ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সার্কের ১৯তম শীর্ষ সম্মেলন ৯-১০ নবেম্বর ইসলামাবাদে

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ১৯ মার্চ ২০১৬

সার্কের ১৯তম শীর্ষ সম্মেলন ৯-১০ নবেম্বর ইসলামাবাদে

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা-সার্কের ১৯তম শীর্ষ সম্মেলন আগামী ৯-১০ নবেম্বর পাকিস্তানের ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত হবে। নেপালের পোখারায় অনুষ্ঠিত সার্ক দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে সম্মেলনের তারিখ চূড়ান্ত হয়। সার্ক পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের সম্মেলনে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমনে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে একযোগে কাজ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। নেপালের পোখরায় দুই দিনব্যাপী সার্ক পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন শুক্রবার শেষ হয়েছে। সম্মেলনে আগামী ৯-১০ নবেম্বর সার্ক শীর্ষ সম্মেলন পাকিস্তানে অনুষ্ঠানের জন্য তারিখ চূড়ান্ত করা হয়। পাকিস্তানের পরে শ্রীলঙ্কায় ২০তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলন শেষে শুক্রবার বিকেলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ঢাকায় ফিরেছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী। তিনি সার্ক দেশগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে আন্তঃদেশীয় সংযোগ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, জ্বালানি, কৃষি, জঙ্গী-সন্ত্রাসবাদ ও সমুদ্র অর্থনীতিসহ অন্যান্য সব ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন। তিনি সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমনে দক্ষিণ এশিয়া দেশগুলোকে একযোগে কাজ করার জন্য বিশেষ আহ্বান জানান। এছাড়া আগামীতে প্রতি দুই বছর পর পর নবেম্বর মাসে সার্কের শীর্ষ সম্মেলন করার জন্য মন্ত্রীদের কাউন্সিল থেকে সুপারিশ করা হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের আগে সার্ক স্থায়ী কমিটির ৪২তম বৈঠক এবং সার্ক প্রোগ্রামিং কমিটির ৫২তম বৈঠক হয়। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে পররাষ্ট্রসচিব এম শহীদুল হক বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। এতে বাংলাদেশ আগামী ৪ থেকে ৭ এপ্রিলে সার্ক কৃষি মন্ত্রীদের তৃতীয় বৈঠক এবং চলতি বছরের শেষ দিকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রীদের তৃতীয় বৈঠক আয়োজনের ঘোষণা দেয়। সার্ক সংস্কৃতি মন্ত্রীদের বৈঠক এবং চলতি বছরের অক্টোবরে সার্ক কালচারাল ক্যাপিটাল প্রোগ্রামের উদ্বোধনী পর্ব রাখারও ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ। এছাড়া আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে দারিদ্র্য দূরীকরণের ওপর সার্ক মন্ত্রীদের পঞ্চম বৈঠকের আয়োজনও করবে ঢাকা। পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের কাউন্সিলে ভারতের নয়াদিল্লীতে সার্ক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (এসডিএমসি) প্রতিষ্ঠা এবং পাকিস্তানের ইসলামাবাদে থাকা পরিবেশ কেন্দ্রটি সেটির একীভূত করার সুপারিশ করা হয়। সম্মেলনের ফাকে নেপালে থাকা পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী সফরে ভারত, নেপাল, ভুটান, আফগানিস্তান ও পাকিস্তনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন। এর আগে গত বছরের নবেম্বরে নেপালের কাঠমান্ডুতে ১৮তম সার্ক সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অংশ নিয়ে ইসলামাবাদে পরবর্তী সার্ক শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের ঘোষণা দেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ। বর্তমানে তিনি সার্কের চেয়ারের দায়িত্ব পালন করছেন। পাকিস্তানের পর শ্রীলঙ্কার হাতে যাবে সার্ক চেয়ারের দায়িত্ব। নেপালের পোখরায় বৃহস্পতিবার সকালে সার্ক পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের সম্মেলন উদ্বোধন করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি। এ সময় সার্কের মহাসচিব অর্জুন বাহাদুর থাপা সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বন্ধন আরও জোরালো করার জন্য আহ্বান জানান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা সরতাজ আজিজ, নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল থাপা, মালদ্বীপের পররাষ্ট্র মন্ত্রী দোনেয়া মাওমুন, শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাঞ্জালা সামারাওরা, ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দামাজো দর্জি ও আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিকমাহ খালিদ কারাজী উপস্থিত ছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ার সাত দেশ বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সহযোগিতার ফোরাম সার্ক ১৯৮৫ সালে যাত্রা শুরু করে। পরে আফগানিস্তান এই সংস্থার সদস্যপদ পায়।
×