ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দক্ষিণাঞ্চলে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা

ঝুঁকি নিয়ে চলছে যাত্রীবাহী লঞ্চ-ট্রলার

প্রকাশিত: ০৪:০৪, ৬ এপ্রিল ২০১৬

ঝুঁকি নিয়ে চলছে যাত্রীবাহী লঞ্চ-ট্রলার

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ সরকারী নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় ঝুঁকিপূর্ণ নৌপথে লঞ্চ ও ট্রলারে যাত্রী পরিবহন অব্যাহত রয়েছে। শত শত যাত্রী নিয়ে ২-৩ ঘণ্টার পথে উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিচ্ছে লঞ্চ ও ট্রলারগুলো। ফলে কালবৈশাখীর মৌসুমে যে কোন সময়ে নৌ-দুর্ঘটনায় প্রাণহানির আশঙ্কা করছে উপকূলীয় যাত্রীরা। অভিযোগ রয়েছে, বিআইডব্লিউটিএ’র অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে লঞ্চ ও ট্রলার মালিকরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যাত্রী পরিবহন করছে। তবে বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তারা এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, লঞ্চ চলাচল বন্ধের জন্য তারা পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা পাচ্ছে না। ট্রলার চলার জন্য জেলা পরিষদের ইজারা পদ্ধতিকে তারা দায়ী করেন। সূত্রমতে, প্রতিবছর ১৫ মার্চ থেকে ১৫ অক্টোবর ঝুঁকিপূর্ণ মৌসুম হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এ সময়ে উপকূলীয় তিন হাজার কিলোমিটার নৌপথে বেক্রসিং সনদ (সমুদ্রে চলাচলযোগ্য জাহাজ) ছাড়া অন্য নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ। ঝুঁকিপূর্ণ নৌপথের মধ্যে বৃহত্তর বরিশালে চারটি উপকূলীয় পথ হচ্ছে বরিশাল-লক্ষ্মীপুর, ভোলার ইলিশা-লক্ষ্মীপুর, ভোলার শশীগঞ্জ-মনপুরা এবং ভোলার মীর্জাকালু-নোয়াখালীর আলেকজান্ডার। ঝুঁকিপূর্ণ মৌসুমে এসব পথে নিরাপদ নৌযান হিসেবে বিআইডব্লিউটিসির সী-ট্রাক চলাচলের কথা থাকলেও মীর্জাকালু-আলেকজান্ডার এবং শশীগঞ্জ-মনপুরা রুটে সী-ট্রাক নেই। ফলে এ দুই রুটের যাত্রীরা নিষিদ্ধ লঞ্চ ও ট্রলারের ওপরই নির্ভরশীল। বরিশাল-লক্ষ্মীপুর এবং ইলিশা-লক্ষ্মীপুর পথে একটি করে সী-ট্রাক চললেও এর পাশাপাশি নিষিদ্ধ লঞ্চ ও ট্রলারে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। বিআইডব্লিউটিএ’র পরিদর্শক নাসির আহম্মেদ জানান, ইলিশা-লক্ষ্মীপুর এবং মীর্জাকালু-আলেকজান্ডার পথে ইম্পেরিয়াল ও রামগতি দুটি লঞ্চ চলছে। পাশাপাশি ট্রলারে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। নিষিদ্ধ এসব নৌযান বন্ধ করার জন্য কোস্টগার্ড, ভোলার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার চিঠি দেয়া হলেও কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। বরিশাল-লক্ষ্মীপুর পথের সী-ট্রাক খিজির-৮ এর মাস্টার রসরঞ্জন দাস জানান, নিষিদ্ধ লঞ্চ ও ট্রলারের দাপটে সী-ট্রাকে যাত্রী পাওয়া যায় না। লঞ্চ ও ট্রলারের পক্ষে প্রতিটি স্টেশনে স্থানীয় প্রভাবশালীরা রয়েছেন। ফলে সী-ট্রাকের কর্মচারীরা অসহায়। ইলিশা-মজু চৌধুরীর হাট পথের সী ট্রাকের মাস্টার বেলাল হোসেন জানান, ইলিশা থেকে মজু চৌধুরীর হাট পর্যন্ত ২ ঘণ্টা উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিতে হয়। এ পথে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে যাত্রী নিয়ে ট্রলার চললেও প্রশাসন নীরব। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, লঞ্চ ও ট্রলার মালিকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা মাসোহারা নেয় বিআইডব্লিউটিএর কতিপয় কর্মকর্তা। এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ’র বরিশাল নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ-পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, উপকূলীয় ঝুঁকিপূর্ণ নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করার জন্য কোস্টগার্ড ও পুলিশ প্রশাসনকে তারা বারবার চিঠি দিচ্ছেন। উত্তাল মেঘনায় ট্রলারে যাত্রী পরিবহন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভোলা জেলা পরিষদ ট্রলার ঘাট ইজারা দিয়েছে। তিনি কেন ট্রলার চলাচল বন্ধ করতে যাবেন।
×