ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রথমবারেই সরু বালাম ধানের বাম্পার ফলন

প্রকাশিত: ০৪:১৫, ৩ এপ্রিল ২০১৬

প্রথমবারেই সরু বালাম ধানের বাম্পার ফলন

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ খুলনায় চলতি বোরো মৌসুমে মাঠ পর্যায়ে প্রথমবারের মতো ব্রিধান-৬৩ বা সরু বালাম এবং ব্রি ধান-৫৮ নামে উচ্চফলনশীল নতুন দুটি জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। ডুমুরিয়া উপজেলার মেছাঘোনা গ্রামের পাশে কার্তিকডাঙ্গা বিলে বোরো চাষের জমিতে নতুন এ দুটি ধানের আবাদ হয়। ইতোমধ্যে ধান পাকতে শুরু করেছে। আগামী সপ্তাহে তা কাটা যাবে এবং বাম্পার ফলনের প্রত্যাশা করছে উদ্যোক্তা ও কৃষক। মেছাঘোনা গ্রামের কার্তিকডাঙ্গা বিলের যে জমিতে ২০১০ সালে প্রথম ব্রিধান-৫০ (বাংলামতি) লাগিয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয় সেই জমিতেই এবার বোরো মৌসুমে লাগানো হয়েছে ব্রিধান-৬৩ বা সরু বালাম এবং ব্রি ধান-৫৮ নামে উচ্চফলনশীল নতুন দুটি জাত। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত এই ধান দুটি চাষের উদ্যোক্তাও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক এসএম আতিয়ার রহমান। তিনি ব্রি থেকে এ দুটি ধানের প্রত্যেকটির পাঁচ কেজি করে বীজ সংগ্রহ করে নিজেদের ৬০ শতাংশ জমিতে চাষের ব্যবস্থা করেন। ইতোমধ্যে ধান পাকতে শুরু করেছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ব্রিধান-৬৩ সরু বালাম হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাবে এবং আগামী ৫-৬ বছরের মধ্যে মিনিকেট এবং ব্রিধান- ২৮জাতের চাল বাজার দখল করবে। জাত দুটির চাষকারী কৃষক টিপনা গ্রামের আকতার হোসেন বলেন, নতুন জাতের এ ধান দুটোর ফলন অনেক ভাল হয়েছে। আশপাশের গ্রাম থেকে প্রতিদিনই লোক আসছে এই ধানক্ষেত দেখতে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি ব্রিধান-৬৩ ও ব্রি ধান-৫৮ জাত দুটি সম্প্রতি মাঠপর্যায়ে চাষের অনুমোদন দিয়েছে। ব্রি ধান-৬৩’র বিশেষ বৈশিষ্ট্য- এ জাতের ধান থেকে বোরো মৌসুমে প্রিমিয়াম কোয়ালিটির (উচ্চমানের) চাল পাওয়া যাবে। এ জাতটির চাল সরু এবং গুণাগুণ বালাম চালের মতো বলে এটি সরু বালাম নামে পরিচিত। এ ধান অধিক ফলনশীল, চালের আকার- আকৃতি পাকিস্তানি বাসমতির মতো লম্বা ও চিকন। এছাড়া ব্রিধান-৫৮ উচ্চ ফলনশীল, চাল মাঝারি লম্বা, ভাত ঝরঝরে। নতুন এ দুটি জাতের ধানের ফলন হবে হেক্টরপ্রতি ৭ থেকে সাড়ে ৭টন। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রধান তমাল লতা আদিত্য আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বোরো মৌসুমে চাষাবাদের জন্য ব্রিধান-৬৩ ও ব্রিধান-৫৮ জাত ২টি উত্তম এবং ব্রিধান-৬৩ বা সরু বালাম বিদেশে রফতানিযোগ্য।
×