ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রাসেলসে সন্ত্রাসী হামলা

প্রকাশিত: ০৩:৩৫, ২৫ মার্চ ২০১৬

ব্রাসেলসে সন্ত্রাসী হামলা

আবারও আক্রান্ত হলো ইউরোপ। এবার রক্তাক্ত হলো বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস। ২২ মার্চ, মঙ্গলবার সকালে ব্রাসেলসের ব্যস্ততম জাভেনতেম বিমানবন্দর এবং একটি মেট্রো স্টেশনে (পাতাল রেল) তিন দফা উপর্যুপরি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পরিণামে ঘটনাস্থলেই অন্তত ৩৪ জন নিহত হন। আহতের সংখ্যা দুই শতাধিক। ঘটনার পরপরই বেলজিয়ামসহ ইউরোপের সর্বত্র জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা। কোথাও কোথাও ঘোষণা করা হয়েছে রেড এ্যালার্ট। জাভেনতেম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো এবং ইউরোপের ২৮ দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কর্মকা-ের সন্নিকটে অবস্থিত। হামলার দায় স্বীকার করে ইতোমধ্যে অনলাইনে বিবৃতি দিয়েছে জঙ্গীগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। বিমানবন্দরে হামলার জন্য দায়ী বলে সন্দেহভাজন তিন ব্যক্তির ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে যে, হামলার ধরন আত্মঘাতী। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত বছরের ১৩ নবেম্বর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে একযোগে কয়েকটি স্থানে অনুরূপ ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা ঘটে। আইএসের ওই নৃশংস হামলায় নিহত হন ১৩০ জন সাধারণ নাগরিক। প্যারিসে হামলার অন্যতম সন্দেহভাজন সালাহ আবদে সালামকে ১৮ মার্চ আহত অবস্থায় আটক করা হয় ব্রাসেলস থেকে। তাকে গ্রেফতারের সঙ্গে এই হামলার যোগসূত্র থাকাই স্বাভাবিক। আইএসের বিবৃতিতে প্রতিশোধ নেয়ার সুস্পষ্ট ইঙ্গিতও রয়েছে। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বেলজিয়াম, ফ্রান্স, ব্রিটেনসহ বিশ্ব নেতৃবৃন্দ তীব্র নিন্দা জ্ঞাপনের পাশাপাশি একে অভিহিত করেছে ইউরোপের ওপর আঘাত হিসেবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়েছে, আগামীতে এরকম আরও সন্ত্রাসী হামলা হতে পারে। এই হুমকি দিয়েছে আইএসও। সন্ত্রাস বর্তমান বিশ্বের অন্যতম প্রধান সমস্যা। প্রায় প্রতিদিনই বিশ্বের কোথাও না কোথাও সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটছে। তবে মধ্যপ্রাচ্যে ইরাকে মার্কিন হামলা এবং সিরিয়ায় রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধ চলার পর থেকে এর বিস্তৃতি বেড়েছে বহুলাংশে। মূলত ইসলামিক স্টেট বা আইএসের জঙ্গীগোষ্ঠী এর মূল হোতা। এর আগে ছিল তালেবান মুজাহিদীন। ইরাক-সিরিয়ার বিশাল ভূখ- দখলে নিয়ে আইএস ধর্মের নামে খিলাফত প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আইএসের হাতে আছে পেট্রোডলার, আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র ও সরঞ্জাম। জিহাদের নামে তারা সন্ত্রাস ছড়িয়ে দিতে চায় বিশ্বের সর্বত্র। প্রকৃতপক্ষে শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলামের সঙ্গে আইএসের বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই। সিরিয়ায় শান্তি আলোচনা সফল হওয়ার পর সঙ্গত কারণেই আশা করা গিয়েছিল যে, আইএসের অবস্থান দুর্বল হয়েছে। ব্রাসেলসে সন্ত্রাসী হামলা সেটা মিথ্যা প্রমাণ করল। অতঃপর আইএস দমনে পশ্চিমা বিশ্ব যে আরও মরিয়া হয়ে উঠবে তাতে সন্দেহ নেই। তবে কেবল হামলা চালিয়ে সন্ত্রাস দমন করা যাবে বলে মনে হয় না। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের শুভবুদ্ধির উদয়সহ পারস্পরিক আলাপ-আলোচনাই হবে একমাত্র পথ।
×