ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রুশ নৌসেনায় ডলফিন!

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ১৮ মার্চ ২০১৬

রুশ নৌসেনায় ডলফিন!

নিজেদের নৌসেনায় ডলফিন নিয়োগ করছে রাশিয়া। অন্তত ৫টি ডলফিনকে নিয়োগ করা হচ্ছে। উপযুক্ত দৈর্ঘ্য এবং মজবুত দাঁত সম্পন্ন পাঁচটি ডলফিন কেনার জন্য বিজ্ঞাপনও দিয়েছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়। ঠিক কী কাজের জন্য ডলফিন নিয়োগ করা হচ্ছে, তা অবশ্য স্পষ্ট জানা যায়নি। কিন্তু রাশিয়ার এই নতুন নিয়োগ ঠা-াযুদ্ধের সময়ের স্মৃতি উস্কে দিয়েছে। সেই সময় ডলফিন বাহিনীকে গুপ্তচর এবং ঘাতক হিসেবে ব্যবহার করত রুশ নৌসেনারা। পাঁচটি ডলফিনের জন্য ২৪ হাজার ডলার খরচ করতে রাজি রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়। যে বিজ্ঞাপন তারা দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, তিনটি পুরুষ এবং দুটি স্ত্রী ডলফিন চাই। তাদের দাঁত মজবুত হতে হবে। প্রত্যেকটির দৈর্ঘ্য অন্তত আট ফুট হতে হবে। নৌসেনার জন্য ঠিক কী ধরনের কাজ ডলফিনগুলো করবে, তা জানা যায়নি। কেন মজবুত দাঁতের কথা বিশেষ করে উল্লেখ করা হয়েছে বিজ্ঞাপনে, তাও স্পষ্ট নয়। অবিভক্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে আমেরিকার ঠা-াযুদ্ধের সময়ও ডলফিন বাহিনী তৈরি করেছিল মস্কো। সেই ডলফিন বাহিনীকে রাখা হতো ক্রিমিয়ার উপকূলে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়ার পরে ইউক্রেন যখন স্বাধীন রাষ্ট্র হয়, তখন ক্রিমিয়ায় মোতায়েন ডলফিন বাহিনী তাদের দখলে চলে যায়। রাশিয়া পরে ফের ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দখল করে এবং ডলফিনগুলোকে নিজেদের নৌসেনার দখলে নিয়ে নেয়। কিন্তু সেই ডলফিনগুলোর বয়স বেড়ে যাওয়ার নৌসেনা থেকে ডলফিনগুলোকে অবসর দেয়া হয়েছিল। ঠা-াযুদ্ধের সময় সোভিয়েত নৌসেনার প্রশিক্ষিত ডলফিনগুলো আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠেছিল আমেরিকার জন্য। প্রাথমিকভাবে গুপ্তচর হিসেবে কাজ করত সেই ডলফিন বাহিনী। শত্রুপক্ষের সাবমেরিন কখন কোথায় লুকিয়ে হানা দিচ্ছে, খবর এনে দিত ডলফিনরা। রুশ সাবমেরিন এবং বিপক্ষের সাবমেরিনের ইঞ্জিনের আওয়াজে ফারাক ছিল। সেই ফারাক চিনিয়ে দেয়া হতো ডলফিনগুলোকে। মার্কিন সাবমেরিন রুশ জলসীমার আশপাশে এলেই ডলফিন সে খবর পৌঁছে দিত নৌসেনা ঘাঁটিতে। শুধু গুপ্তচর নয়, ঘাতক হিসেবেও ব্যবহার করা হতো তাদের। ডলফিনের শরীরে হারপুন বেঁধে দেয়া হতো। প্রতিপক্ষের ডুবুরি গুপ্তচরবৃত্তি করতে এলে ডলফিন হারপুনে গেঁথে ফেলত তাকে। বিপক্ষের সাবমেরিন বা যুদ্ধজাহাজে বিস্ফোরক লাগিয়ে দেয়ার প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছিল ডলফিন বাহিনীকে। কখনো কখনো সোভিয়েত নৌসেনা উদ্ধার কাজ চালানোর ব্যাপারেও ডলফিন ব্যবহার করত। উপকূল থেকে অনেক দূরে গিয়েও তারা কাজ করত। সোভিয়েত রাশিয়া হেলিকপ্টার থেকে প্যারাসুটে চড়ে জলে নামার প্রশিক্ষণও দিয়েছিল তাদের ডলফিন বাহিনীকে। রুশ নৌসেনা আবার নতুন করে ডলফিন নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করায়, আমেরিকার চিন্তা বেড়েছে। ঠিক কী ধরনের কাজে এই ডলফিনদের ব্যবহার করতে চলেছে রাশিয়া। গুপ্তচর হিসেবে, নাকি আরও ধ্বংসাত্মক কোন উদ্দেশ্যে? জানার চেষ্টা করছে পেন্টাগন। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×