ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীসহ কয়েক স্থানে বৃষ্টি, গরম কমেছে

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ২৯ মার্চ ২০১৬

রাজধানীসহ কয়েক স্থানে বৃষ্টি, গরম কমেছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রকৃতিতে দাবদাহ শুরু হওয়ার আগেই সান্ত¡নার বৃষ্টিতে ভিজল। সোমবার রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাতের খবর পাওয়া গেছে। কোথাও কোথাও আবার বজ্রপাতসহ বৃষ্টি ঝরেছে। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, চলতি মাসসহ আগমী মাসেও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে গ্রীষ্মের শুরুতে আবহাওয়ার চরমভাবাপন্ন হওয়ার পরিবর্তে স্বাভাবিক রূপে বিরাজ করতে পারে। তবে এপ্রিল শেষে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রীতে উঠে যাওয়াসহ তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভবনার কথা আবহাওয়া অধিদফতর থেকে জানানো হয়েছে। তারা জানিয়েছে, অন্য বছরের শীত মৌসুম শুরু হওয়ার পর বৃষ্টিপাতের দেখা মেলে না বললেই চলে। কিন্তু এবারের আবহাওয়া অনেকটাই ব্যতিক্রম পরিলক্ষিত হচ্ছে। শীতের মধ্যেও বৃষ্টিপাত হয়েছে। শীত শেষে কয়েকবার বৃষ্টিপাত হয়েছে। কৃষিবিদদের মতে, এই সময়ে বৃষ্টি কৃষকের উপকার বয়ে আনে। বিশেষ করে কৃষকের ফসল বোনার জন্য এই সময়ে বৃষ্টি কৃষকের জন্য স্বস্তি বয়ে আনে। ধান ও পাট চাষের জন্য এই সময়ের বৃষ্টি খুবই উপযোগী। সোমবার সকাল থেকেই রাজধানীর আকাশে ছিল মেঘের ঘনঘটা। বেশিরভাগ সময়ে কালো মেঘে ছেয়ে ছিল। দুপুরের পর তা কালবৈশাখীর মেঘের আকার ধারণ করে। তবে মাঝে মধ্যে কালো মেঘ কেটে গিয়ে রোদ্দুরের লুকোচুরিও ছিল। এ কারণে কিছুটা ভ্যাপসা গরমের অনুভূতি ছিল। তবে দুপুর ১২টার পর রাজধানীতে নামে স্বস্তির বৃষ্টি। এ সময় ঠা-া বাতাসে জুড়িয়ে যায় শরীর। গত কয়েকদিনের উষ্ণ আবহাওয়ার কারণে তাপপ্রবাহ বইতে শুরু করেছিল প্রকৃতিকে। অবশেষে এই বৃষ্টি রাজধানীবাসীকে স্বস্তির পরশই বুলিয়ে দিয়ে গেছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সিলেটে ২৭ মিলিমিটার ও ময়মনসিংহে ৬ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এর বাইরে সারাদেশে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল সামান্যই। তাদের মতে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে অবস্থান করছে। বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ। এ কারণে দেশের তাপমাত্রা সহনীয় অবস্থার মধ্যে রয়েছে। রাজধানীতে সোমবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৫.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এছাড়া সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে খুলনা ও যশোরে, রাজশাহীতে ৩৪.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এর বাইরে দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রংপুরের ১৭.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, আগামী এপ্রিল মাসে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা যেমন রয়েছে তেমনি তীব্র তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে। এর বাইরে বজ্রসহ মাঝারি ও কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মাসের শেষের দিকে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে উঠে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে মে মাসে প্রয়োজনের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত হতে পারে। এদিকে হঠাৎ গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাতের কারণে পথচারীদের অনেকে বেকায়দায় পড়ে যান। ছাতা ছাড়া বাইরে বের হওয়ার কারণে বৃষ্টিতে ভিজতে দেখা গেছে। তবে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম থাকায় তা দুর্ভোগে রূপ নেয়নি। স্কুল ছুটি হওয়ায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে অভিভাবকরা কিছুটা দুর্ভোগ পোহান। তবে সাধারণ জনগণ জানিয়েছে, বৃষ্টি গুঁড়ি গুঁড়ি হলেও এ বৃষ্টিপাতের কারণে ধুলোর যন্ত্রণা থেকে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যাবে। বিশেষ করে নগরে খোঁড়াখুঁড়ির কারণে অন্য বছরের তুলনায় শীতের শুরুতে বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ বেড়ে যায়। এদিকে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সোমবার কুমিল্লা অঞ্চলসহ রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু’এক জায়গায় বৃষ্টি হলে আজ মঙ্গলবার ৮০ শতাংশ, বুধবার ৯০ শতাংশ, বৃহস্পতিবার ৬০ শতাংশ, শুক্রবার ৯০, শনিবার ৬০ ও রবিবার ৯০ শতাংশ সম্ভাবনা আছে বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের। এদিকে সোমবারের বৃষ্টি কিছুটা হলে স্বস্তি দিয়েছে নগরবাসীকে। বেলা সোয়া ১২টার পর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে। ফলে গত কয়েক দিনের শুষ্ক আবহাওয়ার পর রাজধানীবাসীকে কিছুটা হলেও স্বস্তি এনে দিয়েছে।
×