ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঠাণ্ডা ধর্মশালায় উত্তপ্ত লড়াই আজ

অস্ট্রেলিয়ার শুরুর ম্যাচে প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ১৮ মার্চ ২০১৬

অস্ট্রেলিয়ার শুরুর ম্যাচে প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড

মোঃ মামুন রশীদ ॥ ওয়ানডে বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা দল অস্ট্রেলিয়া। সর্বাধিক পাঁচবার শিরোপা জিতেছে তারা। কিন্তু এখন পর্যন্ত ক্ষুদ্রতম ফরমেটের ক্রিকেট আসর টি২০ বিশ্বকাপ জেতা হয়নি। একে একে শেষ হয়ে গেছে পাঁচ আসর। এবার শিরোপা জিততে উন্মুখ অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু শুরুতেই তাদের জন্য কঠিন বাধা। ট্রান্স তাসমান ক্রিকেট শত্রু নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মুখোমুখি হবে তারা। সুপার টেনের গ্রুপ ২ এ উত্তপ্ত লড়াইটি হবে অবশ্য বরফাচ্ছিদ মাঠ ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট এ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামের শীতল পরিবেশে। এখন পর্যন্ত টি২০ বিশ্বকাপে কখনও দু’দল মোকাবেলা করেনি। এমনকি নিরপেক্ষ কোন ভেন্যুতেই দু’দলের মধ্যে আগে হয়নি কোন টি২০ মোকাবেলা। তাই বাড়তি এক আকর্ষণ থাকছে এ ম্যাচকে ঘিরে। আর ধর্মশালার মানুষের জন্য শেষ সুযোগ চলমান বিশ্বকাপ মাঠে বসে সরাসরি দেখার। কারণ এটির পর আর কোন ম্যাচই নেই ধর্মশালায়। ২০০৭ সালের প্রথম টি২০ বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল ওঠাই এখন পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের সেরা সাফল্য। অবশ্য এবার দুর্দান্ত শুরু করেছে তারা স্বাগতিক ভারতকে হারিয়ে। সবমিলিয়ে দু’দলের লড়াই নিয়ে আজ অন্যরকম এক আগ্রহ, উন্মাদনা এবং উত্তাপ থাকবে। বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে ৩টায় ম্যাচটি শুরু হবে। ধর্মশালায় প্রাথমিক রাউন্ডের ৬ ম্যাচ অনুুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে সর্বাধিক ১৮০ রান উঠেছে। তবে অধিকাংশ ম্যাচেই দেখা গেছে তেমন ব্যাটিং বান্ধব উইকেট নয় এখানে। বোলারদের জন্য বেশ সহায়তা আছে উইকেটে। আর এটাই বড় চিন্তার কারণ হয়ে দেখা দিতে পারে অস্ট্রেলিয়ার জন্য। কারণ কিউইরা প্রথম ম্যাচের ভারতের বিপক্ষে বোলিংয়ে দুর্দান্ত সাফল্য দেখিয়েছে। বিশেষ করে কিউই স্পিনাররা বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপকে দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছে। নাথান ম্যাককুলাম, মিচেল স্যান্টনার এবং ইশ সোধির ঘূর্ণির থাবায় মাত্র ৭৯ রানেই গুটিয়ে গেছে স্পিন খেলায় সিদ্ধহস্ত এবং এ ধরনের উইকেটে অভ্যস্ত ভারতীয় দলটাও। এ কারণে কিউই স্পিন বিভাগকে নিয়ে বাড়তি পরিকল্পনা আঁটতে হবে অসিদের। বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাটিতে টি২০ সিরিজেও অপদস্থ হয়েছে অসিরা। ভারতের কাছে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে তারা। সেখান থেকে অবশ্য ঘুরে দাঁড়িয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গত মাসেই ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে ভারতে খেলতে এসেছে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু বিশ্বকাপ তো অন্য এক উত্তাপ এবং উত্তেজনা। লড়াইটাও ভিন্ন, পরিবেশও ভিন্ন। সব চ্যালেঞ্জ পেছনে ফেলে ভাল শুরুর প্রচেষ্টা স্টিভেন স্মিথের দলটির। এ বিষয়টি ভাল করেই জানা আছে অস্ট্রেলিয়ান অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসনের। তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেক ভাল খেলতে হবে। কারণ তারা এখন এ ম্যাচে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস নিয়ে নামবে।’ ওয়াটসনের কথা একেবারেই ঠিক। ভারতের মাটিতে টি২০ বিশ্বকাপের মতো আসরে স্পিন যুদ্ধে জয়ী হওয়া যেন-তেন কথা নয়। সেটাই করে দেখিয়েছে কিউইরা। আর যে কোন পরিস্থিতিতেই অস্ট্রেলিয়া যখন প্রতিপক্ষ তখন ঠিকই ফুঁসে ওঠে কিউইরা। আর এখন তো তারা উজ্জীবিত হয়েই মাঠে নামবে। যদিও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তেমন টি২০ খেলা হয়নি কিউইদের। আশ্চর্যজনকভাবে সর্বশেষ ২০১০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ক্রাইস্টচার্চে খেলেছিল দু’দল। স্নায়ু টানটান করা সে ম্যাচটি টাই হওয়ার পর ‘সুপার ওভারের’ ক্ল্যাইম্যাক্সে জিতেছিল নিউজিল্যান্ড। সেটাই সর্বশেষ টি২০ লড়াই। এখন পর্যন্ত পরস্পরের টি২০ ক্রিকেটে সাক্ষাত হয়েছে পাঁচবার। এর মধ্যে চারবারই জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু সর্বশেষ মোকাবেলার জয়টা এবং টি২০ বিশ্বকাপে দারুণ শুরুটা বাড়তি আত্মবিশ্বাস ও অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে নিউজিল্যান্ডের জন্য। গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিল অসিরা। ওয়ানডে বিশ্বকাপে লড়াইটা বেশ কয়েকবার হয়েছে। কিন্তু টি২০ বিশ্বকাপে এই প্রথম পরস্পরের মুখোমুখি হচ্ছে দু’দল। সেদিক থেকেও বাড়তি মাত্রা পাচ্ছে ম্যাচটি। এবার অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ অভিযানের শুরুটাই এমন কঠিন লড়াই দিয়ে। কিউই স্পিন হুমকির বিপক্ষে লড়াইয়ের জন্য অসিদের ডেভিড ওয়ার্নার, ওয়াটসন, এ্যারন ফিঞ্চ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েলদের মতো বিধ্বংসী ব্যাটসম্যানদের জ্বলে উঠতে হবে। দুই বিশেষায়িত স্পিনার এ্যাস্টন আগার ও এডাম জামপার মতো তরুণের ওপরই নির্ভর করতে হবে অসিদের। পেস আক্রমণেও কিউইরা এগিয়ে টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট ও মিচেল ম্যাক্লেনাঘানদের নিয়ে। আর অস্ট্রেলিয়ার পেস আক্রমণে আছে জশ হ্যাজলউড, জন হ্যাস্টিংস, জেমস ফকনার ও নাথান কুল্টার নিল। আর এদের নিয়েই ২০১০ টি২০ বিশ্বকাপে একমাত্র ফাইনাল খেলা অসিদের প্রথমবার শিরোপা জয়ের মিশন শুরু হবে আজ।
×