ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তাহমিনা মিলি

বসার ঘরে আলোর সাজ

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ৪ এপ্রিল ২০১৬

বসার ঘরে আলোর সাজ

শুধুমাত্র একটু ব্যতিক্রমধর্মী লাইটিং আপনার ঘরের পুরো লুক পরিবর্তন করে দিতে পারে। ঘরের অভ্যন্তরীণ আলোকসজ্জায় বৈচিত্র্যের চমক আনতে আপনাকে কিছুটা সৃনজশীল হতে হবে। ঘরের আয়তন ও আসবাবপত্রের অবস্থান ইত্যাদি বিবেচনা করে ঘরের মধ্যে আলোছায়ায় মায়াবী ভুবন গড়তে প্রয়োজনে পেশাদার ইন্টেরিয়র ডিজাইনারের সঙ্গে আলাপ করে বুদ্ধি পরামর্শ নিতে পারেন। আপনার বাড়ির ড্রইংরুমটি হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। ড্রইংরুমের লাইটিং যদি রুচিসম্মত এবং সুন্দর না হয় তাহলে সেখানে দামি সোফা, বর্ণাঢ্য কার্পেট, মনকাড়া পেইন্টিংস, ডিভান, শো পিস থাকুক না কেন তা বাড়িতে আসা অতিথিদের আকৃষ্ট করবে না। বাড়িতে বসার ঘরের আলোক বিন্যাস হওয়া উচিত সবচেয়ে আকর্ষণীয়। কারণ আপনার ঘরের অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা অতিথির নজরে আনতে ড্রাইংরুমকে সবচেয়ে আকর্ষণীয়ভাবে সাজানো উচিত। সেক্ষেত্রে লাইটিং হচ্ছে প্রধান হাতিয়ার। খুব দামি আসবাবপত্রই যে ঘরের ইন্টেরিয়রে আমূল পরিবর্তন আনতে পারে তা কিন্তু মোটেও নয়। রঙিন দেয়ালে আলো-ছায়ার ছোটাছুটি পুরো ঘরের চেহারটাই আমূল বদলে দিতে পারে। ০ আলোর এই উৎস দুই রকম হতে পারে। একটা প্রাকৃতিক আলো আর অপরটা কৃত্রিম। প্রাকৃতিক আলোর উৎসগুলোকে একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করে আপনি পুরো ঘরকে নান্দনিক করে তুলতে পারেন। এখানে ঘরের অভ্যন্তরীণ আলোকসজ্জা অর্থাৎ ইন্টেরিয়র লাইটিংয়ে বেশকিছু চমৎকার টিপস দেয়া হলো। ০ বাসার ড্রইংরুমটি সাধারণত ঘরের প্রধান দরজার খুব কাছাকাছি হয়ে থাকে চেষ্টা করুন এই রুমের জানালাগুলোকে একটু গোছানোভাবে তৈরি করতে। যদি বাড়ির প্রধান দরজা আলাদা করিডোরে হয় তাহলে ড্রইং রুমটি দরজাবিহীন শুধু দেয়াল দিয়ে আলাদা করতে পারেন এতে আলো-বাতাস বেশি আসবে। ০ ড্রইং রুমের দেয়ালে কিছুটা অংশে কাঁচ বসিয়ে দিতে পারেন। এতে বাড়তি আলোর যোগ থাকবে। ০ এখন অনেকেই বাড়িতে কাঁচের ব্লক ব্যবহার করেন। এতে দিনের আলোকে আপনি একটা ডাইমেনশন দিতে পারবেন। এ ধরনের ব্লক বসাতে খরচ খুব বেশি হয় না। তবে চাইলে আপনি সিলিংয়ে দিকে ব্লক বসাতে পারেন। ০ আমাদের এখানে বাড়ির সিলিংয়ে ফোকর প্রচলন না থাকলেও এখন অনেকেই ছাদের অংশে এ ধরনের ফোকর বসিয়ে থাকেন। এতে ঘরের ছাদ ঘেঁষে এক ধরনের আলো প্রবেশ করে। ০ ড্রইংরুমের একপাশের দেয়ালটুকু পুরোটা কাঁচ দিয়ে তৈরি করতে পারেন। ছাদের সঙ্গে খানিকটা কাত করে এই কাঁচের দেয়ালটি দাঁড় করিয়ে দিলে কিন্তু মন্দ হবে না। এত গেল প্রাকৃতিক আলোর উৎস। এবার দেখা যাক কৃত্রিমভাবে কিভাবে আলোক বিন্যাস করে ঘরের ভেতরে সৌন্দর্যের নতুন ব্যঞ্জনা সৃষ্টি করা যায়Ñ ০ কৃত্রিম আলোকসজ্জার ক্ষেত্রে লাইটগুলোকে এমনভাবে ব্যবহার করতে হবে যাতে, ঘর গরম না হয়ে ওঠে। খুব শক্তিশালী হ্যালোজেন বাতি ঘরে না রাখাই ভাল। ০ ঘরে দু’ধরনের আলোর ব্যবস্থা রাখবেন। একটি হচ্ছে নান্দনিক। সেখানে আলোর পরিমাণ কম থাকবে এবং আলো বেশ রঙিন ও ছড়ানো ছিটানো হবে। আর এক ধরনের আলোক ব্যবস্থা থাকবে। তা হলো সাধারণ। যেখানে দু’তিনটি বেশি পাওয়ারের বাতি থেকে আলো ছড়িয়ে পড়বে ঘরের কোনায় কোনায়। ০ ঘরে নান্দনিক আলো আনতে স্পট লাইটের বিকল্প নেই। কারণ এই লাইটকে আপনি আপনার ইচ্ছে মতো নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। আর যে কোন নির্দিষ্ট স্থানে আলো ফেলতে পারলেই ঘরে আলো আঁধার ছুটোছুটি করবে। ০ যদি স্পষ্ট লাইটের সুযোগ না থাকে তাহলে আলো কোন মাটির মটকা, বেতের ঝুড়ি অথবা বাঁশের খোলের মধ্যে লুকিয়ে ফেলতে পারেন। এতে ঘরের লাইটিংয়ে বিভিন্ন ডাইমেনশন আসবে। ০ যেহেতু এটা ড্রইং রুম, তাই শুধু টি টেবিলের অংশটুকু ছাড়া বাকিটুকু অন্ধকার থাকলেও কোন সমস্যা নেই। উপরে একটা ঝাড় বাতি থাকলেই সে অংশটুকু অন্ধকার হয়ে থাকবে। আর স্পষ্ট লাইট তো আছেই। ০ দেয়ালগুলো আলোকময় করতে দেয়াল ঝুলিয়ে কিছু বাতি সেট করতে পারেন। আর রুমের সেখানে বাতি আছে সেই জায়গাগুলোতেই কেবলমাত্র ছবি ঝুলান। সে ক্ষেত্রে বাতি বসানোর আগেই দেখে নিন কোথায় কোথায় ছবি ঝোলাবেন। ০ একটি বড় কিংবা অনেকগুলো ছোট ছোট রট আয়রনের মোমবাতির স্ট্যান্ড রাখুন। এগুলো একদিকে ঘরের সৌন্দর্য বাড়াবে অপর পক্ষে লোডশেডিংয়ে কাজে দেবে। তবে বাতিগুলো যেন অবশ্যই দেয়াল থেকে দূরে থাকে। নইলে কালি পড়ে যাবে। ০ রঙিন বাতি না দেয়াই ভাল। যদি ঘরে কোন কস্টিউম কর্নার থাকে (এ্যাকুরিয়াম, ফোয়ারা কিংবা কৃত্রিম গাছের বাগান) সেখানে রঙিন বাতি ব্যবহার করা যেতে পারে। ০ বাতির উপরে অবশ্যই শেড দিয়ে দিন। এটাই এখন স্টাইল। নইলে খুব খারাপ দেখাবে। ০ কাপড় আর বাঁশের কঞ্চি দিয়ে চমৎকার ল্যাম্প স্ট্যান্ড বানানো যায়। এ ধরনের ল্যাম্প স্ট্যান্ড একদিকে যেমন আপনার ঘরের শোভা বাড়াবে তেমনি আপনার নান্দনিকতাও ফুটিয়ে তুলবে। ০ ড্রইংরুম লাইটিংয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো কতটুকু আলো কোথায় থাকবে তা ঠিকভাবে নির্ধারণ করতে হবে। সঠিক জায়গাতে পরিমিত আলো আপনার ঘরকে বহুগুণ সুন্দর করে তুলতে পারে। আলোর আলেয়া এমনভাবে ছেয়ে থাকবে সেখানে বাড়িতে আসা অতিথি বুঝে উঠতে পারবেন না। এখন দিন নাকি রাত।
×