ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দলের নিবন্ধন ও প্রতীক নিয়ে ইসিতে পৃথক শুনানি

জাসদের দুই অংশই নিজেদের মূল দাবি করছে

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ৭ এপ্রিল ২০১৬

জাসদের দুই অংশই নিজেদের মূল দাবি করছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কাউন্সিলে ভাগ হয়ে যাওয়া জাসদের দুই অংশই নিজেদের মূল অংশ দাবি করে নিজেদের পক্ষে দলের নিবন্ধন ও প্রতীক বহাল রাখার জন্য ইসির কাছে দাবি করেছে। বুধবার ইসিতে পৃথক শুনানিতে এক অংশের সভাপতি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও অপর অংশের মঈনুদ্দিন খান বাদল নিজেদের মূল অংশ দাবি করে এ আবেদন জানান। বেলা ১১টায় হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বাধীন অংশ ইসির শুনানিতে অংশ নেয়। এরপর বিকেল ৩টায় মঈনুদ্দিন খান বাদলের নেতৃত্বে অপর অংশ পৃথক শুনানিতে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের কাছে তাদের এ দাবির কথা তুলে ধরেন। ইসির কর্মকর্তা অবশ্য জানান, সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করেই দলের নিবন্ধন ও প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। গত ১২ মার্চ জাতীয় কাউন্সিলকে ঘিরে জাসদের নেতৃত্ব দুই অংশে ভাগ হয়ে যায়। এর মধ্যে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও শিরীন আখতারের কমিটির পাশাপাশি দলের কার্যকরী সভাপতি মঈনুদ্দিন খান বাদল- শরীফ নুরুল আম্বিয়া ও নাজমুল হক প্রধানকে নিয়ে আলাদা কমিটির ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে ইনুর নেতৃত্বাধীন অংশের অফিসের ঠিকানা আগেরটি বহাল রাখা হলেও অপর অংশের ঠিকানা পরিবর্তন করা হয়েছে। দুই অংশই চলমান ইউপি নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে তাদের দলের প্রার্থীকে মশাল প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার জন্য ইসিতে আবেদন করে। দু’পক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে উভয় দলকেই বুধবার ইসির শুনানিতে ডাকা হয়। বেলা ১১টায় ইসির শুনানিতে অংশ নিয়ে দলের নিবন্ধন ও প্রতীক তাদের অংশে বহাল রাখার জন্য আবেদন জানান এক অংশের সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। একই সঙ্গে নিজের অংশকেই মূল জাসদ দাবি করে ইসির সুবিবেচনা আশা করেন। দেড় ঘণ্টার শুনানি শেষে তথ্যমন্ত্রী ইনু সাংবাদিকদের বলেন, ইসিতে আমাদের সব কাগজপত্র-দলিল জমা দিয়েছি। এই কাগজপত্রের বিষয়ে ইসি কিছু প্রশ্ন করেছে। দলের পক্ষে তার জবাব দেয়া হয়েছে। ইসির প্রতি আমাদের সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আশা করি তারা সুবিবেচনা করবেন। নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মোবারক, মোঃ জাবেদ আলী, মোঃ শাহনেওয়াজ, ইসি সচিব মোঃ সিরাজুল ইসলাম, যুগ্মসচিব (আইন শাখা) মোঃ শাজাহান এ শুনানিতে অংশ নেন। ইনুর নেতৃত্বাধীন জাসদের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক শিরীন আক্তার, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নুরুল আক্তার, অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, যুগ্মসম্পাদক এ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান শওকত, সাবেক সংসদ সদস্য জিকরুল আহমেদ খোকন, ঢাকা মহানগর জাসদের সভাপতি মীর আক্তারও শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন। এদিকে বিকেলে শুনানিতে অংশ নিয়ে অপর অংশের কার্যকরী সভাপতি সংসদ সদস্য মঈনুদ্দীন খান বাদল সাংবাদিকদের বলেন, শুনানিতে আমাদের যাবতীয় তথ্য উপস্থাপন করেছি। কমিশন সব শুনেছে। আমরা জানিয়েছি মশাল প্রতীক আমাদের। এখন প্রত্যাশাÑ ইসি যথাযথ সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হবে। যারা মশাল নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তাদের কাছ থেকে মশাল কেড়ে নেয়া যাবে না। কাজেই মশাল প্রতীক আমার। তিনি বলেন, ১২ মার্চের কাউন্সিলে ইনু-শিরীনের কমিটি অগণতান্ত্রিকভাবে গঠিত হয়েছে। দলের স্থায়ী কমিটি, জেলা কমিটি এবং সংসদীয় কমিটিতে তাদের অংশই সংখ্যাগরিষ্ঠ। জাসদের কাউন্সিলর ১ হাজার ২শ’ ৩৬ জন। ইনু-শিরীন অংশ দেখিয়েছে ৬০৩ ভোট। বাকিরা গেল কোথায়? জাসদের ৬ জন সংসদ সদস্যের চারজনই আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। স্থায়ী কমিটির ১২ জনের মধ্যে ৭ জন আমাদের সঙ্গে। সারাদেশেরে ৭৯টি কমিটির মধ্যে ৪০টি আমাদের। আমরাই জাসদের মূলধারা। সংসদে আমি, ইনু, শিরীন নৌকা মার্কায় নির্বাচিত হয়েছি। মশাল প্রতীকে যে দু’জন নির্বাচিত হয়েছেন তারা আমাদের সঙ্গে। যারা মশাল নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তাদের কাছ থেকে মশাল কেড়ে নিতে পারবেন না? দলের মধ্যে যে দুইজন মশাল নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তাদের কাছ থেকে মশাল কেড়ে নিলে সংসদে মশাল প্রতীকে নির্বাচিতদের স্ট্যাটাস কী হবে। এ নিয়ে নতুন করে জটিলতা দেখা দেবে। একই সঙ্গে মশাল নিয়ে ইসির সিদ্ধান্ত পক্ষে না গেলে আদালতে যাওয়ার আভাসও দেন তিনি। এ সময় এ পক্ষের শুনানিতে শরীফ নুরুল আম্বিয়া, নাজমুল হক প্রধানও ছিলেন।
×