক নেতা ছিলেন। তার সমস্ত জীবন এ বাংলার গরিব মানুষের জন্য ব্যয় করেছেন। কখনও তিনি নিজের, নিজের পরিবারের জন্য পৃথক কিছু করেননি। বাবা হিসেবে তার সম্পর্কে যা কিছু জানার ছিল আমি ততটা জানতে পারিনি। তার জীবনের অল্প কিছু অংশ আমার এ বইটিতে তুলে ধরেছি। এর মধ্যে রয়েছে তার অনুবাদ, কবিতা ও ডায়েরির কিছু অংশ। বলা যায় আমি তার সন্তান হিসেবে আংশিক দায়িত্ব পালন করেছি’- ‘কমরেড আলাউদ্দিন সমগ্র’ গ্রন্থ আলোচনা অনুষ্ঠানে একথা বলেন বইটির সম্পাদক আফরোজা অদিতি। জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী গ্যালারিতে চৈত্রে বই উৎসবে এ্যাডর্ন আয়োজিত গ্রন্থ নিয়ে আলোচনার বুধবার ছিল দ্বিতীয় দিন। এদিন বিকেলে আফরোজা অদিতি সংকলিত ও সম্পাদিত ‘কমরেড আলাউদ্দিন সমগ্র’ গ্রন্থের ওপর বিশেষ এক আলোচনা হয়। আলোচনায় অংশ নেন কবি সায্যাদ কাদির, ইন্দু সাহা, কাজী সিরাজ, আতা সরকার, কামরুল হাসান রঞ্জু প্রমুখ। বক্তারা বলেন, আলাউদ্দিন আহমেদের বাড়ি পাবনা জেলার ইশ্বরদী থানার সাহাপুর গ্রামে। সেখানেই তিনি বড় হয়েছেন। ১৯৫২ সালে তিনি যখন ভাষা আন্দোলনের মিছিল নিয়ে পথে বের হয়েছিলেন তখন ক্যাপ্টেন জায়েদী সেই মিছিলে ঘোড়া ছুটিয়ে দিয়েছিলেন। সেই সময় তিনি আহত হয়েছিলেন। পরবর্তীতেও ভাষা আন্দোলনের মিছিল করেছেন এবং যে কেউ যখনই গ্রেফতার হয়েছেন, তাদের জন্য টাকা সংগ্রহ করা, উকিল মোক্তার নিযুক্ত করা সব তিনি করতেন। কৃষক নেতা হিসেবে তখন তাদের সেøাগান ছিল ‘লাঙ্গল যার, জমি তার’। পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ছিলেন। তিনি যে কাজ করতেন আন্তরিকতার সঙ্গে করতেন, যা মুখে বলতেন কাজেও তাই করতেন। যার যেটুকু প্রাপ্য সম্মান তা থেকে কখনও কাউকে বঞ্চিত করেননি। তিনি নারী স্বাধীনতায় বিশ্বাসী ছিলেন। সবসময় তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়েছেন। তার পারিবারিক পাঠাগার, যা ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় বাড়ির সঙ্গে পুড়ে যায়Ñ সেখানে রাজনৈতিক বই ছাড়াও রবীন্দ্র, নজরুল, বুদ্ধদেব, আশুতোষ, জীবনানন্দ, সুকান্তসহ দেশী-বিদেশী নানা লেখক ও কবির বই ছিল। সেগুলো শুধু পরিবারের সবাই পড়ত না, সবার জন্য সে পাঠাগার উন্মুক্ত ছিল। তিনি গ্রামে পাঠাগার স্থাপন, রবীন্দ্র, নজরুল জয়ন্তী, সুকান্ত জন্মজয়ন্তী পালন, নাটক করার জন্য নিয়মিত ব্যবস্থা করতেন। সেই মঞ্চে মেয়েরাও নাটক, গান, কবিতা আবৃত্তি করত। তিনি সৎ একনিষ্ঠ রাজনীতিবিদ ছিলেন, সেই সঙ্গে ছিলেন লেখক, অনুবাদক। তিনি কার্ল মার্কসের বিখ্যাত গ্রন্থ ‘দ্য প্রোভারটি অব ফিলোসফি’র অনুবাদ করেন। নতুন সাংস্কৃতিক সংগঠন ফোক বাংলার আত্মপ্রকাশ ॥ সুফিয়া কামাল কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে ফোক বাংলার আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, লোকসঙ্গীত শিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায় ও চন্দনা মজুমদার। ফোক বাংলার সভাপতি শিল্পী বিমান চন্দ্র বিশ্বাস সভাপতিত্ব করেন। আলোচনা পর্ব শেষে উন্মোচন করা হয় ফোক বাংলার প্রথম প্রযোজনা ‘গহীন গাঙে ধরলাম পাড়ি’। এ্যালবামটিতে মোট ১২টি গান রয়েছে। গানগুলো গেয়েছেন বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, লাবনী অধিকারী, দয়াল সুবাস, সরস্বতী সরকার, অবিনাশ বাউল ও বাউল পলাশ। এ্যালবামটির সঙ্গীত আয়োজন করেন বিমান চন্দ্র বিশ্বাস। সবশেষে ছিল সঙ্গীতানুষ্ঠান। গোডোর প্রতীক্ষায় নাটকের রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠিত ॥ আবদুল্লাহ আল মামুন থিয়েটার স্কুল প্রাক্তনীর প্রথম প্রযোজনা ‘গোডোর প্রতীক্ষায়’ নাটকের রজতজয়ন্তী হয় বুধবার সন্ধ্যায়। শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে আয়োজিত নাটকটির ২৫তম প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আবদুস সেলিম ও নাটকটির নির্দেশক আতাউর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন থিয়েটার স্কুল প্রাক্তনীর আহ্বায়ক অভিনেত্রী শিরিন বকুল। শেষ হলো অটিজম সচেতনতা বিষয়ক শিশুদের চিত্রপ্রদর্শনী ॥ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, আবহমান গ্রামবাংলার দৃশ্য, প্রাণীসহ নানা বিষয় উঠে এসেছিল ক্ষুদে আঁকিয়েদের তুলির আঁচড় থেকে। বুধবার ছিল এ প্রদর্শনীর শেষ দিন। সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল প্রদর্শনী।
×