ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মগবাজার-মৌচাক উড়াল সড়কের একাংশ উদ্বোধন ৩০ মার্চ

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ২৬ মার্চ ২০১৬

মগবাজার-মৌচাক উড়াল সড়কের একাংশ উদ্বোধন ৩০ মার্চ

রাজন ভট্টচার্য ॥ নির্মাণকাজ শুরুর তিন বছরের বেশি সময় পেরিয়েছে। কথা ছিল এক বছরের মধ্যেই কাজ শেষ হবে। হয়নি। শেষ পর্যন্ত জ্বলল আশার আলো। অবশেষে মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের একাংশ গাড়ি চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হচ্ছে। ৩০ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের পরই সব ধরনের যান চলাচলের জন্য উড়াল সড়কটি উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। প্রায় নয় কিলোমিটার ফ্লাইওভারের মধ্যে সাতরাস্তা-মগবাজারের হলিফ্যামিলি হাসপাতাল পর্যন্ত দুই কিলোমিটার সড়ক খুলে দেয়ার কথা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে। বাকিটা ২০১৭ সাল পর্যন্ত সময় নেয়া হয়েছে। যদিও সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের আশা, চলতি বছরের শেষদিকেই পুরো কাজ শেষ হবে। এদিকে কয়েক দফা দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির পরও অরক্ষিত অবস্থায় চলছে প্রকল্পের নির্মাণকাজ। কাজের গতি মন্থর হওয়ার প্রায় দুই মাস যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে মগবাজার-মৌচাক সড়কের একাংশে। তাছাড়া ছয় কিলোমিটারের বেশি অংশে নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে এক মাসের বেশি সময়। প্রকল্পের একাংশের উদ্বোধন প্রসঙ্গে বুধবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজধানীর মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের সাতরাস্তা থেকে হলিফ্যামিলি হাসপাতাল পর্যন্ত দুই কিলোমিটার অংশ আগামী ৩০ মার্চ যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। এছাড়া ফ্লাইওভারের বাংলামোটর থেকে রাজারবাগ পর্যন্ত এবং রামপুরা আবুল হোটেল থেকে শান্তিনগর পর্যন্ত অংশের নির্মাণকাজ চলতি বছরের ডিসেম্বর নাগাদ শেষ হবে। সরেজমিন দেখা গেছে, প্রকল্পের রমনা এলাকায় এখন পিচ ঢালাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। শ্রমিকরা জানান, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে উড়াল সড়কটি উদ্বোধনের কথা ছিল। কিন্তু কাজ বেশি বাকি থাকায় অল্প সময়ে তা শেষ করা যায়নি। আমরা এখন দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তারা জানান, ২৬ মার্চের মধ্যে কাজ শেষ করা যাবে না- এমন মতামত দেয়া হলে উদ্বোধনের তারিখ পরিবর্তন করা হয়। শেষ মুহূর্তে এখন চলছে গার্ডারে রং আর ল্যাম্পপোস্টের লাইন টানার কাজ। তবে কাজ শেষ এটা বলা যায়। কারণ, এখনই সাতরাস্তা থেকে গাড়ি নিয়ে মগবাজার ফ্লাইওভারে নামা যাবে। প্রকল্প কর্মকর্তারা জানান, সাতরাস্তা দিয়ে গাড়ি নিয়ে ফ্লাইওভারে উঠে মগবাজার হয়ে ইস্কাটনের হলিফ্যামিলি হাসপাতালের সামনে গিয়ে নামা যাবে। এটি মালিবাগ-মৌচাক-মগবাজার ফ্লাইওভারের মূল অংশ। মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের প্রকল্প পরিচালক নাজমুল আলম জানান, যান চলাচলের জন্য এখনই প্রস্তুত ফ্লাইওভারটি। শেষ মুহূর্তে এখন চলছে ফিনিশিংয়ের কাজ। এ কাজ শেষ হবে আজকালের মধ্যেই। তবে বুধবার দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, ফ্লাইওভারে এখনও পিচ ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়নি। বাকি আছে লাইটিংয়ের কাজ। রঙের কাজ অব্যাহত রয়েছে। প্রকল্পের আরেক কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার জানান, প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রকল্পের সার-সংক্ষেপ উপস্থাপনের পর তিনি ৩০ মার্চ উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন। এই মুহূর্তে কিছু ফিনিশিং কাজ চলছে আর বিদ্যুত সংযোগ ও এ্যাপ্রোচ রাস্তা গ্রেডিং ঠিক করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এখন আসলে কাজ মূলত আর নেই। শুধু বেগুনবাড়ি অংশে কার্পেটিং বাকি আছে, যা কাল-পরশু শেষ হয়ে যাবে। প্রকল্প সূত্র জানায়, ৩০ মার্চ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে সাতরাস্তা থেকে হলিফ্যামিলি অংশে নামবেন। এর পরই সব ধরনের যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে ফ্লাইওভারের এ অংশটি। প্রকল্প অনুসারে, তিনটি ধাপের মগবাজার-মৌচাক-মালিবাগ ফ্লাইওভারের সাতরাস্তা থেকে হলিফ্যামিলি পর্যন্ত অংশটি মূল অংশ হিসেবে ধরা হয়। দ্বিতীয় ধাপে ইস্কাটন থেকে মৌচাক পর্যন্ত অংশের কাজ শেষ হয়েছে ৮৫ শতাংশ, যা আগামী জুন-জুলাইয়ে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হতে পারে। আর শেষ ধাপ রামপুরা থেকে মালিবাগ-মৌচাক হয়ে রাজারবাগ-শান্তিনগরের কাজের মাত্র ৪৫ শতাংশ শেষ হয়েছে, যা চলতি বছরের ডিসেম্বরে চালু করার আশা প্রকল্প কর্মকর্তাদের।
×