স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর ভাটারায় ছয়তলা ভবনের ছাদে মোবাইলে কথা বলতে বলতে নিচে পড়ে গিয়ে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। খিলক্ষেতে সড়ক দুর্ঘটনায় এক পথচারী নিহত হয়েছে। যাত্রাবাড়ী ও দারুস সালাম এলাকায় দামী জীপ গাড়িতে বিপুল ইয়াবা ও ফেন্সিডিলসহ দশ অপরাধীকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় ২০ রাউন্ড গুলিভর্তি দুটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার পুলিশ ও মেডিক্যাল সূত্রে জানা গেছে, ভাটারা এলাকায় একটি ৬তলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে শাকিল সারওয়ার আকিব (২৫) নামে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। তিনি গুলশানের ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি এ্যান্ড সায়েন্সেস (ইউআইটিএস) বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। মৃতের বাবার নাম মঞ্জুর আলম পারভেজ। বাড়ি চট্টগ্রামের বাকুলিয়া গ্রামে। আকিব ভাটারার ১৭৮০ নম্বর বাসার ছয়তলা ভবনের চারতলায় কয়েকজনের সঙ্গে মেসে থাকতেন।
নিহতের রুমমেট অনিক জানান, বুধবার রাত আড়াইটার দিকে ছয়তলা ভবনের ছাদে উঠে শাকিল মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন। ছাদে রেলিং না থাকায় মোবাইলে কথা বলার সময় অসাবধানবশত সে নিচে পড়ে যায়। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে এ্যাপোলো হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ওই হাসপাতাল থেকে তার লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ভাটারা থানার ওসি নূরুল মোক্তাকিন জানান, তার মৃত্যুর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত চলছে।
দুর্ঘটনায় নিহত ॥ খিলক্ষেতের কুড়িল ফ্লাইওভারের নিচে সড়ক দুর্ঘটনায় অজ্ঞাত (৩৫) এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। খিলক্ষেত থানার
কনস্টেবল মতিন জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার দিকে কুড়িল ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন ওই ব্যক্তি। এ সময় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দিয়ে চলাচলকারী একটি গাড়ি তাকে চাপা দেয়। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে তার লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য ছয়টার দিকে ঢামেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। নিহতের পরনে সাদা পাঞ্জাবি-পায়জামা ছিল। তার পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে বলে কনস্টেবল মতিন জানান।
মাদকদ্রব্য ও অস্ত্রসহ দশজন গ্রেফতার ॥ বুধবার মধ্যরাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে ৩৫ হাজার পিস ইয়াবাসহ মাদক সম্রাট হারুসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে, হারুন, শুক্কুর আলী, হারুন অর রশিদ ও রেজাউল করিম। বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে দক্ষিণ জোনের উপ-কমিশনার মোঃ মাশরুকুর রহমান খালেদ এ কথা জানান। সংবাদ সম্মেলনে মাশরুকুর রহমান জানান, বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নিশান ব্র্যান্ডের একটি নতুন জীপ গাড়ি আটক করে তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় সেই গাড়ির সিটের নিচ থেকে সুরক্ষিতভাবে ৩৫ হাজার ইয়াবা পাওয়া যায়। পরে ওই জীপ গাড়ির ভেতর থেকে ওই চারজনকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানান, কক্সবাজার থেকে শ্যামলী পরিবহনের এক চালক ইয়াবা ঢাকায় আনে। পরে তারা গাড়ি দিয়ে বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দেয়। তাদের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলা হয়েছে।
এদিকে দুটি বিদেশী পিস্তলসহ এক অস্ত্র বিক্রেতাকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় ২০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃতের নাম আবুল খায়ের তুহিন। বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোঃ মাশরুকুর রহমান খালেদ জানান, তুহিনের কাছ থেকে দুটি বিদেশী পিস্তল ও ২০টি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার তুহিন জানায়, দীর্ঘদিন ধরে সে তার সহযোগীদের মাধ্যমে রাজধানীসহ এর আশপাশের জেলায় অস্ত্র ও গুলি বিক্রি করে আসছিল। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে।
অন্যদিকে বুধবার গভীররাতে রাজধানীর দারুস সালাম থেকে ১৪০০ বোতল ফেনসিডিল ও একটি বিদেশী পিস্তলসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এরা হচ্ছে, মোঃ মামুন, মোঃ লিটন, আরিফ হোসেন, সুমন ও মোঃ কাশেম। বুধবার গভীর রাতে বালুভর্তি একটি ট্রাক ও একটি প্রাইভেটকার থেকে ফেনসিডিলগুলো উদ্ধার করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মাহমুদা আফরোজ লাকি জানান, ট্রাকে করে ফেনসিডিল ঢাকায় ঢুকছে এমন খবরে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল দারুস সালামে ব্যারিকেড দিয়ে বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশি শুরু করে। অভিযানের এক পর্যায়ে একটি প্রাইভেটকার থেকে ২০০ বোতল ফেনসিডিল পাওয়া যায়। ওই গাড়িতে থাকা মামুন, লিটন ও আরিফকে তখন আটক করা হয়। মামুনের কোমরে একটি বিদেশী পিস্তল পাওয়া যায়। পরে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বালুভর্তি একটি ট্রাক থামিয়ে তল্লাশি চালিয়ে আরও ১২০০ বোতল ফেনসিডিল পাওয়া যায়। জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার আফরোজ লাকি জানান, ওই ট্রাকের সঙ্গেই সুমন ও কাশেমকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় দারুস সালাম থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন ও অস্ত্র আইনে একটি মামলা হয়েছে।