ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

অনুরোধ যাচ্ছে বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা, এআইআইবি, চীন, আইডিবি, ভারত, জার্মানি, কুয়েত, সৌদি, নেদারল্যান্ডস

৩৬ প্রকল্পে দাতা খোঁজা হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ৭ এপ্রিল ২০১৬

৩৬ প্রকল্পে দাতা খোঁজা হচ্ছে

হামিদ-উজ-জামান মামুন ॥ পায়রা সমুদ্রবন্দর নির্মাণসহ ৩৬ প্রকল্পের জন্য দাতা খুঁজছে সরকার। এসব প্রকল্পে অর্থায়ন করতে বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা), এশিয়ান ইনফ্রাসটাকচার ব্যাংক (এআইআইবি), চীন, কেএফডব্লিউ, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি), ভারতীয় এলওসি, জার্মানি, ইডিসিএফ, কুয়েত ফান্ড, সৌদি ফান্ড এবং নেদারল্যান্ডসের কাছে অর্থায়নের জন্য অনুরোধ জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সম্প্রতি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের বৈদেশিক সহায়তা অনুসন্ধান কমিটির ৩৩ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রায় দেড় বছর পর অনুষ্ঠিত এই সভায় প্রকল্পগুলোর গুরুত্ব বিষয়ে আলোচনার পর অর্থ যোগানোর বিষয়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে নির্দিষ্ট বৈদেশিক সংস্থা ও ডেস্কের প্রধানদের তাগিদ দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে উন্নয়ন সহযোগী দেশ বা দাতা সংস্থার মনোভাব আগামী দুই মাসের জন্য জানানোর কথাও বলা হয়েছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মেগা প্রকল্পের জন্য আলাদা ক্যাপিটাল বাজেট দেয়া হচ্ছে বলে এর আগে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ওই সভার সভাপতি ইআরডির অতিরিক্ত সচিব মাহমুদা বেগম এ বিষয়ে জনকণ্ঠকে বলেন, এসব প্রকল্প একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তাছাড়া পাবলিকলি বলার মতো এখনও কিছু হয়নি। এটা একবারেই অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমরা উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহের জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন দেখা যাক কি হয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোতেই চাইবেই অর্থায়ন আসুক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনটিতে অর্থ পাওয়া যাবে তা বলা যাচ্ছে না। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, যেসব প্রকল্প বাস্তবায়নে বৈদেশিক অর্থ সংস্থানের প্রচেষ্টা চালানো হবে সেগুলো হচ্ছে, পায়রা সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, সম্ভাব্য ঋণের উৎস হিসেবে ধরা হয়েছে চীন। পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট অব বিপিডিবি আন্ডার থ্রি হিলি ডিস্ট্রিক্ট অব বাংলাদেশ, সম্ভাব্য উৎস বিশ্বব্যাংক ও এডিবি। গজারিয়া ৩৫০ মেগাওয়াট কোল ফায়ারড থার্মাল পাওয়া প্ল্যান্ট, সম্ভাব্য উৎস চীন এবং জাইকা। মোল্লাহাট ১০০ মেগাওয়াট সোলার পিভি পাওয়ার প্ল্যান্ট, সম্ভাব্য উৎস চীন এবং কেএফডব্লিউ। গ্রীড নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট ইন সাউথ জোন, এটি বাস্তবায়নে এডিবিকে অনুরোধ করা হবে। প্রজেক্ট ফর সাপ্লাই এ্যান্ড ইনস্টেলেশন অব প্রি-পেমেন্ট মিটার সিস্টেম ফর সিক্স ডিস্ট্রিবিউশন জোনস অব ডিপিডিবি, ঋণ চাওয়া হবে আইডিবির কাছে। আপগ্রেডেশন অব পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম ইন ওয়েস্ট সিস্টেম, ঋণ চাওয়া হবে এডিবি এবং এআইআইবির কাছে। ২ দশমিক ৫০ মিলিয়ন কঞ্জুমার কানেকশন থ্রোট রুরাল ইলেকট্রিফিকেশন প্রোগ্রাম, এটির জন্য এআইআইবির কাছে ঋণ চাওয়া হবে। এক্সপানসন এ্যান্ড স্ট্রেংদেনিং অব পাওয়ার সিস্টেম নেটওয়ার্ক আন্ডার চিটাগাং এরিয়া, এটি বাস্তবায়নে এআইআইবির কাছে ঋণ চাওয়া হবে। সাব-স্টেশন রিহ্যাবিলিটেশন এ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন অব সুপারভাইজরি কন্ট্রোল এ্যান্ড ডাটা একিউজিশন সিস্টেম (স্কাডা) প্রজেক্ট, প্রজেক্ট উন ওয়েস্ট জোন, এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ইতোমধ্যেই সম্মত হয়েছে এডিবি। ডেসকোর ডিজাইন সাপ্লাই এ্যান্ড ইনস্টেলেশন অব ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড সাবস্টেশন অ্যাট বসুন্ধরা এ্যান্ড উত্তরা। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ৩৬০ কোটি টাকা (৪ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার) ঋণ দিতে ইতোমধ্যেই সম্মত হয়েছে এআইআইবি, ডিজাইন সাপ্লাই এ্যান্ড ইনস্টেলেশন অব কনভেনশন অব একজিসটিং ৩৩ কেভি আন্ডার গ্রাউন্ড লাইনস, এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা (১০ কোটি মার্কিন ডলার), ঋণ দিচ্ছে সম্মত হয়েছে এআইআইবি। স্ট্রেংদেনিং অব মংলা জয়মনিরঘোল সাইলো কানেকটিং রোড, এটি বাস্তবায়নে ঋণ চাওয়া হবে এডিবি ও জাইকার কাছে। কনস্ট্রাকশন এ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন অব রাবার ড্যামস টু সাপোর্ট সাসটেইনেবল গ্রোথ অব ফুড প্রডাকশন, এটি বাস্তবায়নে এডিবি ও জাইকার কাছে ঋণ চাওয়া হবে। ঢাকা স্যানিটেশন ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (ফেইজ-১), ঋণ চাওয়া হবে বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও জাইকার কাছে। কনস্ট্রাকশন অব ব্রড গেজ রেললাইন বিটুই দর্শনা- মুজিবনগর এ্যান্ড আপটু মেহেরপুর, এ জন্য ঋণ চাওয়া হবে এডিবি, জাইকা ও ইডিসিএফের কাছে। কনস্ট্রাকশন অব মিটারগেজ লাইন ডুয়েল গেজ লাইন টু পার্বতীপুর-কাউনিয়া সেকশন, ঋণ চাওয়া হবে ভারতীয় এলওসির কাছে। কনস্ট্রাকশন অব নিউ বিজি ট্র্যাক অন সাতক্ষীরা টু মুন্সীগঞ্জ সেকশন অন টানর্কি বেসিস, ঋণ চাওয়া হচ্ছে এডিবি, জাইকা, ইডিসিএফ। কনস্ট্রাকশন অব মর্ডান রেলওয়ে ওয়ার্কশপ অ্যাট রাজবাড়ী, ঋণ চাওয়া হচ্ছে জাইকা ও জার্মানির কাছে। প্রকিউরমেন্ট অব ৭৫ মিটির গেজ লাগেজ ভ্যান ফর বাংলাদেশ রেলওয়ে, এটি বাস্তবায়নে ইতোমধ্যেই প্রায় ৪০০ কোটি টাকা (৫ কোটি মার্কিন ডলার) ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে এআইআইবি। কনভারসেশন অব মিটার গেজ রেলওয়ে ট্র্যাক ইনটু ডুয়েল গেজ রেলওয়ে ট্র্যাক ইন আখাউরা টু সিলেট, এটি বাস্তবায়নে ঋণ চাওয়া হচ্ছে চীনের কাছে। ইমপ্রুভমেন্ট অব ঢাকা (কাঁচপুর)-সিলেট রোড টু রোড টু ফোর লেন হাইওয়ে, এর জন্য এআইআইবির কাছে ঋণ চাওয়া হচ্ছে। কনস্ট্রাকশন অব নলুয়া-বাহেরচর ব্রিজ ওভারদি রিভার অব পায়রা, ঋণ চাওয়া হচ্ছে এআইআইবির কাছে। কনস্ট্রাকশন অব বোগা ব্রিজ ওভার দ্য রিভার অব লোহারিয়া, ঋণ চাওয়া হচ্ছে এআইআইবির কাছে। কনস্ট্রাকশন অব ঝপঝপিয়া ব্রিজ, ঋণ চাওয়া হচ্ছে কুয়েত ফান্ড, সৌদি ফান্ড এবং এডিবির কাছে। কনস্ট্রকিশন অব ব্রিজ অন ভুলতা-আড়াইহাজার-বাঞ্ছারামপুর-নবীনগর রোড ওভার দি মেঘনা রিভার, ঋণ চাওয়া হচ্ছে জাইকার কাছে। এস্টাবলিস্টমেন্ট অব সিমুলেটর সেন্টার এ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট অব ট্রেনিং শিপ ফর বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি, ঋণ চাওয়া হচ্ছে ইডিসিএফ, সাসটেইনেবল কোস্টাল এ্যান্ড মেরিন ফিসারিজ ইন বাংলাদেশ, ঋণ চাওয়া হচ্ছে বিশ্বব্যাংকের কাছে। উরির চর-নোয়াখালী ক্রস ড্যাম নির্মাণে ঋণ চাওয়া হচ্ছে নেদারল্যান্ডসের কাছে। বুড়িগঙ্গা রিভার রেস্টোরেশন প্রকল্পের জন্য চীনের কাছে অর্থ চাওয়া হবে। ডেভেলপমেন্ট অব গর্বামেন্ট সেকেন্ডারি স্কুল, অর্থ চাওয়া হচ্ছে এডিবি, ইডিসিএফ’র কাছে। এস্টাবলিস্টমেন্ট অব আইসিটি সেন্টার ইন ডিস্ট্রিক্ট এ্যান্ড উপজেলা, অর্থ চাওয়া হচ্ছে এডিবি ও ইডিসিএফের কাছে এবং প্রকিউরমেন্ট অব হারবর ক্রাফট ফর মংলা পোর্ট, এটি বাস্তবায়নে ভারতীয় এলওসি থেকে ঋণ চাওয়া হবে। সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের বাজেটে ট্রান্সফরমেশন প্রকল্প হিসেবে নেয়া হবে আরও বেশ কিছু মেগা প্রকল্প। এসব প্রকল্পের জন্য আলাদা ক্যাপিটাল বাজেট করা হবে। মেগা প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনে কিছুটা কঠিন শর্তের ঋণও নেয়া হবে, যেমনটি নেয়া হয়েছে রূপপুর পরমানবিক বিদ্যুত কেন্দ্রের জন্য। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বাজেট আলোচনায় অর্থমন্ত্রী এসব কথা জানান। তিনি বলেন, মহেশখালীতে পাওয়ার সেন্টার তৈরি করা হবে। এরকম মেগা প্রকল্পে আগামী বাজেটে গুরুত্ব দেয়া হবে।
×