ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অপহৃত ২ জনকে মঙ্গলবার উদ্ধার করেছে স্থানীয় প্রশাসন

লিবিয়ায় নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ৩০ হাজার বাংলাদেশী

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ৩০ মার্চ ২০১৬

লিবিয়ায় নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ৩০ হাজার বাংলাদেশী

তৌহিদুর রহমান ॥ লিবিয়ায় চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটের ফলে প্রায় ৩০ হাজার বাংলাদেশী এখন নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। একের পর এক সংঘর্ষ, অপহরণ, মুক্তিপণ ইত্যাদির কারণে সেখানে তারা মৃত্যুকূপের মধ্যে বসবাস করছেন। রবিবার বেনগাজীতে চার বাংলাদেশী নাগরিক নিহত হওয়ার পর সেখানে অবস্থানরত সকল বাংলাদেশীকে সাবধানে চলাচল করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে প্রবাসীদের সঙ্গে ঠিকমতো যোগাযোগ রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে মঙ্গলবার লিবিয়ায় অপহৃত দুই বাংলাদেশীকে উদ্ধার করেছে সেখানকার স্থানীয় প্রশাসন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র এসব তথ্য জানায়।গত দুই বছরে তিন দফায় বিবৃতি দিয়ে লিবিয়ায় যেতে নিষেধ করেছে বাংলাদেশ সরকার। লিবিয়া ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার ফলে সেখানে শ্রমিক পাঠানোর বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। সর্বশেষ গত বছরের ৮ অক্টোবর লিবিয়ায় না যাওয়ার জন্য সতর্ক করা হয়। লিবিয়া পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত সেখানে শ্রমিকদের যেতে নিষেধও করা হয়। লিবিয়ার বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের সাবধানে থাকতে বলেছে বাংলাদেশ সরকার। তবে বাংলাদেশ সরকারের সাবধানতা অবলম্বনের বার্তা সেখানে অবস্থানরত সকল প্রবাসীর মাঝে পৌঁছানোও সম্ভব হচ্ছে না। লিবিয়ার বাংলাদেশীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগও কঠিন হয়ে পড়েছে। ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় লিবিয়া পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। লিবিয়ার বেনগাজীতে রবিবার দুই বিবদমান গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে নিহত হন চার বাংলাদেশী। এই চারজনের মধ্যে তিনজনের পরিচয় নিশ্চিত করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এছাড়া গত ২৫ মার্চ লিবিয়ার মিশকাত থেকে দুই বাংলাদেশী নাগরিককে অপহরণ করা হয়। মঙ্গলবার অপহৃত দুই বাংলাদেশী আসাদ ও রিপনকে উদ্ধার করেছে সেখানকার স্থানীয় প্রশাসন। এর আগে আল কুফরাহ শহরে দুই বিবদমান জঙ্গীগোষ্ঠীর হামলায় দুই বাংলাদেশী নাগরিক নিহত হন। এছাড়া লিবিয়ার উত্তর-মধ্যাঞ্চলীয় সিরাত শহরে একটি তেল খনিতে হামলা চালিয়ে দুই বাংলাদেশীকে অপহরণ করে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গীরা। এভাবে একের পর এক হত্যা ও অপহরণের ঘটনায় সেখানে সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশী নাগরিকদের ভ্রমণের পাশাপাশি লিবিয়ায় কোন শ্রমিককে না যাওয়ার জন্যও কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়। সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশীদের যুদ্ধ এলাকা, লোকজনের ভিড়, বিক্ষোভ বা মিছিল এড়িয়ে চলে সাবধানতা অবলম্বন করতে বলা হয়। ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, লিবিয়ায় বাংলাদেশী নাগরিকদের সাবধানে থাকার জন্য পরামর্শ দেয়ার বার্তাটি সেখানে সকল নাগরিকের মাঝে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। কেননা দেশটির চলমান অবস্থার কারণে সবার কাছে বাংলাদেশ সরকারের বার্তা পৌঁছানোও সম্ভব হচ্ছে না। সে কারণে বাংলাদেশীরা অনেকটাই ঝুঁকির মধ্যে পড়েছেন। এছাড়া ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারাও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। বাংলাদেশ দূতাবাসের অনুবাদককে দুই দফা অপহরণ করা হয়েছে। প্রতিবারই মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে আনা হয়েছে।
×