ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

লজ্জার ভূষণ জাদুঘরে জমা দিয়েছে ইসি ॥ রিজভী

ইউপি নির্বাচন বাতিল দাবি বিএনপির

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ৪ এপ্রিল ২০১৬

ইউপি নির্বাচন বাতিল দাবি বিএনপির

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দুই দফা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি ও সহিংসতা হয়েছে অভিযোগ করে এ নির্বাচন বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। রবিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষ থেকে এ দাবি জানান সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি অভিযোগ করেন ইউপি নির্বাচনে পুলিশ ও প্রিসাইডিং অফিসাররা সিল মেরে ক্ষমতাসীনদের বিজয়ী করেছে। রিজভী বলেন, নির্বাচন কমিশন তাদের লজ্জার ভূষণ জাদুঘরে জমা দিয়েছে। তাই ইউপি নির্বাচনে ভোট ডাকাতি এবং সন্ত্রাসীদের তা-বে ৪২ জন নিহত ও এক হাজারেরও বেশি আহত হওয়ার পরও এ নির্বাচন বাতিল করছে না। কোথাও কোথাও ভোটের আগের রাতেই ব্যালট বাক্স ভরে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ কারণে আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের অধীনে সকল নির্বাচন জনগণ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে। আমি বিএনপির পক্ষ থেকে অবিলম্বে ভোট ডাকাতির এ নির্বাচন বাতিলের দাবি জানিয়ে অতীতের মতো আবারও নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবি করছি। তিনি বলেন, নির্বাচনী সহিংসতায় শিশু নিহত হয়েছে। এই লজ্জা কার? পুলিশ ভোট দিচ্ছে। এই লজ্জা কার? রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপি ও সাধারণ জনগণ ভোট ডাকাতিতে বাধা দিলে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর গুলি চালায় এবং সশস্ত্র অবস্থায় ঝাঁপিয়ে পড়ে। বিএনপি প্রার্থী ও সমর্থকদের শত শত বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। ২ দফা নির্বাচনের পর এখনও দেশজুড়ে সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে। সন্ত্রাসীদের অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি ও তা-বে দেশজুড়ে ভয়াবহ আতঙ্ক বিরাজ করছে। রিজভী বলেন, ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে বিএনপি বার বার নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করেছে। অনেক জায়গায় তাদের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্রই জমা দিতে দেয়া হয়নি। জোর করে, হামলা করে, অস্ত্রের মুখে বিএনপি প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র কেড়ে নেয়া হয়েছে। এমনকি ঠুনকো অজুহাতে ইসি বহু জায়গায় আমাদের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করে দিয়েছে। আর সরকারী দলের লোকেরা ভোটের দিন বিএনপির এজেন্টরা যাতে ভোট কেন্দ্রে না যায় সে জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিয়েছে। রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের ভোট সন্ত্রাসের সহযোগিতাকারী হিসেবে ইসি এখন একটি নিথর নিস্ক্রিয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়ায় দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। এ কারণে সকল ইউনিয়নে জালভোটের উৎসব এবং ৭১২ ইউনিয়নে পুলিশ, নির্বাচনী কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের লোকেরা ভোট ডাকাতির তা-ব চালায়। আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব-উল আলম হানিফের উদ্দেশে রিজভী বলেন, আপনি বলেছেন লজ্জায় নাকি বিএনপি নির্বাচন ছেড়ে চলে যাচ্ছে। আমি বলি যারা মানুষের জীবন নিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধি করে। যারা রক্তপাত ঘটিয়ে হোলির উৎসবের ন্যায় খেলা করে। দেশটাকে লুটের মালের মতো খাবলাইয়া খাবলাইয়া খাচ্ছেÑ নজরুল ॥ ‘দেশটাকে লুটের মালের মতো যে যেভাবে পারছে খাবলাইয়া খাবলাইয়া খাচ্ছে’ বলে অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র নেতা নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, এজন্যই কি যুদ্ধ করেছিলাম? এজন্যই কি দেশের মানুষ জীবন দিয়েছিলেন? এজন্যই কি আমাদের লক্ষ লক্ষ মা-বোন ইজ্জত দিয়েছিলেন? রবিবার দুপুরে রাজধানীর ফটোজার্নালিস্ট এ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে কল্যাণ পার্টি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন তিনি। সরকারকে উদ্দেশ করে নজরুল ইসলাম বলেন, লুটপাটে সহযোগিতা করে কীভাবে বলেন আপনারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার? মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম নির্বিঘেœ বেঁচে থাকব বলে। সুষ্ঠু পরিবেশে আমাদের সন্তানরা বেঁচে থাকবে সেজন্য। কিন্তু আজ কোথায় সেই পরিবেশ? তিনি বলেন, এখন মানুষ বুঝে গেছে আওয়ামী লীগ কী জিনিস। ভোট দিতে গিয়ে দেখে ভোট দেয়া হয়ে গেছে। অথবা ব্যালট পেপার কেড়ে নেয়া হচ্ছে। চোখের সামনে ক্ষমতাসীনরা এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে। ইউপি নির্বাচনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নিহতের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, এ সরকারের আমলে কারও জীবন নিরাপদ নয়। কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব এমএম আমিনুর রহমান, যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজীজ উলফাত প্রমুখ।
×