ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রাজশাহী কলেজ

বেপরোয়া ছাত্রলীগের ভয়ে ছাত্রাবাস ছাড়ছে শিক্ষার্থী

প্রকাশিত: ০৪:০১, ২৩ মার্চ ২০১৬

বেপরোয়া ছাত্রলীগের ভয়ে ছাত্রাবাস ছাড়ছে শিক্ষার্থী

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহী কলেজে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ছাত্রলীগের কতিপয় নেতা। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাধারণ ছাত্রদের নির্যাতন ও মারধরের ঘটনা প্রায় ঘটছে। এতে বিব্রত কলেজ প্রশাসনও। এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে একটি ডাইনিং। নাইম হোসেন নামের এক ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে ও কতিপয় নেতার আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে ছাত্রাবাসটির প্রধানসহ তিন তত্ত্বাবধায়কই ইতোমধ্যে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। যদিও কলেজ অধ্যক্ষ এখনও তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি। তবে ছাত্রলীগের কতিপয় নেতা বিশৃঙ্খল পরিবেশের কারণে আতঙ্কে আবাসিক ছাত্ররা ছাত্রাবাস ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। ছাত্র কমে যাওয়ায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে একটি ডাইনিং। কলেজ ও ছাত্রাবাস সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার রাতে কলেজের মুসলিম ছাত্রাবাসের নিউ ব্লকের একটি কক্ষে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় মামুনুর রশিদ নামের এক ছাত্রকে রড দিয়ে পিটিয়ে ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়। ছাত্রলীগের দাবি, শিবিরের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়েছে। কিন্তু সাধারণ ছাত্ররা বলেছেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সাধারণ ছাত্রদের জোর করে মিছিলে নিয়ে যান। মিছিলে না গেলে তাদের নির্যাতন করা হয়। প্রায়দিনই এমন ঘটনায় বিব্রত কলেজের অধ্যক্ষ নিজেও। তাদের সামলাতে কলেজ প্রশাসনকেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। কলেজের অধ্যক্ষ হবিবুর রহমান বলেন, ছাত্রলীগের কতিপয় নেতা একজন সাধারণ ছাত্রকে পিটিয়েছে। সে ভুল হামলার শিকার হয়েছে। ওদের লক্ষ্য ছিল তার পাশের শিবিরের সঙ্গে যুক্ত কোন ছাত্র। এদিকে ছাত্রাবাসের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ার দায় স্বীকার করে ঘটনার পরদিন প্রধান তত্ত্বাবধায়ক ইলিয়াস উদ্দিন এবং দুই তত্ত্বাবধায়ক আনিসুজ্জামান ও আবদুর রাজ্জাক অধ্যক্ষের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। এ বিষয়ে অধ্যক্ষ হবিবুর রহমান বলেন, ছাত্রাবাসের পরিবেশ ঠিক রাখতে না পারার জন্য তিনি তত্ত্বাবধায়কদের একটু বকেছিলেন। এজন্য তারা নিজেদের ব্যর্থতা স্বীকার করে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তবে মঙ্গলবার পর্যন্ত তিনি তা গ্রহণ করেননি। ঐতিহ্যবাহী এ কলেজের মুসলিম ছাত্রাবাসের নিউ ব্লকে গিয়ে দেখা যায়, ডাইনিংয়ের চেয়ার ও টেবিল উপুড় করে রাখা। ব্লকের ৬৯ জন ছাত্রের মধ্যে মাত্র কয়েকজন ছাত্রাবাসে উপস্থিত। এক ছাত্র বলেন, ভয়ে ছেলেরা চলে গেছে। ডাইনিংও বন্ধ হয়ে গেছে। তারা পাশের ব্লকের ডাইনিংয়ে খাচ্ছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক ছাত্র বলেন, ছাত্রদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। কে কখন হামলার শিকার হন সেই ভয়ে তারা চলে যাচ্ছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তারা ফিরে আসবেন। প্রসঙ্গত, এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি মিছিলে না যাওয়ায় এক ছাত্রের মাথা ফাটিয়ে দেয়া হয়। গত ৪ মার্চ ইসলামের ইতিহাস বিভাগের মাস্টার্স শেষপর্বের শিক্ষার্থী আব্দুল কাদিরকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। জয়পুরহাটে শিক্ষার মান উন্নয়নে সভা নিজস্ব সংবাদদাতা, জয়পুরহাট, ২২ মার্চ ॥ জেলার শিক্ষার মান উন্নয়নে জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের নিয়ে এক মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার জয়পুরহাট সার্কিট হাউসে এই সভায় শিক্ষার উন্নয়ন বিষয়ক আলোচনার সুত্রপাত করেন সংসদ সদস্য আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। খোলামেলা আলোচনায় বিভিন্ন বক্তা জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়ার মান ক্ষুন্ন হওয়ার প্রধান কারন হিসাবে চিহ্নিত করেন ক্লাসের বাহিরে কোচিং সেন্টারে পড়াশোনা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির তদারকির অভাবসহ সরকারী নীতিমালা না মেনে চলার বিষয়কে তুলে ধরেন। এসব সমস্যা সমাধানকল্পে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মান উন্নয়নে শিক্ষার জন্য কয়েকটি সুপারিশ করা হয়। আগামী মাসে এসব বিষয় নিয়ে আরো আলোচনার জন্য প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতিদের নিয়ে বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়। সার্কিট হাউসের এই সভায় জেলা প্রশাসক আব্দুর রহিমের সভাপতিত্বে খোলামেলা আলোচনায় অংশ নেয় পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম, পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর উদ্দিন আর ফারুক, আক্কেলপুর পৌরসভার মেয়র অবসর চৌধুরী।
×