ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এম হোসাইন

সময়ের সতেজতা

প্রকাশিত: ০৬:৫৩, ২১ মার্চ ২০১৬

সময়ের সতেজতা

প্রকৃতির যখন এই অবস্থা তখন আমাদের আর কী করার, সে সেজেছে তার নিজের রঙে। সূর্যের তাপ ও গরমকে ফাঁকি দিতে বেছে নিন আরামদায়ক পোশাক ও খাবারের পরিবর্তন। এই সময় সূর্যের তাপকে অসহনীয় মনে হয়। প্রচুর ঘাম ঝরে। তাছাড়া জীবনযাপনের তাগিদে আমাদের তো ঘরে বসে থাকা চলে না। সেজন্য আমাদের আরামদায়ক পোশাক ও শক্তিযুক্ত খাবার খেতে হবে। এদিকে যত মনোযোগ দেয়া যায় ততই ভাল। যেসব খাবারে মনোযোগ দেয়া উচিত এই সময় আমাদের যথেষ্ট পরিমাণ পানি পান করতে হবে। দিনে অন্তত ৬-৮ গ্লাস পানি পান করতে হবে। শরীরের জন্য এই সময়ে ফল ও সবজির বিকল্প নেই। লাল, হলুদ, সবুজ ও বিভিন্ন রংয়ের ফল খেতে পারেন। প্রতিদিন কমপক্ষে ২-৩টি ফল খেতে পারেন। যেসব ফলের প্রতি বেশি নজর রাখবেন তা হলোÑ আম, আনারস, পেঁপে, তরমুজ, আঙ্গুর, বেদানা, স্ট্রবেরি, ইত্যাদি। পাশাপাশি যে সকল সবজির দিকে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে সেগুলো হলোÑ বেগুন, গাজর, পালংশাক, মিষ্টি কুমড়া, পুঁইশাক ও টমোটো। এগুলো আপনাকে সতেজ রাখতে সাহায্য করবে। ফল ও সবজি আপনার রোগ প্রতিরোধে দ্রুত কাজ করে। প্রোটিন, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন-ই সমৃদ্ধ খাবার অত্যন্ত উপকারী। বীজসমৃদ্ধ খাবার যেমনÑ শসা, কুমড়া, বাদাম ও খেজুর বেশি উপকারী। বীজসমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে সুস্থ থাকার প্রায় সব ধরনের উপাদানই আছে। হাইব্ল্যাডপ্রেসার, ক্যান্সার, কোলেস্টেরল ও হার্টের মতো অসুখ প্রতিরোধে এ ধরনের খাবার অনেক বেশি উপকারী। যে সকল পোশাক পরিধান করা যেতে পারে এই তীব্র গরমে পাতলা পোশাকের কোন বিকল্প নেই। পাতলা কাপড় দিয়ে তৈরী পোশাকের মধ্যেÑ শার্ট, টি-শার্ট, ফতুয়া, কামিজসহ যে কোন পোশাকই পরা যায়। প্রতিদিন ব্যবহারের জন্য সুতিকাপড়ের তৈরি পোশাক খুবই আরামদায়ক। লিলেন, ভয়েল, তাঁতের কাপড়, মসলিন কাপড়ও পরতে পারেন। তবে গরমে সাদা রংয়ের পোশাক পরিধান করাই অত্যন্ত উত্তম। কড়া রংয়ে সূর্যের তাপ খুব বেশি লাগে বলে গরম বেশি অনুভব হয়। সেজন্য কালো বা গাঢ় রংয়ের পোশাক একেবারে নয়। হালকা গোলাপী, জলপাই সবুজ, শ্যাওলা সবুজ, হালকা নীল, হালকা হলুদÑ এসব রংয়ের হালকা শেডযুক্ত কাপড় গরমে খুবই উপযোগী। এই গরমে দিনের আলোতে কালো রংয়ের পোশাক এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। কারণ কালো তাপ বেশি শোষণ করে তাই গরম বেশি অনুভূত হয়। বেশি উজ্জ্বল রংয়ের পোশাকে তাপ লাগে বেশি। এই তীব্র গরমে অনেকের মোজা অনেক বেশি ঘেমে যায়। সেজন্য সুতির মোজা ব্যবহার করাই উত্তম। আর মোজা ব্যবহারের পূর্বে ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে করে পা কম ঘামবে, অন্যদিকে পায়ের দুর্গন্ধ কম হবে। যেহেতু গরমে শরীর বেশি ঘামে তাই শরীরে বডি-স্প্রে বা পারফিউম ব্যবহার করা যেতে পারে। যেসব খাবার থেকে সতর্ক থাকবেন রাস্তার খোলা খাবার, তৈলাক্ত খাবার, অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার, রিচফুড, ফাস্টফুড ও খোলা পানীয় এড়িয়ে চলুন। এ সকল খাবারে পেটের বিভিন্ন অসুখ ও হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে। এই গরমে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসজনিত বিভিন্ন রকমের রোগ হয়ে থাকে। খাবার ও পানিবাহিত রোগ যেমনÑ জন্ডিস, টাইপয়েড এ সময়ে বেশি হয়। প্যাকেটজাত খাবার এড়িয়ে চলুন। পোড়া তেলে ভাজা ও মিষ্টিজাতীয় খাবার না খাওয়াই ভাল। অতিরিক্ত চা-কফি খাবেন না। এছাড়াও এ্যালকোহলজাতীয় পানীয়, এনার্জি ড্রিংকস্ এড়িয়ে চলুন। কারণ এ ধরনের পানীয় মানুষের কিডনি ড্যামেজসহ হার্টকে দুর্বল করে দেয়। তবে ননীযুক্ত পানীয় পান যেমনÑ লাবাং ও মাঠাজাতীয় পানীয় পান করাই উত্তম। এমন খাবার বেছে নিন যাতে পুষ্টিগুণ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অক্ষুণœ থাকে। ছবি : সৈয়দ রাসেল মডেল : প্রীতি ও সানজিদা তন্ময়
×