ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ইউপি নির্বাচনে সহিংসতা হয়েছে ব্যাপক ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৬:৫৯, ২৪ মার্চ ২০১৬

ইউপি নির্বাচনে সহিংসতা হয়েছে ব্যাপক ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রথম দফা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ব্যাপক সহিংসতা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টন ফটো জার্নালিস্ট এ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে ২০ দলীয় জোটের শরিক জাগপার অঙ্গ-সংগঠন যুব জাগপা আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, গোটা দেশের কোথাও আজ মানুষ শান্তিতে নেই। যেখানে নির্বাচন সেখানেই সহিংসতা, সেখানেই হত্যা। দেশে লুটতরাজ করার একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমাদের দেশে যেন বর্গিরা এসেছে, সবকিছু লুট করে নেয়ার জন্য। তিনি বলেন, উপজেলা, সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার মতো ইউপি নির্বাচনেও একই ঘটনা ঘটেছে। প্রথম দফা ইউপি নির্বাচনে সহিংসতায় ১২ জন নিহত ও পাঁচ শতাধিক আহত হয়েছেন। অনেক ভোটকেন্দ্র জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। নির্বাচনের এমন অরাজকতা আমরা চাই না। আমরা চাই সত্যিকারের গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। ফখরুল বলেন, রাস্তায় বেরুলে দেখা যায় পুলিশ আছে, আবার পুলিশের সামনেই পিটিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে। রাজনৈতিক নেতাদের থানায় নিয়ে গুলি করা হচ্ছে। তাতে মনে হয় না দেশে সরকার আছে। রাজনৈতিক কাঠামোর পরিবর্তন আনতে না পারলে এ অবস্থার পরির্বতন হবে না। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া মৌলিক পরিবর্তনের কথা বলেছেন। তিনি ‘ভিশন-২০৩০’-এর একটি রূপরেখা দিয়েছেন। আলোচনার পর তা চূড়ান্ত করা হবে। ফখরুল বলেন, রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামোগুলোকে এ সরকার একে একে ধ্বংস করে দিয়েছে। নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। পুরোপুরি ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান বলতে কোন কিছু আর অবশিষ্ট নেই। এ পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও কাঠামোর মধ্যে মৌলিক পরিবর্তন আনতে না পারলে আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে না। সুতরাং কাঠামো পরিবর্তনটাই এখন সবচেয়ে জরুরি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্র সম্পূর্ণ কবরে পাঠিয়ে দিয়ে একদলীয় শাসন জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। আমরা আগেই বলেছিলাম, পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে দেশকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দেয়া হলো। তিনি বলেন, শত প্রতিকূলতার মধ্যেও বিএনপি সুষ্ঠুভাবে কাউন্সিল সম্পন্ন করতে পেরেছে। এখন আমাদের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র তৈরিতে সংগ্রাম করতে হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, ব্যাংকিং ব্যবস্থায় লুটপাট-ডাকাতি এখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে এখন ডাকাতি শুরু হয়ে গেছে। জনতা ব্যাংক থেকে আবার টাকা লুট হয়েছে। এর সঙ্গে কারা জড়িত? ওই ব্যাংকের কর্মকর্তারাই তো। তাহলে বাংলাদেশের অর্থনীতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াচ্ছে? স্টক মার্কেট লুটতরাজ, হলমার্ক, বিসমিল্লাহ গ্রুপ সব মিলিয়ে ব্যাংকের টাকা হরিলুট হয়ে যাচ্ছে। গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে দেশবাসীর ওপর একদলীয় শাসন চাপিয়ে দেয়া হয়েছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে স্বৈরতন্ত্রের বাধা সরাতে জাতীয় ঐকমত্য সৃষ্টি করতে হবে। ২০ দলীয় জোট যে জাতীয় ঐক্য তৈরি করেছে তাতে জনগণকে আরও বেশি সম্পৃক্ত করে দাবি আদায়ে সচেষ্ট হতে হবে। দেশে একদলীয় স্বৈরতন্ত্রের যে বাধা সেটিকে সরাতে হবে। এজন্য জাতীয় ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। সে লক্ষ্যে আমরা ২০ দলীয় জোট করেছিলাম। প্রয়োজনে এটির পরিসর আরও বাড়াতে হবে। গণতন্ত্রে বিশ্বাসী অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে ২০ দলীয় জোটে সম্পৃক্ত হতে হবে। সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থার জন্য আমাদের সকলকে আন্দোলন-সংগ্রাম করতে হবে। যুব জাগপার সভাপতি সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেনÑ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গাণি প্রমুখ। মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে রাজপথে নামতে হবেÑ গয়েশ্বর ॥ পরবর্তী আন্দোলনে সফলতা অর্জন করতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে রাজপথে নামতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। বুধবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে ভাসানী মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, আন্দোলন আরেকবার ব্যর্থ হলে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা আমাদের আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে।
×