ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সামির চ্যালেঞ্জ ধোনিদের

প্রকাশিত: ০৬:৪৯, ৩১ মার্চ ২০১৬

সামির চ্যালেঞ্জ ধোনিদের

স্পোর্টস রিপোর্টার, মুম্বাই থেকে ॥ ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক ড্যারেন সামি সবসময়ই ফুর্তিতে থাকেন। দল হারুক কিংবা জিতুক; তাকে সবসময় হাসতেই দেখা যায়। হাসতে হাসতেই বুধবার এমন এক কথা বলে ফেললেন সামি, ভারত ক্রিকেটারদের হুঙ্কার দিয়ে বসলেন আবার তাতিয়েও দিলেন। বলে দিলেন, ‘(ভারতকে) ধ্বংস করে দেব!’ এমন কথা বলার পেছনে দুটি কারণ হতে পারে। একটি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সত্যিই ধ্বংস করে দিতে চায় ভারতকে। আজ ভারতের বিপক্ষে সেমিফাইনালে জিতে ফাইনালে উঠতে চায়। ভারতকে হারানো মানেই হচ্ছে ধ্বংস করে দেয়া। আরেকটি হতে পারে, যেহেতু সামি বুঝে গেছেন, ভারত দলের যে ব্যাটিং-বোলিং লাইনআপ, তাতে করে শুধু খেলা দিয়ে জেতা মুশকিল। তাই মাঠের বাইরেও কথার লড়াই শুরু করতে চাইলেন। যদি ভারত ক্রিকেটাররা রেগে গিয়ে ভুল করে বসেন, তাহলেই তো জয় ধরাও দিলে দিতে পারে। দ্বিতীয় কারণটিই আসলে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হচ্ছে। কারণ একটাই, যতই ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে ক্রিস গেইল থাকুক, ভারত দলে ম্যাচ জেতানোর মতো অনেক ক্রিকেটার আছেন। ভারত টি২০’র এক নম্বর দল। তারা টি২০টা এমনভাবে রপ্ত করে নিয়েছে যে প্রতিপক্ষ যে দলই হোক, জয় যেন তাদেরই হবে। সেই জয় থামানোর একটি চেষ্টাই সামি করতে চেয়েছেন ভারত ক্রিকেটারদের তাতিয়ে দিয়ে। অবশ্য মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কঠোর অনুশীলনের পর যখন সংবাদ সম্মেলনে এলেন সামি, তার মুখ দেখে কোনভাবেই বোঝার উপায় ছিল না, ভারত ক্রিকেটারদের তাতিয়ে দিতেই এমনটি বলেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক। সদা হাস্যোজ্জ্ব¡ল মুখ যে এ কথা বলার সময়, একটু হলেও গম্ভীর হয়ে গেল! ‘সুপার টেনে’ ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে দিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কাকেও হারিয়ে ‘গ্রুপ-১’ থেকে সবার আগে সেমিফাইনালে খেলা নিশ্চিত করেছে। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে হোঁচটও খেয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। হেরেছে। সবার ধারণা, এ হারে হুঁশ এসেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। কিন্তু সেই হুঁশ কী কাজে লাগবে? ভারত দলে যে আছেন বিরাট কোহলি। যিনি ভারতকে একাই সেমিফাইনালে তুলেছেন। সামির কাছে তাই কোহলি নিয়েই প্রথম প্রশ্নটি ছুড়ে গেল। সামিও কোন ‘রাখ-ঢাক’ না রেখে কোহলিকে ব্যতিক্রম ক্রিকেটারের খেতাব দিয়ে দিলেন, ‘সবাই জানে কোহলি ব্যতিক্রম খেলোয়াড়। কোন সন্দেহ নেই কোয়ালিটি খেলোয়াড়। রানও করে চলেছে। অসাধারণভাবেই ব্যাটিং করছে। ভারতকে জয়ও এনে দিচ্ছে।’ তবে নিজেদের নিয়েই ভাবনার কথা জানালেন সামি, ‘তবে তাকে নিয়ে নয়, আমরা নিজেদের নিয়েই ভাবছি।’ সেই ভাবনার পেছনে দলের ড্রেসিংরুম উচ্ছল থাকাটাকেই সামনে তুলে ধরছেন সামি। দলে যে দুর্দান্ত সব ক্রিকেটার রয়েছেন, সেই দিকটিকেও মজবুতভাবে তুলে ধরেছেন। বলেছেন, ‘আমাদের দলে বিধ্বংসী কিছু ক্রিকেটার আছে। যারা ড্রেসিংরুমটাকে যেমন উচ্ছলতায় ভরে দেয়, তেমনি মাঠেও বিধ্বংসী হয়ে ওঠে। আমরা উপভোগ্য একটি ম্যাচই উপহার দেব।’ কোহলিকে নিয়ে যখন কথা হচ্ছে, তখন গেইলকে নিয়ে কী আর প্রশ্ন না হয়ে পারে। হলোও। সামিও এক বাক্যে বলে দিলেন, ‘গেইল এখন বিশ্বের সেরা টি২০ ব্যাটসম্যান। এতে কোন সন্দেহ নেই।’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘তবে আমরা একটি ইউনিট হয়েই খেলব। বৃহস্পতিবার ভারতের বিপক্ষে ভাল খেলাও দেখাব।’ উপমহাদেশের দলগুলোর শক্তি হচ্ছে স্পিন। আর উপমহাদেশের বাইরের দলগুলোর দুর্বলতাই হচ্ছে স্পিন। যেহেতু মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে খেলা হবে, মনে করা হচ্ছে স্পিনটাও ধরবে। কিন্তু সামি সেটা মানতে নারাজ। এটা ভয় থেকে বললেন দুর্বলতা এড়িয়ে যেতে না কি সত্যিই বিশ্বাস করছেন তা বোঝার উপায় নেই। যদি স্পিন নির্ভর উইকেট হয়, তাহলে ম্যাচ হারের আগেই হেরে যাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই সামি বললেন, ‘ওয়াংখেড়ে স্পিন কোনভাবে বড় ভূমিকা পালন করবে না। এটা অনেক ভাল উইকেট। যদি ধরেও আমার দলের স্পিনাররাও অনেক ভাল। (সুলেমান) বেনের ইকোনমি দুর্দান্ত। (স্যামুয়েল) বাদলি পাওয়ার প্লেতে দুর্দান্ত বোলিং করছে। উইকেটও নিচ্ছে। আমাদের বোলাররা ভাল বোলিং করছে। ভারতের বিপক্ষেও আশা করছি ভালই করবে।’ এখন দেখা যাক, সত্যিই তা করতে পারে কি না ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ভারতকে হুঙ্কার দেয়া পর্যন্তই না আবার থেমে থাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দৌড়!
×