ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশ স্বীকার করেনি অথচ সুবিধাভোগী!

প্রকাশিত: ০৪:১০, ৭ এপ্রিল ২০১৬

বাংলাদেশ স্বীকার করেনি অথচ সুবিধাভোগী!

সুব্রতা রায় সবুজে ঘেরা বহু নদ-নদী বেষ্টিত আমাদের এই সোনার বাংলাদেশ। দেশটিকে পেয়েছি সীমাহীন কষ্টের বিনিময়ে, লাখ লাখ মা-বোনের পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের পৈশাচিক আঘাত সহ্যের বিনিময়ে, লাখ লাখ মুক্তি সেনার জীবন-পণ মুক্তির অদম্য লড়াই ও জীবন বিসর্জনের মাধ্যমে। মুক্তিযুদ্ধে পাকবাহিনীর সহায়তাকারী রাজাকার, আলবদর, আলসাম্স এই বাংলার হয়েও তারাই মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে, মানবতার বিপক্ষে নারকীয়, বীভৎস নির্যাতন ও নির্যাতন পরবর্তী হত্যার মূল ষড়যন্ত্রকারী ও অন্যতম শক্তিশালী ভূমিকায় গ্রহণকারী। স্বাধীন দেশে স্বাধীনতার পরাজিত বিপক্ষ শক্তির সাংগঠনিক ও ব্যক্তিগত ভূমিকা ধারাবাহিকভাবে প্রথমে স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা ও ক্ষমতা দখল করে পাকিস্তানী আমলের সূত্রপাত ঘটায়। যার সময়কাল দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর। সে সময়ের অসত্য ইতিহাস চর্চা, ৭২ এর সংবিধানকে কেটে চিরে রোগাক্রান্ত করা, শিক্ষায় মৌলবাদী চেতনা বিকাশের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রশাসনসহ সকল গুরুত্বপূর্ণ স্তরে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ এবং পাহাড় পরিমাণ অর্থ আয়ের পরিকল্পনা গ্রহণই আজকের সার্থক নেতিবাচক সামাজিক-রাজনৈতিক চালচিত্র ও অর্থনীতির চূড়ান্ত সাফল্য যা স্বাধীনতার সাড়ে চার দশক পরেও স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তির জানান দেয়। যারা বাংলাদেশটিই চাননি, অথচ তারাই স্বাধীন দেশে বসে দেশের সমস্ত সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে দেশটাকে আবারও পাকিস্তান বানাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে! কিন্তু একটি স্বাধীন দেশে কিভাবে স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তির অস্তিত্ব থাকে? তাহলে কেন স্বাধীনতার জন্য, বাংলাদেশ নামক ভূখ-টির জন্য, লাল সবুজ পতাকার জন্য এত বিশাল আত্মত্যাগ করেছিলেন- আত্মাহুতি দিয়েছিলেন লাখ লাখ মানুষ? বর্তমানে বাংলাদেশ অর্থনীতিতে সাফল্য দেখিয়েছে যোজন যোজন কিন্তু রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে কতটা এগিয়েছি? সাড়ে চার দশক ধরে একমাত্র লক্ষ্যকে ধারণ করে ফুলে ফেঁপে বড় হওয়া স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তির সঙ্গে লড়তে যতটা শক্তির প্রয়োজন, ততটা? এই যে মানে ৭ কোটি মানুষ। পূর্বসুরি বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থার লক্ষ্যে ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, আমরা কি সেই মহান স্বাধীনতা রক্ষার্থে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধে শামিল হতে পারি? এবারের যুদ্ধটা বেশ কঠিন ও সময় সাপেক্ষ। মনোজগতে ইতিবাচক মূল্যবোধ ধারণই এ যুদ্ধের মূলমন্ত্র। অস্ত্র যেখানে সুস্থ রাজনীতি, একই ধারার শিক্ষা ব্যবস্থাগ্রহণ বিশেষ করে প্রাথমিক স্তরে, সাংস্কৃতিক চর্চা, খেলাধুলার প্রসার, বিজ্ঞান চর্চাসহ বিভিন্ন উৎসব-পার্বণে সুস্থ ব্যবস্থা গ্রহণ। উল্লেখ্য যে, বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তি ক্ষমতায় এবং কিছু অসাধারণ, প্রত্যাশিত, সুস্থ ও সুন্দর উদ্যোগ লক্ষণীয়। কিন্তু ঘাপটি মেরে থাকা অপশক্তি প্রতিবন্ধকতা তৈরিতে বেশ পারঙ্গম ভূমিকায় অবতীর্ণ। এ ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির সঙ্গে নিখুঁত বন্দনাকারী উদ্দেশ্যমূলকভাবে কিছু অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করবার পাঁয়তারায় মগ্ন। ...চলুন না দেশটাকে ভালবাসি। খলিলগঞ্জ, কুড়িগ্রাম থেকে
×