ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মামলা করায় হুমকি

রামুতে বিয়ের ফাঁদে ফেলে শিশু ধর্ষণ ॥ পরে ভ্রাণ হত্যা

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ২০ মার্চ ২০১৬

রামুতে বিয়ের ফাঁদে ফেলে শিশু ধর্ষণ ॥ পরে ভ্রাণ হত্যা

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ রামু ইউনিয়নের মাঝিরকাটা দীপপাড়া গ্রামে কলেমা পড়ে বিয়ে করেছে মর্মে বিশ্বাস জন্মানোর পর এক শিশুর সঙ্গে যৌনসহবাস ও অবৈধ গর্ভপাতের পর ৬ মাসের ভ্রাণ মাটিচাপা দেয়া হয়েছে। লম্পট আলী আকবরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে অসহায় হয়ে পড়েছে শিশুটির পরিবার। মামলা তুলে না নিলে ধর্ষণের শিকার শিশু ও তার মাকে উল্টো মামলায় জড়ানোর হুমকি দিচ্ছে ধর্ষক। গত ১ মার্চ ওই শিশু (১২) বাদী হয়ে রামু থানায় মামলা দায়ের করেছে। অভিযোগ করা হয়, ২০১৫ সালের ২৭ আগস্ট তার বাড়িতে বিয়ের বিষয়টি এলাকায় প্রকাশ হলে তোলপাড় ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। মামলায় আসামি করা হয়েছে আলী আকবর ও তার ভাই মোহাম্মদ হানিফকে। শিশুটির অসহায় মা জানিয়েছেন, মামলার আসামি ও তাদের স্বজনরা ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে বিভিন্ন মহলে তদ্বির করছে। এ নিয়ে বর্তমানে তারা নানা শঙ্কার মধ্যে রয়েছে। ধর্ষিতা বলে, দীর্ঘদিন মায়ের অনুপস্থিতির সুযোগে আলী মামা আমাকে বিয়ে করবে বলে প্রথমে অবৈধ কাজ করতে চায়। আমি বাধা দিলে কলেমা পড়ে আমাকে বিয়ে করেছে বলে জোর করে অবৈধ কাজ করে বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য বলে। আমিও লোক লজ্জার ভয়ে এ কথা কাউকে বলিনি। গর্ভবতী হওয়ার বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার পর কক্সবাজার কাজী অফিসে নিয়ে আলী মামার সঙ্গে বিয়ে করাবে বলে চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি তার বড় ভাই হানিফ আমাকে বাড়ি থেকে বের করে নাইক্ষ্যংছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রামু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ডাঃ রেশমা ইনজেকশন পুশ করে আমাকে অজ্ঞান করেন। জ্ঞান ফেরার পর তিনি আমাকে আরও একটি ইনজেকশন পুশ করেন। শেষে কয়েকটি ট্যাবলেট দেন। যেগুলো না খেলে আমি মারা যাব বলে ভয় দেখালে দুটি ট্যাবলেট খেয়েছিলাম। ওই রাতে তীব্র ব্যথা ওঠে। রাত ১টায় গর্ভপাত হয়। ৬ মাসের মৃত শিশুটিকে তারা মাটি চাপা দেয়। এ ঘটনায় জেলা নারী-শিশু পাচার ও নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি এইচএম এরশাদ ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বিবৃতিতে অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। রামু থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর জানান, এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে। এ ধরনের পৈশাচিক ঘটনা মেনে নেয়া যায় না। অপরাধীদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।
×