ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিদ্যুত ও জ্বালানি

প্রকাশিত: ০৩:৫৫, ৬ এপ্রিল ২০১৬

বিদ্যুত ও জ্বালানি

২০২১ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। সে লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের কার্যক্রম চলছে। রবিবার নিজ কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী চলমান প্রকল্পগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়নের তাগিদ দেন। সভায় বিদ্যুত ও জ্বালানি বিভাগ নিজ নিজ প্রকল্পগুলোর প্রতিবেদন আলাদা আলাদাভাবে উপস্থাপন করে। গুরুত্বপূর্ণ ওই দুটি বিভাগের প্রকল্প পরিকল্পনায় আশাবাদী হওয়ার মতো সুসংবাদ রয়েছে। দায়িত্বশীলতা ও কর্তব্যনিষ্ঠার সঙ্গে কাজ এগিয়ে নিলে এ দুটি খাতে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। এটা অস্বীকার করার কিছু নেই যে বিগত সাত বছরে দেশে বিদ্যুতের প্রভূত উন্নতি হয়েছে। ঢাকার লোডশেডিং যথেষ্ট সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। চোখে পড়ার মতোই বিদ্যুত সেক্টরের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ৭৭টি বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি সই হয়েছে। এতে আগামীতে ১১ হাজার ৫০৯ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদিত হবে। জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্ব থেকে জানা যায়, দেশের মোট জনসংখ্যার ৬৮ শতাংশ বিদ্যুত-সুবিধার আওতায় রয়েছে। রাষ্ট্রের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি শিল্প খাত। তেমনি আবার শিল্প খাতের অপরিহার্য চালিকাশক্তি বিদ্যুত। শিল্প খাতের প্রসার ও শিল্প উৎপাদন বাড়িয়ে শিল্প খাতের সুদিন ফেরাতে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে চলেছে। দেশে কাক্সিক্ষত বিনিয়োগ ও শিল্পায়নের জন্য শিল্পকারখানায় বিদ্যুতের সংযোগ জরুরী। শুধু বিদ্যুত নয়, গ্যাসের যোগান থাকাও আবশ্যক। অর্থনীতির গতি বাড়াতে শিল্প খাতে নতুন বিদ্যুত সংযোগ দেয়ার ওপর থেকে কড়াকড়ি তুলে নিয়েছে সরকার। ব্যবসায়ীদের প্রচেষ্টাতে দেশের অর্থনীতি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারও ব্যবসাবান্ধব। অপরদিকে বাংলাদেশে জ্বালানির মূল উৎস প্রাকৃতিক গ্যাস। এ গ্যাস ব্যবহৃত হচ্ছে বিদ্যুত উৎপাদনে, সার কারখানায়, বিভিন্ন শিল্প-কারখানায় এবং গৃহস্থালি কাজে। গ্যাসের মজুদ ফুরিয়ে আসছে দ্রুতগতিতে। এ অবস্থায় গ্যাসের বিকল্প জ্বালানির ব্যবহার নিশ্চিত করতে না পারলে অদূর ভবিষ্যতে সমস্যায় পড়তে হবে আমাদের। জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্ব থেকে জানা গিয়েছিল দেশের বর্তমান মজুদ গ্যাস আরও ১৬ বছর ব্যবহার করা যাবে। একই সময়ের মধ্যে ধীরে ধীরে গ্যাসের সরবরাহও কমে যাবে। জ্বালানি শক্তি হিসেবে গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল ক্ষুদ্র ও বৃহৎ শিল্পের জন্য এটি সতর্কতামূলক বার্তা। মনে রাখা দরকার সারা পৃথিবীতেই এখন নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ছে। ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা বা লাতিন আমেরিকার মতো দেশগুলোতে এখনই বেশ বড় আকারে শক্তি উৎপাদনের উৎস হচ্ছে বায়ু প্রবাহ, সৌরশক্তি এবং বায়োগ্যাস। আমাদের দেশে সৌরশক্তির ব্যবহার থাকলেও বায়ু প্রবাহ, বায়োগ্যাস, হাইড্রোজেনসহ অন্যান্য নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার নেই বললেই চলে। এ সম্ভাবনার দিকটি খতিয়ে দেখা দরকার। বিকল্প জ্বালানি হিসেবে সৌর গ্যাসেরও রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা। এরও সকল সম্ভাব্যতা যাচাই জরুরী।
×