ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বকেয়াসহ ৮ম পে স্কেল দাবি শিক্ষক কর্মচারীদের

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ২৩ মার্চ ২০১৬

বকেয়াসহ ৮ম পে স্কেল দাবি শিক্ষক কর্মচারীদের

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীদের মার্চ মাস থেকে বকেয়া বেতনসহ ৮ম পে স্কেল কার্যকরের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লা চত্বরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে শিক্ষক নেতারা এ দাবি জানান। দাবি মেনে নেয়া না হলে বৃহত্তর কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে বলেও সতর্ক করে দেন নেতৃবৃন্দ। কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে এমিপওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ লকিয়তউল্লাহ। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ক বাকবিশিস কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর। বক্তারা বলেন, সকল সরকারী কর্মচারী-কর্মকর্তা গত ডিসেম্বর থেকে ৮ম পে স্কেলে বেতন প্রদান করা হয়। বক্তারা বলেন, দেশের প্রায় ২৬ হাজার বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঁচ লাখ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী ১৯৯৭, ২০০৫ ও ২০০৯ সালের ৫ম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম বেতন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন হওয়ার দিন থেকেই সরকারী কর্মকর্তা- কর্মচারীদের সঙ্গে একই দিনে একযোগে বেতন স্কেল পেয়ে আসছেন। এমনকি ২০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতাও এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরাও পেয়ে আসছেন। কিন্তু ৮ম বেতন স্কেল কার্যকরের ক্ষেত্রে এ বৈষম্য বাংলাদেশ সংবিধানের মৌলিক অধিকার এবং মানবাধিকার পরিপন্থী। শিক্ষক নেতারা আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটে শিক্ষক এবং শিক্ষার গুরুত্ব উপলব্ধি করে ২০ ডিসেম্বর ২০১৫ এর প্রজ্ঞাপন মতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয় সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে চলতি মার্চ মাস থেকে বকেয়াসহ ৮ম স্কেলে বেতন-ভাতা প্রদান করার জোর দাবি জানান। অন্যথায় পাঁচ লাখ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষণা করতে বাধ্য হবে। এছাড়া সভা থেকে বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারীদের সরকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের সমপরিমাণ বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি, বাড়ি ভাড়া, পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, মেডিক্যাল ভাতা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অনুরূপ চাকরির বয়সসীমা ৬৫ বছর উন্নীতকরণ, প্রস্তাবিত জনবল কাঠামো ২০১৫ যথাযথভাবে দ্রুত বাস্তবায়নসহ ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের জোর দাবি জানানো হয়। শিক্ষক নেতৃবৃন্দ অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য প্রণীত আইন অনুযায়ী সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুত প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা প্রদানের জোর দাবি জানান। মানববন্ধন ও সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জামালখান প্রেসক্লাব চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরবর্তী কর্মসূচী বাংলাদেশ শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক আগামী ২ এপ্রিলের মধ্যে ঘোষণা করা হবে। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাকবিশিস বিভাগীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক উত্তম চৌধুরী, বাশিস আঞ্চলিক কমিটির যুগ্ম সম্পাদক অঞ্চল চৌধুরী, মহানগর সম্পাদক প্রদীপ কানুনগো, অধ্যাপক কানাই দাশ, বাকবিশিস জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ রফিক উদ্দিন, বাকবিশিস বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আবুল মনসুর হাবিব, বাশিস নেতা নুরুল হক ছিদ্দিকী, আবদুর রহিম, বাকবিশিস জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তড়িৎ কুমার ভট্টাচার্য, মহানগর সভাপতি অধ্যাপক নোমান আহমাদ ছিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অজিত দাশ প্রমুখ। মানিকগঞ্জে বিক্ষোভ নিজস্ব সংবাদদাতা, মানিকগঞ্জ থেকে জানান, বাংলাদেশ কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে ৮ম জাতীয় বেতন স্কেলের অর্থছাড় ও কল্যাণ এবং অবসর তহবিলের সংকট নিরসনের দাবিতে মঙ্গলবার বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। অবিলম্বে এই দাবি না মানলে আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষা বর্জনের হুমকি দেন শিক্ষক নেতারা। দুপুরে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাব চত্বর থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষকরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মীর মোকসেদুল আলমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ নান্নু, অধ্যাপক আশুতোষ রায়, প্রভাষক বলরাম চক্রবর্তী, অধ্যাপক আব্দুল মতিন, অধ্যাপক স্বপন কুমার ম-ল, অধ্যাপক আব্দুল মতিন বিশ্বাস, প্রভাষক বাসুদেব সাহা প্রমুখ।
×