ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কক্সবাজারে ফের পাহাড় কাটার মহোৎসব

প্রকাশিত: ০৪:২১, ৭ এপ্রিল ২০১৬

কক্সবাজারে ফের পাহাড় কাটার মহোৎসব

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদফতরের কড়াকড়িতে কিছুদিন বন্ধ থাকার পর জেলাব্যাপী বিচ্ছিন্নভাবে অনেকটা নীরবে পাহাড় কাটা হচ্ছে। পাহাড় কেটে নির্মাণ করা হচ্ছে বসতি, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা। আবার অনেকে সরকারী পাহাড়ী জমি দখল করে পাহাড় কেটে প্লট তৈরি করে বিক্রি করে চলছে। এগুলোর মধ্যে কক্সবাজার শহরে জেলা প্রশাসনের মালিকানাধীন জমিতে পাহাড় কাটা হলেও শহরের বাইরে এবং উপজেলাগুলোতে বেশি কাটা হচ্ছে বন বিভাগের মালিকানাধীন জমির পাহাড়গুলো। অভিযোগ উঠেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে এক শ্রেণীর সংশ্লিষ্ট সরকারী কর্মচারীকে ম্যানেজ করে এভাবে পাহাড় কাটার মহোৎসব চলছে। এতে একদিকে যেমন পর্যটন শহর কক্সবাজারের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে, অপরদিকে জীববৈচিত্র্যসহ সঙ্কটে পড়ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ-প্রতিবেশ। জানা গেছে, ইতোপূর্বে কক্সবাজার, চট্টগাম, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় সরকারী অনুমোদন ছাড়া যে কোন ধরনের পাহাড় কাটা বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। ২০১২ সালের ১৯ মার্চ বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর আলমের সমন্বিত বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। মঙ্গলবার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কক্সবাজার শহরের ঘোনারপাড়া এলাকায় দুই শ’ থেকে আড়াই শ’ ফুট উঁচু বিশাল পাহাড় কেটে ওখানে তৈরি করা হচ্ছে প্লট ও রাস্তা। কোন প্রকার অনুমতি ছাড়া পাহাড় কেটে এভাবে প্লট তৈরি করা হচ্ছে। এ সময় কর্মরত শ্রমিকরা জানান, কক্সবাজার জেলা প্রশাসনে কর্মরত জেলা কালেক্টরেট ৩য় শ্রেণী কর্মচারী সমিতির সভাপতির স্বপনের নেতৃত্বে এ পাহাড় কাটা চলছে। একইভাবে শহরতলীর বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় বন বিভাগের মালিকানাধী প্রায় ১০ একর পাহাড় দখল করে চলছে পাহাড় কাটা। পাহাড় কেটে এখানে তৈরি করা হচ্ছে প্লট। কর্মরত শ্রমিক আমির হোসেন জানান, স্থানীয় প্রভাবশালী একটি গ্রুপ এসব প্লট ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা করে বিক্রি করছে। বন বিভাগের স্থানীয় লিংক রোড বিট কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম বন বিভাগের জমি দখলের কথা স্বীকার করে বলেন, জনবল সঙ্কটের কারণে সঠিক সময়ে অভিযান পরিচালনা করা যাচ্ছে না। তারপরও সাধ্যমতো অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। শুধু কক্সবাজার শহর ও লিংক রোড নয়, জেলার ৮ উপজেলায় একইভাবে চলছে পাহাড় কাটা। জেলা প্রশাসক আলী হোসেন বলেন, পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন সব সময় শক্ত অবস্থানে রয়েছে। খবর পাওয়া মাত্রই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
×