ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এক রাজনৈতিক নেত্রীর নির্দেশে জ্বালাও-পোড়াও তা-বে সেদিন দগ্ধ হয়েছিল অসংখ্য মানুষ, এ কোন্্ রাজনীতি!;###;প্রথম বিশ্বমানের এই ইনস্টিটিউটে থাকবে ৫০০ শয্যা

কল্যাণকর কাজ করব ॥ প্রধানমন্ত্রীর সাফ কথা ॥ বার্ন ইনস্টিটিউট উদ্বোধন

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ৭ এপ্রিল ২০১৬

কল্যাণকর কাজ করব ॥ প্রধানমন্ত্রীর সাফ কথা ॥ বার্ন ইনস্টিটিউট উদ্বোধন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে হত্যার বিএনপি-জামায়াত জোটের রাজনীতির কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, যারা মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে তারা কী করে আশা করতে পারে জনগণ তাদের সমর্থন দেবে। যারা জনগণকে পুড়িয়ে মারে তারা কী ধরনের রাজনীতি করে? মানুষকে পুড়িয়ে হত্যার মাধ্যমে সরকার উৎখাত করে ক্ষমতায় যাওয়া- এটা কোন ধরনের রাজনীতি? মানুষ পুড়িয়ে মারা তো কোন রাজনীতি হতে পারে না। ঔপনিবেশিক আমলে নির্মিত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভবন ভেঙ্গে ফেলার পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, লেখালেখি বা সমালোচনা দিয়ে কল্যাণকর চিন্তা থামিয়ে রাখা যাবে না। দেশের মানুষের জন্য যেটা করা দরকার সেটা আমি করব। যা কল্যাণকর তা করে ছাড়বই। বুধবার রাজধানীর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন সচিবালয় রোডে দেশের প্রথম ‘শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন এ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি’ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যদানকালে প্রধানমন্ত্রী প্রতি জেলা সরকারী হাসপাতাল বার্ন ইউনিট স্থাপন করার ঘোষণা দেন। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের পুরনো বিল্ডিংগুলো ভেঙ্গে আধুনিক করে গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, আমরা হেরিটেজ হেরিটেজ বলে এই পুরনো বিল্ডিংগুলো ব্যবহার করতে গিয়ে কখন যে মাথার ওপর ভেঙ্গে পড়ে মানুষ মারা যাবে তার কোন ঠিক নেই। কিছুটা হেরিটেজ রক্ষার জন্য যেটুকু দরকার, সেটুকু রাখা যাবে। এর বাইরে বিল্ডিংগুলো সম্পূর্ণ ভেঙ্গে অত্যন্ত আধুনিক এবং উন্নত যুগোপযোগী প্রযুক্তি সম্পন্ন হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ নির্মাণ করতে চাই। দেশেই এখন বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যের এই অংশের জন্য সমালোচিত হবেন এমন আভাস দিয়ে বলেন, “আমি জানি, আমি কিছু করতে গেলে এক গ্রুপ আছে লাফ দিয়ে পড়ে হেরিটেজ রক্ষার কথা বলবেন। কিন্তু জীবন বড়, না হেরিটেজ বড়? চিকিৎসা সেবা বড়, না হেরিটেজ বড়? শত বছরের বিল্ডিং ধসে যে মানুষ মারা যাবে, তখন তো ওই হেরিটেজওয়ালারা দায়িত্ব নেবে না। তখন দোষ পড়বে সরকারের ওপর। একথা বলার পর এখনই শুনবেন টকশো শুরু হয়ে গেল। লেখালেখি শুরু হয়ে গেল। সেটা হতে পারে। কিন্তু দেশের মানুষের জন্য যেটা করার দরকার সেটা আমি করব।” স্বাস্থ্যসচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, সেনাপ্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, বার্ন ইউনিটসমূহের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী ইনস্টিটিউট ভবনের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। বার্ন ইনস্টিটিউটের সঙ্গে বার্ন ইউনিটের একটা সংযোগ করে দিতে হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেটা এ্যালিভেটেড রাস্তা বা ফ্লাইওভার হতে পারে। যাতে রোগী ও ডাক্তাররা আসা-যাওয়া করতে পারে। দেশের প্রথম বিশ্বমানের এই ইনস্টিটিউটের সঙ্গে দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসার জন্য থাকবে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল। চাঁনখারপুলে ১ দশমিক ৭৬ একর জমিতে এই ইনস্টিটিউট নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৩৪ কোটি টাকা। ২০১৫ সালের ২৪ নবেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পাওয়া এ প্রকল্পের কাজ ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করা যাবে বলে আশা করছে সরকার। বার্ন ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল নির্মিত হবে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে। দুই তলা বেজমেন্টসহ মোট ১২ তলা বহুতল ভবন হবে তিনটি ব্লকে। একটি ব্লকে বার্ন, একটিতে প্লাস্টিক ও অন্যটিতে একাডেমিক ভবন হবে। বার্ন ইনস্টিটিউটের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত নির্বাচন প্রতিরোধ ও সরকার পতনের আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াত জোটের ভয়াল তা-ব এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বার্ন ইউনিটে দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসার কথা উল্লেখ করে বলেন, পুলিশ-শিক্ষক-ছাত্র-বাস চালক, ট্রাক চালক, হেলপার, নারী, শিশু এমন কোন শ্রেণী পেশার মানুষ নেই যারা তাদের (বিএনপি-জামায়াত) হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। যাদের আগুন দিয়ে পোড়ানো হয়নি। ২০০৪ সালে বিএনপি-জামায়াতের জ্বালাও-পোড়াও শুরু হয়। নির্বাচন ঠেকানোর কথা বলে মানুষকে পুড়িয়ে মারার মিশন শুরু করে। আর তাদের ক্যাডার বাহিনী সারাদেশে মানুষকে পুড়িয়ে মারা শুরু করে। ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তারা তা-ব চালিয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, ঘরে বসে এক রাজনৈতিক নেত্রীর দেয়া নির্দেশে নির্বাচনের নামে দেশে ব্যাপক জ্বালাও পোড়াও ও হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে। তাদের নিক্ষিপ্ত পেট্রোলবোমায় দগ্ধ হয়েছে অসংখ্য মানুষ। কেউ কেউ দগ্ধ হয়ে জায়গাতেই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বিএনপি-জামায়াতের জ্বালাও-পোড়াও ও হত্যার হাত থেকে কোন শ্রেণীর মানুষই রেহাই পায়নি। জনগণকে পুড়িয়ে মারা কোন রাজনীতি হতে পারে না। তারা (বিএনপি-জামায়াত) কিভাবে আশা করে যে, দেশের জনগণকে পুড়িয়ে মেরে আবার ক্ষমতায় যাবে? এমন কাজ দেখে বিএনপি-জামায়াতকে সমর্থন করতে পারে না দেশের জনগণ। তিনি বলেন, দিনের পর দিন মানুষকে আগুন দিয়ে পোড়ানোই যেন ছিল তাদের রাজনীতি। আমরা রাজনীতি করে মানুষের জন্য, জনগণের কল্যাণে। জনগণকে পুড়িয়ে মারার জন্য তো রাজনীতি না। আমি খুব কাছ থেকে দগ্ধদের আর্তনাদ, যন্ত্রণা ও অসহায়ত্ব দেখেছি, তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। সীমিত সংখ্যক বেড ও সুযোগ সুবিধা দিয়ে দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে দগ্ধদের সেবা দিয়েছেন চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক-নার্সসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই যে ভয়াবহ একটা অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল, সেই সময় যে হাহাকার এবং আমাদের বান ইউনিট সেখানে এত বেশি পোড়া মানুষ যে জায়গার অপ্রতুল ছিল। আমি দেখেছি সেখানকার ডাক্তার-নার্সসহ যারা দায়িত্বে ছিলেন তারা দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। ওই সময় দগ্ধদের যন্ত্রণা আমাকে বার্ন ইনস্টিটিউট গড়ে তুলতে অনুপ্রাণিত করেছে। দেশেই বিশ্বমানের চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা বড়লোক তারা বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাবেন, তাতে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু সমমানের চিকিৎসা আমাদের দেশের চিকিৎসকরা দিতে পারবেন না, এটা আমি বিশ্বাস করি না। কারণ আমাদের দেশের ডাক্তাররা যথেষ্ট মেধাবী। তাদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। উন্নত ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশের প্রথম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতেও দুটি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, এসব বিশ্ববিদ্যালয় হবে শুধু পোস্ট গ্র্যাজুয়েটদের জন্য। সেখানে নার্সিং ইনস্টিটিউটও থাকবে। সেখানে শুধু উচ্চশিক্ষা এবং গবেষণা হবে। কারণ নিত্যনতুন রোগ দেখা দিচ্ছে। চিকিৎসা পদ্ধতিরও পরিবর্তন হচ্ছে। তাই সেভাবেই দক্ষ চিকিৎসক গড়ে তুলতে হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরেই দেশে প্রথম দগ্ধ রোগীদের উন্নত চিকিৎসার সূচনা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই সময় বিদেশ থেকে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জন নিয়ে এসে একাত্তরের যুদ্ধাহত ও দগ্ধদের পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। জাতির পিতাকে সপরিবারে হ্যা করার পর সেই উদ্যোগেরও মৃত্যু ঘটে। এরপর হয়নি কোন কল্যাণকর কাজ, পিছিয়ে যায় দেশ। হত্যা ও বোমা হামলা নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়ায়। আমরা ক্ষমতায় আসার পর বার্ন ইউনিট গড়ে তুলি। আর এখন উদ্বোধন করা হলো বার্ন এ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের। বিশ্বের বুকে বাঙালী জাতি মাথা উঁচু করে চলবে এমন দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যসহ দেশের সব সেক্টরেই উন্নতি সাধিত হয়েছে। কোন দিক দিয়েই বাংলাদেশ এখন পিছিয়ে নেই, সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে। ভিক্ষা করে নয়, আমরা নিজেদের পায়ে দাঁড়িয়ে আত্মনির্ভরশীল হয়ে চলতে চাই। বিশ্বের নামকরা হাসপাতালের সঙ্গে দেশের হাসপাতালালগুলোকে যুক্ত করে চিকিৎসাব্যবস্থা ‘নতুন ধারায়’ নিয়ে আসার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোর সঙ্গে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব ক্যামেরা থাকবে। যখন প্রয়োজন হবে, তারা মতামত দেবে এবং রোগীদের দেখবে। সবকিছুই হবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। আমরা চিকিৎসা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করতে চাই। তিনি বলেন, আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, পিছিয়ে নেই। সব থেকে সুখবর আমাদের যে টার্গেট প্রবৃদ্ধি ৭ ভাগের ওপরে নিয়ে যাব, সেটায় সফল হয়েছি। আমাদের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৪৬৬ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। প্রবৃদ্ধি বেড়েছে, তারপরেও মুদ্রাস্ফীতি কম। অর্থনীতির ভিত্তি এখন মজবুত। মানুষের আয়ুষ্কাল বেড়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা, চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করেছি। মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে, শিশুমৃত্যুর হার কমেছে। এই অগ্রযাত্রা কেউ রুখতে পারবে না। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম তাঁর বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় শুরু হয়েছে এই বার্ন ইনস্টিটিউটের নির্মাণকাজ। মানুষের দুঃখ কষ্ট দেখে নিশ্চুপ থাকতে পারেন না প্রধানমন্ত্রী। ২০১৪ সালে বিএনপি-জামায়াতের আগুনে দগ্ধদের পাশে সব সময় ছিলেন তিনি। ওই সময় খালেদা জিয়া যখন মানুষ হত্যায় মত্ত ছিলেন শেখ হাসিনা তখন আক্রান্তদের পাশে দাঁড়িয়ে চোখের জলে শান্তির পায়রা উড়িয়েছেন। মায়ের মমতা দিয়ে দগ্ধদের আর্থিক ও মানসিক শক্তি যুগিয়েছেন। দগ্ধদের কষ্ট প্রশমিত করতে বার্ন ইনস্টিটিউট ভবনের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছেন। এমন মমতাময়ী নেত্রীর নেতৃত্বে আগামী জাতীয় নির্বাচনেও ক্ষমতায় আসবে আওয়ামী লীগ। বার্ন এ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন অনুষ্ঠানে জানান, দেশে প্রতিবছর গড়ে ৬ লাখ মানুষ বিভিন্নভাবে দগ্ধ হন। তাদের চিকিৎসার জন্য কমপক্ষে দেড় হাজার ডিগ্রিধারী বিশেষজ্ঞ সার্জন প্রয়োজন হলেও বর্তমানে মাত্র ৫২ জন সেই সেবা দিচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বর্তমানে বার্ন এ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিষয়ে স্নাতকোত্তর এবং মহাখালীর বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস এ্যান্ড সার্জনস (বিসিপিএস) এফসিপিএস ডিগ্রি দিলেও সেই উচ্চ শিক্ষার সুযোগ খুবই সীমিত। নতুন এই ইনস্টিটিউটের যাত্রা শুরু হলে প্রতিবছর গড়ে ১০ থেকে ১২ জন চিকিৎসক এ বিষয়ে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাবেন। উল্লেখ্য, ১৯৮৬ সালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডে ছয়টি বেড নিয়ে বার্ন বিভাগ চালু করেন দেশের প্রথম প্লাস্টিক সার্জন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। অধ্যাপক সামন্ত লালের চেষ্টায় ২০০৩ সালে সেটি ৫০ বেডের পূর্ণাঙ্গ ইউনিট হিসেবে কাজ শুরু করে। ২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে ভয়াবহ অগ্নিকা-ে ১২৭ জনের মৃত্যুর পর বার্ন ইউনিটের সক্ষমতা আরও বাড়ানোর বিষয়টি গুরুত্ব পায়। এ ইউনিটের বেড প্রথমে ১০০ ও পরে ৩০০ হয়। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তি ঘিরে বিএনপির আন্দোলনের মধ্যে দেশগুড়ে পেট্রোলবোমায় দগ্ধ কয়েকশত মানুষ এই বার্ন ইউনিট থেকেই চিকিৎসা নেন। এসব বিষয় বিবেচনা করেই গত বছর ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় প্লাস্টিক সার্জারি বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আন্তর্জাতিকমানের একটি বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট স্থাপনের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর ধারাবাহিকতায় প্রকল্প তৈরির কাজ শুরু হয় এবং চানখাঁরপুল টিবি হাসপাতালকে মহাখালীর বক্ষব্যাধি হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত করে ওই জমিতে ৫০০ শয্যার এই ইনস্টিটিউট গড়ে তোলার প্রাথমিক পরিকল্পনা নেয়া হয়। এই ইনস্টিটিউট হলে প্রয়োজনে ৮শ’ রোগীকে চিকিৎসা দেয়াও সম্ভব । আর প্রতি বছর গড়ে ১০ থেকে ১২ জন চিকিৎসক এ বিষয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাবেন বলে জানান সামন্ত লাল সেন।
×