ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিদায় জাহা হাদিদ

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ৫ এপ্রিল ২০১৬

বিদায় জাহা হাদিদ

মুসান্না সাজ্জিল আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্ট গত মঙ্গলবার টুইটারে এক শোক বার্তা প্রকাশ করে যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের স্তব্ধ করে। কি ছিল সেই টুইট? ‘জাহা হাদিদ ঘুমাও শান্তিতে। তুমি ছিলে বিশ্ব নারী স্থপতির প্রতিকৃত’ টুইটারের সে বার্তায় মুছে যায়- তরুণ স্থপতিরা। প্রিটজকার বিজয়ী হাদিদ আর বেঁচে নেই। মাত্র ৬৫ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মায়ামীর এক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই নারী। হাদিদ হলেন বিশ্বের প্রথম নারী স্থপতি যিনি সম্মানজনক প্রিটজকার পুরস্কারে ভূষিত হন। শুধু তাই নয় সমসাময়িক স্থাপত্যে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের মাধ্যমে তিনি যে নান্দনিকতার ছোঁয়া এনেছেন তা সত্যিই অসাধারণ। জীবনের পুরোটা সময় হাদিদ তাঁর কাজের মাধ্যমে ‘নারী স্থপতির’ তকমা মুছে কেবল স্থপতি পরিচয়ে পরিচিত হতে চেয়েছেন। ইরাকে জন্ম নেয়া হাদিদ লন্ডনে স্থাপত্য অনুশীলন করতেন এবং একজন স্থাপত্য হিসেবে আইকনে পরিণত হন। স্থাপত্যশৈলীতে হাদিদ অনুসৃত পথ বিশ্বের অন্য নারী স্থপতিদের পথ চলার পথ প্রশস্ত করেছে। পেশাজীবীদের লিঙ্গ দিয়ে বিভাজন করাও তাঁর পছন্দ নয়। হাদিদ কেবল একজন স্থপতি এই পরিচয়ে জনপ্রিয় হতে চেয়েছেন। আরব কিংবা নারী ছিল তাঁর দ্বিতীয় পরিচয়। বিশ্বের সর্বত্র তিনি এ ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটান। নিজের অসাধারণ মেধা, পরিশ্রম, দৃঢ়তা তাঁকে ভিন্ন এক ব্যক্তিত্বে পরিণত করে। স্থপতি হিসেবে হাদিদ ছিলেন এক পরিচিত নাম। হাদিদ অনবরত বিদেশ ভ্রমণ করতেন। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও মিউজিয়ামে লেকচার ও সেমিনারে অংশগ্রহণ করতেই ব্যস্ত থাকতেন হাদিদ। ইউরোপ, এশিয়া ও আমেরিকা মহাদেশ ঘুরে বেড়াতেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য স্থাপত্য নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে লন্ডন একোয়াটিক্স সেন্টার, চীনের জুয়াংজুয়া প্রদেশের অপেরা হাউস, জার্মানির বিএমডব্লিউ অফিস এবং আজারবাইজানের হায়দার অলিয়েভ সেন্টার। হাদিদের নিজের তৈরি ফার্মে ৪শ’-এর বেশি স্টাফ কাজ করেন। হাদিদের অসাধারণ অবদানের জন্য তাঁকে অনেকে স্থপতির লেডি গাগা বলেও সম্বোধন করতেন। কিন্তু লেডি গাগার মতো বন্য হাদিদ ছিলেন না। বরং, তাঁর ভদ্রতা রসবোধ ছিল অতুলনীয়।
×