অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ কর নেটওয়ার্ক বৃদ্ধির পাশাপাশি কর ন্যায্যতা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। একই সঙ্গে করের টাকার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য সরকারকে আরও বেশি সচেষ্ট হওয়ার আহ্বান জানান তারা।
রবিবার দুপুরে গুলশানের একটি হোটেলে ‘সমৃদ্ধির পথে অগ্রযাত্রা : দায়িত্বপূর্ণ কর্পোরেট কর ব্যবস্থা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে আলোচকরা এ দাবি জানান। এ্যাকশন এইড ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের এক্সিকিউটিভ চেয়ারপার্সন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মজিদ, ডেনমার্ক দূতাবাসের ডেভলপমেন্ট কাউন্সিলর পিটার ভোগস জনসন।
সভাপতির বক্তব্যে এম হাফিজ উদ্দিন বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের জন্য বিনিয়োগ দরকার। কিন্তু সেই সঙ্গে কর ন্যায্যতাও নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের এখানে কর ন্যায্যতার বড় অভাব। যার কাছে যে পরিমাণ কর আদায় করার দরকার তা হচ্ছে না। আবার যারা দিচ্ছেন তাদের ওপর পুনরায় কর বৃদ্ধি করা হচ্ছে। নতুন করে কর নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি না করে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের ওপর করের বোঝা বাড়ানো হয়।
অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমরা ট্যাক্সের চাইতে ভ্যাটের দিকে জোর দিচ্ছি বেশি। দামী গাড়ি, বিলাসবহুল পণ্য কিনতে হলে বেশি করে ভ্যাট দিতে হবে।
তিনি বলেন, বিধিবদ্ধ সমাজে বসবাস করতে হলে ট্যাক্স দিতেই হবে। পৃথিবীর কেউ ট্যাক্স না দিয়ে থাকতে পারেন না। কর্পোরেট ট্যাক্স নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য কর্পোরেট ট্যাক্সে চাপ দেয়া কঠিন। এনবিআর’র সাবেক চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মজিদ বলেন, আমাদের জিডিপির মাত্র ১১ শতাংশ ট্যাক্স থেকে আসে। এর আওতা ১৬-১৭ শতাংশ হওয়া উচিত। এটা না হওয়াতেই প্রতি অর্থবছরে বাজেটে ৫ শতাংশ ঘাটতি থেকে যায়। এজন্য কর নেটওয়ার্ক বাড়াতে সামাজিক আন্দোলন করতে হবে।
ট্যাক্স ??আদায়ে ফাঁকিঝুঁকির সুযোগ রয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ট্যাক্সের জন্য আমাদের যে আইন রয়েছে- তা ১৯২৪ সালে ব্রিটিশরা করে গেছেন। তারা নিজেরাই ট্যাক্স দিতেন না। তাই যারা ট্যাক্স দেন না বা যারা আদায় করেন না কখনও তাদের আইন দিয়ে কতটুকু কার্যকর হবে। এজন্য আইন কাঠামোরও একটি পরিবর্তন দরকার। তবে আইন বা নীতিমালা করার ক্ষেত্রে এটিও মাথায় রাখতে হবে যিনি নীতিমালা করবেন, তাকে প্রয়োগের ক্ষমতা দেয়া যাবে না। তাহলে সে ফাঁকফোকর রেখেই কাজ করবেন।