ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

উবাচ

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ১৮ মার্চ ২০১৬

উবাচ

দায় এড়াতে পারেন না তিনিও স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত দায় এড়াতে পারেন না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। ঢাকেশ্বরী মন্দিরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনের প্রার্থনা সভায় যোগ দিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। সুরঞ্জিত অর্থমন্ত্রীকে ইঙ্গিত করে বলেন, তিনিও সন্দেহের উর্ধে নন। ব্যক্তিগত সহকারীর ‘অর্থ কেলেঙ্কারির’ দায় নিজের কাঁধে নিয়ে ২০১০ সালে রেলমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান সুরঞ্জিত। ওই সময় বলা হয়েছিল, চট্টগ্রাম থেকে আসা ঘুষের ওই টাকা রেলমন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিল। সুরঞ্জিত বলেন, আপনি দায়িত্বশীল পদে থাকলে, দায়িত্ব নিয়েই কথা বলতে হবে। আপনাকেও দায়দায়িত্ব নিতে হবে। এটা আপনার টাকা না। এটা আপনার আমার বাবার টাকা না। এটা জনগণের অর্থ। সুরঞ্জিত বলেন, আমাদের রাষ্ট্রীয় খাতের অর্থে হাত পড়েছে। এ বিষয়ে আরও দায়িত্ব নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গেÑ সে যেই হোক, কেউ সন্দেহের উর্ধে নয়। আমি আরও স্পষ্ট করে বলতে চাইÑ অর্থমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রত্যেকটি মানুষ। তিনি অর্থমন্ত্রীর বিভিন্ন বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, ‘কখনও ইংরেজীতে কয়, বাংলা কয়। কি যে কয় বোঝার উপায় নাই। এ সমস্ত জাতীয় বিষয়, রাষ্ট্রীয় বিষয়, হালকা করে দেখার কোন সুযোগ নাই।’ তিনি বলেন, ‘সব কাজ করবেন শেখ হাসিনা। আর আমরা ইংরেজী কমু, প্রেসের সঙ্গে কথা কমু। কী কয় রাবিশ-খবিশ। এগুলো কোন কথা হলো?’ সরকারের উচ্চ পর্যায় জড়িত স্টাফ রিপোর্টার ॥ এটিএম জালিয়াতির পর বিএনপি নেতা মেজর (অব) হাফিজ বলেছিলেন, এসব সরকারের কারবার। পরে খুঁজতে খুঁজতে দেখা গেল বিএনপির এক প্রবাসী নেতার হাত ধরে জালিয়াত পিওতর সেজেফান মাজুরেক বাংলাদেশে এসেছিল। এবার বাংলাদেশ ব্যাংকে রিজার্ভ চুরির পর বিএনপির আরেক নেতা বলছেন চুরির ঘটনায় সরকারের উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিরা জড়িত আছে। এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ বলেন, ব্যাংকের অর্থ লুটপাটকারী অপরাধীদের পার করার চেষ্টা করা হচ্ছে। রিজভী আহমেদ প্রশ্ন তুলে বলেন, রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ জড়িত, তা জাতির কাছে একেবারেই সুস্পষ্ট। ঘটনা ঘটার ৪০ দিন পর অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এটি অত্যন্ত রহস্যজনক। তাহলে কি অপরাধীদের পার করে দেয়ার চেষ্টা করছে সরকার? তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮০০ কোটি টাকা ভেল্কিবাজির মতো বাতাসে মিলিয়ে যাওয়ার ঘটনা যখন দেশ-বিদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, ঠিক সে মুহূর্তে তিতাস গ্যাসের তিন হাজার ১০০ কোটি টাকা লোপাটের মতো চাঞ্চল্যকর ঘটনা পত্রিকায় (৬ পৃষ্ঠা ১ কঃ দেখুন) সরকারের উচ্চ গবর্নরের পদত্যাগ ও দু’জন ডেপুটি গবর্নরের অপসারণের মধ্য দিয়ে নেপথ্যের গডফাদারদের লুকিয়ে রাখা যাবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন রিজভী আহমেদ। লুটপাটকারীদের দুঃশাসনের কবল থেকে দেশ মুক্ত না হলে অচিরেই দুর্ভিক্ষের কবলে পড়বে দেশ। এ ভয়াবহ নৈরাজ্যময় পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় সরকার উৎখাত বলে মন্তব্য করেন তিনি। আমরাই দায়ী স্টাফ রিপোর্টার ॥ সাধারণত দায় এড়িয়ে যেতে চান বড়রা। সব দায় চাপিয়ে দিতে চান ছোটদের ওপর। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। ’৭১-এর বুদ্ধিজীবী হত্যার দায় বুদ্ধিজীবীদের ওপর চাপানো বিএনপির এই নেতা আন্দোলনে ব্যর্থতায় দায় অবশ্য নিজের কাঁধেই নিতে পছন্দ করছেন। বিএনপির কাউন্সিলকে সামনে রেখে গয়েশ্বর রায় বলেছেন, বিগত আন্দোলনে কর্মীদের কোন ব্যর্থতা নেই। আমরা যে যত বড় নেতা, আন্দোলন-সংগ্রামে তাদের ব্যর্থতা তত বেশি। সারাদেশের নেতাদের ও সাধারণ কর্মীদের কোন ব্যর্থতা নেই। কারণ তারা আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছে। বিএনপির এই বড় নেতা সম্প্রতি মহান ’৭১-এ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের বুদ্ধিমত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘উনারা যদি এত বুদ্ধিমান হন, তাহলে ১৪ তারিখ পর্যন্ত তারা নিজের ঘরে থাকে কী করে, একটু বলেন তো।’ বুদ্ধিজীবী হত্যার নায়কদের ফাঁসি হওয়ার পর বিতর্কিত এ উক্তি করেন তিনি। এ নিয়ে বিভিন্ন স্থানে তার নামে মামলা হয়েছে। সেসব মামলায় তিনি একের পর এক জামিনও পাচ্ছেন। নিজের কাঁধে দায় তুলে নেয়ার ওই বক্তব্য দেয়ার সময় গয়েশ্বর রায় কাউন্সিলের প্রচারের লক্ষ্যে পোস্টারে নেতাকর্মীদের নিজের ছবি না দেয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘ব্যক্তি প্রচারে আমরা যতটা যতœবান, দলীয় আদর্শ ও কর্মসূচী বাস্তবায়নে ততটা তৎপর নই। এ অবস্থা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।’
×