ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

জব ফেয়ার উদ্বোধন কারিগরি শিক্ষা নিয়ে কেউ বেকার নেই ॥ শিক্ষামন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৪:৪২, ২ এপ্রিল ২০১৬

জব ফেয়ার উদ্বোধন কারিগরি শিক্ষা নিয়ে কেউ বেকার নেই ॥ শিক্ষামন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, কারিগরি শিক্ষা যুবসমাজের চাকরি ও আত্মকর্মসংস্থানের অপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি করছে। অনেক ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা লাভ করে হাজার হাজার যুবক-যুবতী বেকার থাকলেও কারিগরি শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে কেউ বেকার নেই। পাস করার সঙ্গে সঙ্গে চাকরি পায়। দক্ষতা অর্জন করতে পারলে তাদের চাকরি খুঁজতে হবে না, চাকরিই তাদের খুঁজে বের করবে। শুক্রবার স্কিলস এ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্টের (স্টেপ) সহযোগিতায় ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে দিনব্যাপী জব ফেয়ারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অশোক কুমার বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শিক্ষাসচিব মোঃ সোহরাব হোসাইন, স্টেপ প্রজেক্টের পরিচালক মোঃ ইমরান, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অপারেশন্স অফিসার ড. মোঃ মোখলেছুর রহমান, ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মোঃ মোজাহার হোসেন প্রমুখ। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার কারিগরি শিক্ষায় যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। ২০০৮ সালে যেখানে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষার্থী ভর্তির হার ছিল এক দশমিক ২ শতাংশ, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ১১ শতাংশে। ২০২০ সালের মধ্যে এ হার ২০ শতাংশে উন্নীত করা হবে, এমনকি তার চেয়ে বেশি হবে। তিনি আরও বলেন, ২৩টি আন্তর্জাতিক মানের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে নতুন কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হচ্ছে। বিদ্যমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে নতুন আরও একলাখ শিক্ষার্থী ভর্তির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কারিগরি খাতে পূর্বে কোন প্রকল্প ছিল না। এ সরকারের সময়েই কারিগরি খাতে ৫টি বড় বড় প্রকল্প উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। দক্ষ ও আধুনিক কারিগরি প্রতিষ্ঠানের জন্য উপযুক্ত শিক্ষক গড়ে তোলার লক্ষে দেশের অভ্যন্তরে নিয়মিত প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বিদেশ থেকেও শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। সিঙ্গাপুরের বিশ্বখ্যাত নানইয়াং পলিটেকনিক থেকে এই প্রথম ৪২০ জন শিক্ষককে উচ্চমানের প্রশিক্ষণ দিয়ে আনা হয়েছে। আরও এক হাজার ১৫০ জন শিক্ষককে প্রশিক্ষণের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ মাস থেকেই প্রশিক্ষণ শুরু হবে। কারিগরি শিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহণ নিয়ে মন্ত্রী বলেন, সরকার কারিগরি শিক্ষায় মহিলাদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। দেশের ৪টি বিভাগীয় শহরে ৪টি মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হয়েছে, বাকি ৩টিতে স্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে। পলিটেকনিকে ভর্তির ক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য ২০ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত আছে। একশত ভাগ মহিলা শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান করা হয়। নারীবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির জন্য তাদের জন্য আলাদা টয়লেট, কমনরুম ও হোস্টেল করা হচ্ছে। সরকার কারিগরি খাতে নতুন বিপ্লব এনে দেশের বিপুল জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করার লক্ষে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। জব ফেয়ার এ দেশের খ্যাতনামা শিল্পকারখানার পক্ষ থেকে স্টল স্থাপন করা হয়। দিনব্যাপী চলে স্পট ইন্টারভিউ এবং চাকরি প্রদান। একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান স্পট ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রীর উপস্থিতিতে দুই জন শিক্ষার্থীকে সরাসরি নিয়োগপত্র প্রদান করে ফেয়ারের উদ্বোধন করেন। জব ফেয়ার ২০১৬ উপলক্ষে “কারিগরি শিক্ষায় নারীর ভূমিকা” শীর্ষক একটি সেমিনারও আয়োজন করা হয়। জব ফেয়ারে স্যামসাং বাংলাদেশ, জবস্ বিডি, প্রাণ গ্রুপ, আরএফএল গ্রুপ, ওয়ালটন, ট্রান্সকম ইলেক্ট্রনিক্স লি., স্পেকট্রাম, রাশেদুল হাসান এ্যাসোসিয়েটস, টেকনোক্রেসি, এশিয়ান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, বেঙ্গল সায়েন্টিফিক লি., রেইনবো অটোমেশন, সতত আর্কিটেক্সার ফর গ্রিন লিভিং, ত্রিমাত্রা, পান্থনীড়, ইউনাইটেড কনসালট্যান্ট ইত্যাদিসহ মোট ৩০টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে।
×