ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

জার্মানি, হল্যান্ড ও ফ্রান্স সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা

তিন দফা হামলায় কাঁপল ব্রাসেলস, নিহত ৩০

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ২৩ মার্চ ২০১৬

তিন দফা হামলায় কাঁপল ব্রাসেলস, নিহত ৩০

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ তিন দফা সমন্বিত সন্ত্রাসী হামলায় কাঁপল বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টার দিকে শহরটির প্রধান জাভেনতেম বিমানবন্দরে পর পর দুই দফা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে একটিকে আত্মঘাতী হামলা বলে মনে করা হচ্ছে। এর ঠিক এক ঘণ্টা পর ব্রাসেলসের ইউরোপীয় ইউনিয়ন সদর দফতরের কাছের মালবেক পাতাল রেল স্টেশনে তৃতীয় দফা হামলা হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এসব হামলায় অন্তত ৩০ জন নিহত ও শতাধিক লোক আহত হয়েছে। তবে আহতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ। মঙ্গলবারের এই সন্ত্রাসী হামলাকে বেদনাবহ ও কালো দিন বলে আখ্যা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী চার্লস মিশেল। এই হামলার পর বেলজিয়ামের প্রতিবেশী দেশ জার্মানি নেদারল্যান্ডস ও ফ্রান্স সীমান্তে নেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতা। ব্রিটেনেও সতর্কতা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। খবর বিবিসি, এএফপি, ডেইলি মেইল ও আলজাজিরা অনলাইনের। ব্রাসেলসের এই হামলাকে পুরো ইউরোপের ওপর আঘাত বলে জানিয়েছেন ফরাসী প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদ। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে বিবৃতি দিয়েছেন বিশ্ব নেতারা। এসব হামলাকারীদের একজনকে আরবীতে কথা বলতে শুনেছে এক প্রত্যক্ষদর্শী। এই হামলার পর পুরো বেলজিয়াম ও পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রগুলোতে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দেশজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত ১ হাজার ৬শ’ পুলিশ। গত নবেম্বরে প্যারিস হামলার মূল সন্দেহভাজন সালাহ আবদেসালামকে আটকের চার দিনের মাথায় এই সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটল। মঙ্গলবারের হামলার পর পরই জাভেনতেম বিমানবন্দর থেকে সবাইকে সরিয়ে নিয়ে ফ্লাইট ওঠানামাও বন্ধ করে দেয়া হয়। পাশাপাশি সব পাতাল রেলের সিডিউলও আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। বেলজিয়ামের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জান জামবোন বলেছেন, দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলার সতর্কতা সর্বোচ্চ মান চারে উন্নীত করা হয়েছে। সন্ত্রাসীদের কাছে হার মানা হবে না বলে জানিয়েছেন তিনি। বিস্ফোরণের ঘটনার পর পরই পার্শ্ববর্তী ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস ও ব্রিটেনের বিমানবন্দরগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আর ইইউর কর্মীদের আপাতত সদর দফতরের ভেতরে থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সকাল ৮টার দিকে একটি এয়ারলাইন্সের চেক-ইন ডেস্কের কাছে ওই জোড়া বিস্ফোরণ হয়। এ সময় একজনের মুখে আরবী ভাষায় কথা বলতে শোনা যায়। এরপর আতঙ্কিত লোকজন ছোটাছুটি শুরু করে। প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক এ্যালেক্স রোজি বলেন, ভবনটি নড়ছিল আমি টের পাচ্ছিলাম। প্রচুর ধুলা আর ধোঁয়া ছিল। যেদিক থেকে বিস্ফোরণের শব্দ এসেছে আমি সেদিকে এগিয়ে গিয়ে আতঙ্কিত লোকজনকে ছুটে বের হতে দেখেছি। ব্রিটেন সন্ত্রাসবাদবিরোধী পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, সতর্কতা হিসেবে বিভিন্ন এলাকায় টহল বাড়ানো হয়েছে। ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্টের ডোনাল্ড টাস্ক বলেছেন, সন্ত্রাসীরা আবারও তাদের ঘৃণা আর সহিংসতা দেখিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মোঘেরিনি বলেছেন, ইউরোপের জন্য আজ অত্যন্ত দুঃখের একটি দিন। এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমের পুতিন, ফরাসী প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদ, সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী স্টিফান লোভেন, স্পেনিশ প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাজো, ইতালির প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও রেনজিসহ অন্যরা। ফরাসী প্রেসিডেন্ট ওঁলাদ বলেছেন, মঙ্গলবারের এই হামলা শুধু বেলজিয়াম নয় পুরো ইউরোপের ওপর করা হয়েছে। আর এসব হামলা রোধে আরও কার্যকরী পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে মত দেন তিনি। রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন বলেছেন, এটি একটি বর্বর হামলা। আমি বেলজিয়ামের জনগণের প্রতি সমবেদনা জানাই।
×