ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনপরবর্তী সহিংসতায় গুলিবিদ্ধসহ আহত ৮০

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২ এপ্রিল ২০১৬

নির্বাচনপরবর্তী সহিংসতায় গুলিবিদ্ধসহ আহত ৮০

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ইউপি নির্বাচনের পরে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংস ঘটনা ঘটেছে। প্রতিপক্ষের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। পৃথক হামলায় গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ৮০ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। আটক করা হয় অন্তত ১০ জনকে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হয়। নাটোরে ১০ বাড়িতে আগুন, ৩০ বাড়ি ভাংচুর, ব্যাপক লুটপাট করা হয়। নবীনগরে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে গোলাগুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় বেশ কয়েকজন আহত হয়। মাদারীপুরে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষে সাতজন গুলিবিদ্ধসহ ১৫ জন আহত হয়। মানিকগঞ্জে নৌকার এজেন্টের বাড়িসহ পাঁচ বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করা হয়। ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় ভোটে হেরে সংখ্যালঘুর বাড়িতে হামলা চালায় এক ইউপি সদস্যপ্রার্থীর লোকজন। নৌকায় ভোট দেয়ায় কুপিয়ে জখম করা হয় সাদ্দাম মুন্সীকে। মাগুরায় এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকের হামলায় পাঁচজন আহত হয়। কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে নির্বাচিত ইউপি সদস্যের ওপর হামলা চালায় পরাজিত সদস্য প্রার্থী। এ সময় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। নেত্রকোনায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক শিক্ষককে (অব) পিটিয়েছে পরাজিত মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকরা। বগুড়ার সোনাতলায় বিজয়ী সাধারণ সদস্যের বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। ভোলায় দুই সদস্যপ্রার্থীর সমর্থকের মধ্যে সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হয়। বৃহস্পতিবার রাত ও শুক্রবার এসব ঘটনা ঘটে। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের। ইউপি নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় শুক্রবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের দুর্গাপুর ও তাজপুরে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষে দুই গ্রামের কয়েক হাজার লোক অংশ নেয়। এ সময় সাতটি স্থানে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে উভয়পক্ষের বাড়িঘর, দোকানপাট ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ ৫০ রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। এদিকে নবীনগরের বীরগাঁও ইউনিয়নে শুক্রবার সকালে বিজয়ী স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী কবির আহম্মেদ ও পরাজিত স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী কবির হোসেনের সমর্থকদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়। এছাড়া দুপুরে বীরগাঁও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী জহির রায়হান ও তার সমর্থকরা পুনর্নির্বাচনের দাবিতে নবীনগর উপজেলা পরিষদ ভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার রাতে নবীনগর পূর্ব ইউপির নায়েব আলী শাহ্ আস্তানা ক্যাম্পে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর সংঘর্ষে ২০ জন আহত হয়। মাদারীপুর ॥ সদর উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পর শুক্রবার সকালে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাহেব আলীর সমর্থকরা প্রার্থী সানোয়ার হোসেনের সমর্থক বেলায়েত হোসেনের বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় বেলায়েত হোসেনের লোকজন হামলকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। এতে রফিক হাওলাদার (২৬), কালাম (৩৫), হাসান (৩০), আলহাজ (২৬), রুবেল (২৩), নাইম (২৭), সালাম (৩৫) গুলিবিদ্ধ হয়। গুলিবর্ষণের ঘটনায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে আহত হয় আরও আটজন। গুলিবিদ্ধ রফিক, কালাম ও হাসানের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মানিকগঞ্জ ॥ দৌলতপুরের বাচামারা ইউনিয়নে বিজয়ী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফের সমর্থকরা স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও নৌকা প্রতীকের এজেন্ট মোহাম্মদ আলী সিদ্দীকির বাড়িসহ পাঁচ বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করেছে। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় সাদ্দাম হোসেন (২২) নামে এক আওয়ামী লীগ সমর্থককে বেদম পিটিয়ে আহত করে। দৌলতপুরে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় নিহতের ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ। ফরিদপুর ॥ আলফাডাঙ্গার টগরবন্ধ ইউনিয়নের শিকারপুর গ্রামে ইউপি সদস্য হতে না পারায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর, মারপিট ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। হামলায় ছয় নারীসহ সাতজন আহত হয়েছেন। ৫নং ওয়ার্ডের পরাজিত ইউপি সদস্য মুরাদ হোসেনের সমর্থকরা বৃহস্পতিবার বিকেলে শিকারপুর গ্রামের হিন্দু পল্লীতে এ হামলা চালায়। এদিকে পাচুরিয়া ইউপির ৫নং ওয়ার্ডে নৌকায় ভোট দেয়ায় দক্ষিণ পাচুড়িয়া গ্রামের জাফর মুন্সির ছেলে সাদ্দাম মুন্সিকে (৩০) রামদা দিয়ে কুপিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন জখম করেছে। শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। মাগুরা ॥ সদর উপজেলার আঠারখাদা ইউপিতে বৃহ¯পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পরাজিত স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় বিজয়ী আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যান প্রার্থীর পাঁচ সমর্থক আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় অমরেশ বিশ্বাসসহ ১৮ জনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে । কুষ্টিয়া ॥ দৌলতপুরে নবনির্বাচিত ইউপি সদস্যের ওপর পরাজিত ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থকরা হামলা চালিয়েছে। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ তিন রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে হোসেনাবাদ বাজারে এ ঘটনা ঘটে। বগুড়া ॥ সোনাতলার সুজাইতপুর গ্রামে নির্বাচনোত্তর হামলায় এক বিজয়ী সাধারণ সদস্যের বাড়িতে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে সদস্যপদে বিজয়ী আব্দুল জলিল মুন্সি (খাজা মুন্সি) বিজয়ী হয়ে গ্রামে যাওয়ার সময়ই তার বাড়ির আঙিনায় খড়ের পালায় আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। নেত্রকোনা ॥ এক পরাজিত মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকরা ভোট না দেয়ার অজুহাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক অশীতিপর শিক্ষক ও অপর এক প্রবীণ কৃষককে লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে। একই সঙ্গে ‘মালাউন’ গালি দিয়ে দেশ ছাড়া করারও হুমকি দিয়ে গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে আটপাড়া উপজেলার দুওজ ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে।
×