ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ইউপি নির্বাচন

সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ না করতে তৃণমূল নেতাদেও নির্দেশ আ’লীগের

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২২ মার্চ ২০১৬

সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ না করতে তৃণমূল নেতাদেও নির্দেশ আ’লীগের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে সরকারের ভাবমূর্তি কোনভাবেই যাতে ক্ষুণœ না হয় সেজন্য তৃণমূল নেতাদের নির্দেশ দিয়েছে আওয়ামী লীগ। প্রথম ধাপের আজ মঙ্গলবার ৭২১ ইউপিতে সব ক’টিতেই যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হয় সেদিকে খেয়াল রাখার জন্য সব জেলা ও উপজেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কেন্দ্র থেকে এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তৃতীয় পক্ষ নির্বাচনকে ঘিরে কোন ধরনের অঘটন ঘটিয়ে সরকারের ওপর দায় চাপাতে না পারে সেদিক লক্ষ্য রাখার জন্যও বলা হয়েছে। তৃণমূল নেতাদের সতর্ক করে বলা হয়েছে, ইউপি নির্বাচনে কোথাও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয় এমন কোন ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জবাবদিহি করতে হবে। সোমবার সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতাদের দীর্ঘ বৈঠক থেকে তৃণমূল নেতাদের এমন নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডাঃ দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ। বৈঠক সূত্র জানা যায়, বৈঠক সিদ্ধান্ত হয় আজ সকাল থেকেই নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত ধানম-ির কার্যালয়ে অবস্থান করে কেন্দ্রীয় নেতারা সারাদেশের ইউপি নির্বাচন মনিটরিং করবেন। এছাড়া আজ অনুষ্ঠেয় ৭২১টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তৃণমূলের সর্বশেষ অবস্থার খোঁজখবর নেয়া হয়। বৈঠক থেকেই প্রায় ৩০টি জেলা ও উপজেলার নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। সবাইকেই নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয় সেই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কোন নেতাই যাতে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করে সে ব্যাপারেও কঠোর হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। দুই সপ্তাহ আগে প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী দুই শতাধিক প্রার্থীকে আওয়ামী লীগ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। ওই সময়ই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে চূড়ান্ত বহিষ্কারের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। কিন্তু রবিবার অনুষ্ঠেয় কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে বিদ্রোহী প্রার্থিতা নিয়ে কোনই আলোচনা হয়নি। এ ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের ভাষ্য হচ্ছে, তৃণমূলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির আশঙ্কায় বিদ্রোহীদের ব্যাপারে সাংগঠনিক সর্বোচ্চ শাস্তি গ্রহণ করা হচ্ছে না। এ কারণে কেন্দ্র সাময়িক বহিষ্কারের ঘোষণা দিলেও এখনও পর্যন্ত কারও কাছে এ ব্যাপারে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হয়নি। দলের সর্বশেষ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভাও কোন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি। জানা গেছে, যে দুই শতাধিক ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন, সেখানে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে আওয়ামী লীগ। বুঝিয়ে বসিয়ে দেয়ার চেষ্টা, সাময়িক বহিষ্কার এবং স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের হুমকি কোন কিছুই মাঠ থেকে বিদ্রোহীদের বসিয়ে দিতে পারল না আওয়ামী লীগ। ফলে আজকের নির্বাচনে অনেক স্থানেই সংঘাত-সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
×