ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

তদন্ত কমিটি

পল্লী বিদ্যুতের ৬ কোটি টাকা আত্মসাত ॥ হিসাবরক্ষক উধাও

প্রকাশিত: ০৪:১৫, ৫ এপ্রিল ২০১৬

পল্লী বিদ্যুতের ৬ কোটি টাকা আত্মসাত ॥ হিসাবরক্ষক উধাও

নিজস্ব সংবাদদাতা, পটুয়াখালী, ৪ এপ্রিল ॥ পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুত সমিতির প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন ক্যাশিয়ার জায়েদা খানম। টাকা আত্মসাতের ঘটনায় জায়েদা খানমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া আত্মসাতকৃত অর্থের প্রকৃত পরিমাণ, সমিতির সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ করার জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। অপরদিকে হিসাবরক্ষক সোমবার থেকে গাঢাকা দিয়েছে। থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। জানা যায়, পল্লী বিদ্যুত সমিতির অগ্রণী ব্যাংক, পটুয়াখালী পুরানবাজার শাখায় সমিতির এসটিডি হিসাব নং-১৫-এর হিসাবে জমাকৃত টাকার হিসাব জানতে যোগাযোগ করেন ৩১ মার্চ সমিতির হিসাবরক্ষক তরিবুল্লাহ আকন্দ। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, ৩১ মার্চ পর্যন্ত এ্যাকাউন্টে চার কোটি ৪৩ লাখ ২২ হাজার ৮৩৫ টাকা জমা রয়েছে। বিষয়টি সন্দেহজনক হলে তরিবুল্লাহ আকন্দ তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত এক মাস আগে ফেব্রুয়ারি মাসের হিসাব বিবরণী নিয়ে ব্যাংকে যোগাযোগ করলে ব্যংকের হিসাব বিবরণীটি ভুয়া বলে নিশ্চিত করা হয়। ক্যাশিয়ার জায়েদা খানম ২০০৫-০৬ সাল থেকে ব্যাংকের সিল-স্বাক্ষর জাল করে ভূয়া ব্যাংক ডিপোজিট রসিদ ও ব্যাংকের হিসাব বিবরণী তৈরি করে সমিতির হিসাব শাখায় জমা দিতেন বলে বলা হয়। সমিতি থেকে আরও জানা যায়, জায়েদা খানম ফেব্রুয়ারি-২০১৬ মাস পর্যন্ত ব্যাংকের হিসাব বিবরণীতে ১০ কোটি ৮৯ লাখ ৮৫ হাজার ৫৪৭ টাকা জমা দেখিয়েছেন অফিসে। অথচ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারি-২০১৬ পর্যন্ত তাদের ব্যাংকের হিসাব বিবরণীতে রয়েছে চার কোটি ৪৩ লাখ ২২ হাজার ৮৩৫ টাকা। সে অনুযায়ী সমিতির ৬ কোটি ৪৬ লাখ ৬২ হাজার ৭১২ টাকা ব্যাংকে কম প্রদান করা হয়েছে। সমিতির ক্যাশিয়ার পদে কর্মরত থেকে আদায়কৃত সম্পূর্ণ অর্থ ব্যাংকে জমা না করে নিজে আত্মসাত করায় ৩১ মার্চ বিকেল থেকে ক্যাশিয়ার জায়েদা খানমকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। এদিকে, ক্যাশিয়ার জায়েদা খানম বর্তমানে কলাপাড়ায় কর্মরত রয়েছেন। তিনি গত ২ মার্চ সমিতির মহাব্যবস্থাপক বরাবর লিখিতভাবে অর্থ গরমিলের কথা স্বীকার করেছেন। এতে তিনি পটুয়াখালী সদর দফতরে কর্মরত থাকাকালে যে আর্থিক অনিয়ম করেছেন তা আস্তে আস্তে পরিশোধ করার চেষ্টা করবেন বলে উল্লেখ করেন। এদিকে, উল্লিখিত আত্মসাত হওয়া অর্থের প্রকৃত পরিমাণ, আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত সমিতির সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ ও ব্যাংকের দায়বদ্ধতার বিষয়টি তদন্ত করতে বাউফল জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যস্থাপক আবু বকর ছিদ্দিককে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিট গঠন করা হয়েছে। পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুত সমিতির মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী হাফিজ আহমেদ বলেন, সমিতির অর্থ আত্মসাতের ঘটনাটির তদন্ত করতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
×