ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আবাহনী-ব্রাদার্সের দলবদল মিশন

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ১৮ মার্চ ২০১৬

আবাহনী-ব্রাদার্সের দলবদল মিশন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সামনেই নতুন মৌসুম। গড়তে হবে দল। এই লক্ষ্যে ব্রিটিশ ফুটবলার নিজেদের তাঁবুতে ভেড়াচ্ছে ঢাকা আবাহনী। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের চারবারের শিরোপাধারীদের হয়ে খেলতে ইতোমধ্যেই এসেছেন লি টাক ও বাস সাভাজ। এদের উভয়েই খেলেছেন থাই লীগে। জাতীয় দলের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে আবাহনীর জার্সি গায়ে দেখা গেছে সাভাজকে। ২০০২ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি খেলেছেন রিডিং, ব্রিস্টল সিটি, ব্রাইটনের মতো ক্লাবে। ২০১২ শেষদিকে যোগ দেন থাইল্যান্ডের ক্লাব টিওটিতে। তবে এবার নতুন মিশনে ঢাকায় এই ৩৪ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। টটেনহ্যামে খেলা রোহান রিকেটসও আসছেন। ইতোমধ্যেই এসেছেন নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড ফরচুন উডো ও সিয়েরা লিওনের মিডফিল্ডার আলি হাসান বানগুরা। তারা দুজনেই ট্রায়াল দেবেন। এরপর তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ক্লাব। আলি হাসান বানগুরা ইংল্যান্ডে ওয়াটফোর্ড, ব্ল্যাকপুল ও কভেন্ট্রি সিটিতে খেলেছেন। ফরচুন নাইজিরিয়ান বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে খেলেছেন। গত মৌসুমে তিনি খেলেন মাল্টা লীগে। আবাহনী ক্লাব কর্তারা আশাবাদী শক্তিশালী দল গড়ে আবারও শিরোপা লড়াইয়ে ফিরবে তারা। তবে সাভাজের সঙ্গে এখনও চুক্তি স্বাক্ষর না হলেও আরেক ইংলিশ ফুটবলার লি টাকের সঙ্গে চুক্তি করেছে আবাহনী। এই ইংলিশ ফরোয়ার্ডও চান ঢাকায় নিজের জাদু দেখাতে। এই প্রথম নয়। আর আগে জুকভের মতো রাশিয়ান ফুটবলাররা খেলে গিয়েছেন আকাশী নীল জার্সি গায়ে। সেই শক্তিই আবার ফিরিয়ে আনতে চান ক্লাব কর্তারা। এখন বাংলাদেশের ফুটবলে আছে ‘ষড়শক্তি’। এরা হলোÑ আবাহনী, মোহামেডান, ব্রাদার্স, শেখ জামাল, শেখ রাসেল ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। তবে একটা সময় ছিল (সত্তর দশকের মাঝামাঝি থেকে একবিংশ দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত) যখন দেশের ফুটবলে ছিল ‘ত্রিশক্তি।’ আর এই তিন শক্তির সমাহার ছিল আবাহনী, মোহামেডান ও ব্রাদার্স। বলা হতো, ব্রাদার্স নতুন ও প্রতিভাবান ফুটবলারের জন্ম দেয়, আর আবাহনী-মোহামেডান তাদের কিনে নিয়ে শিরোপা জেতে। ব্রাদার্সের সেই আগের ঐতিহ্য, শান-শওকত অনেকটাই আজ জৌলুস হারিয়ে ফেলেছে। তারপরও তাদের ভাল করার স্বপ্নটা মরে যায়নি আজও। কথায় আছে, ‘পুরনো চালে ভাত বাড়ে।’ পুরনো যোদ্ধাদের নিয়েই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের শিরোপা দশ বছর পর আবারও জিততে চায় তারা। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ শুরু হচ্ছে আগামী ৫ মে থেকে। দল বদলের শেষ তারিখ ৩১ মার্চ। বড় ক্লাবগুলো ইতোমধ্যে গুছিয়ে নিয়েছে দল। বাকি শুধু আনুষ্ঠানিকতার। বসে নেই ব্রাদার্সও। গত লীগে পঞ্চম হয়েছিল ব্রাদার্স। তাদেরও দল গোছানো প্রায় শেষ। সেটা নব্বই শতাংশ। গতবারের দলের ওপরই আস্থা তাদের। তাই খুব বেশি একটা ঝামেলা পোহাতে হয়নি তাদের। অনেক বছর ধরেই ব্রাদার্সের ম্যানেজারের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন আমের খান। তিনি জানান, গতবারের দলটিকেই প্রায় ধরে রেখেছেন তারা। তবে দলকে আরও শক্তিধর করতে যতটুকু সম্ভব আরও ভাল মানের ফুটবলারদের ব্রাদার্সে আনতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। স্থানীয় ফুটবলারদের নিবন্ধনের শেষ সময় ২০ মার্চ। তাই স্থানীয় ফুটবলার সংগ্রহের বিষয়টি প্রায় শেষই করে ফেলেছে ক্লাব। বিদেশী ফুটবলার আসলেই দল বদলের আনুষ্ঠানিকতাটা সেরে নিতে পারবে গোপীবাগের দলটি। এবার ব্রাদার্স ছেড়ে যাওয়া একমাত্র ফুটবলার হচ্ছেন মিডফিল্ডার মনি। তিন গোলরক্ষকের দায়িত্বে আছেন উত্তম, পিয়ারুজ্জামান পিরু এবং টিটু। এরা গত মৌসুমেও ছিলেন। রক্ষণভাগে নতুন করে যোগ হয়েছেন কমল, কৃষ্ণা, ফরাশগঞ্জ থেকে আসা মিঠু ও বাবু। মিডফিল্ডে গত মৌসুমের ইমন, জিতু, শফি মেজবাহ, ফজলে রাব্বি তো রয়েছেনই। মিডফিল্ডটাকে আরও মজবুত করতে জুয়েল এবং পাশবন মোল্লাকে দলে ভিড়িয়েছে ব্রাদার্স। রহমতগঞ্জের মান্নাফ রাব্বি, হাইতিয়ান অগাস্টিন ওয়ালসন আর মোহাম্মদ রনিকে নিয়ে ফরোয়ার্ড পজিশনটাও হয়েছে সমীহ জাগানিয়া। তারপরও থেমে নেই গোপীবাগের জায়ান্টরা। ব্রাদার্সের সাবেক ফুটবলার ও বর্তমানে ম্যানেজার আমের খান জানান, ব্রাজিল থেকে মিডফিল্ডার ড্যানিয়েলকে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। একটি ক্লাবের হয়ে বিদেশী লীগে খেলছেন তিনি। ওই ক্লাবের সঙ্গে তার চুক্তি শেষের পথে। তাকে পেলে আরও শক্তিশালী হবে ব্রাদার্স। স্থানীয়দের মধ্যে সিরাজী এবং মোহামেডানের সোহেল রানার সঙ্গে কথা চলছে দলটির। কোচ হিসেবে গত মৌসুমে দায়িত্ব পালন করেছেন ভারতের সৈয়দ নঈমউদ্দিন। এবারও তার সঙ্গে কথা চলছে। তবে আপাতত কোচের দায়িত্বে আছেন ওয়াসিম ইকবাল এবং মিরাজ। তাদের তত্ত্বাবধানেই এখন অনুশীলন চলছে ‘দ্য অরেঞ্জ ব্রিগেড’ খ্যাত দলটির ফুটবলারদের।
×