ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নূর হোসেনের বিরুদ্ধে স্কুলছাত্র হত্যা তদন্তে আদালতের নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ১৭ মার্চ ২০১৬

নূর হোসেনের  বিরুদ্ধে স্কুলছাত্র হত্যা তদন্তে আদালতের নির্দেশ

নিজস্ব সংবাদদাতা, নারায়ণগঞ্জ, ১৬ মার্চ ॥ চাঞ্চল্যকর ৭ খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জের আজিবপুর এলাকার স্কুলছাত্র কাজী টিপু সুলতানকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ তদন্তের জন্য জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখাকে (ডিবি) নির্দেশ দিয়েছে আদালত। নিহত টিপু সুলতানের বাবা কাজী আক্তার হোসেনের আবেদনের প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অশোক কুমার দত্তের আদালত বুধবার দুপুরে এই আদেশ দেয়। বাদী পক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান সাংবাদিকদের জানান, বাদী হত্যাকা-ের পর সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে নূর হোসেনের প্রভাবের কারণ পুলিশ অভিযোগ নেয়নি। ৭ খুনের ঘটনার পর নূর হোসেন ভারতে পালিয়ে গেলে বাদী ২০১৪ সালের ২০ মে বিচারিক হাকিম আদালতে নূর হোসেন ও তার ৫ সহযোগীকে হত্যাকা-ের জন্য দায়ী করে সিআর মোকদ্দমা (নং-৩৯/২০১৪) দায়ের করেন। আদালত অভিযোগ তদন্তে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশকে দায়িত্ব দিয়েছিল। কিন্তু সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ বাদীর সঙ্গে কোন যোগাযোগ না করেই আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে বাদী আদালতে নারাজী পিটিশন দাখিল করে। বুধবার ছিল মামলার নিয়মিত শুনানি। আদালত বাদী পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শুনে মামলাটি তদন্তের জন্য জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখাকে (ডিবি) নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত প্রাঙ্গণে নিহত টিপু সুলতানের পিতা কাজী আক্তার হোসেন জানান, তার ছেলেকে যখন নূর হোসেন খুন করে তখন তার বয়স ছিল ১২ বছর ৩ মাস। তার ২ ছেলে ১ মেয়ে। ছোট ছেলে টিপু সুলতান ইংরেজী মাধ্যম স্কুল স্থানীয় মহিউদ্দিন আদর্শ কিন্ডারগার্টেন স্কুলের ৫ম শ্রেণীর ছাত্র ছিল। সিদ্ধিরগঞ্জের ২০০৬ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে নূর হোসেন, রফিকুল ইসলাম রতন, আমিনুল, রুস্তম আলী, জাকির, সুন্দর আলী জামান পূর্ব শত্রুতার জের হিসেবে টিপু সুলতানকে পরিকল্পিতভাবে আম্বর পেপার মিলের খেলার মাঠে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয়। পরে শীতলক্ষ্যা নদীতে লাশ ভেসে ওঠে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, পেশায় তিনি সবজি ব্যবসায়ী। আজিবপুর এলাকায় তার পৈত্রিক সম্পত্তি রয়েছে। সম্পত্তি দখলের জন্য নূর হোসেন প্রায়ই জমির কাগজপত্র নিয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে বলত। হত্যাকা-ের ৫ দিন আগে নূর হোসেন তার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে তাকে পরিবারসহ এলাকা ত্যাগ এবং জমি নূর হোসেনের নামে লিখে দেয়ার হুমকি দেয়। এর ক’দিন পরেই নূর হোসেন তার ছেলেকে খুন করে। হত্যাকা-ের পরে তিনি সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। উল্টো রাতের বেলা পুলিশ তার বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিত যাতে নূর হোসেনের বিরুদ্ধে কোন কথা না বলেন। ৭ খুনের ঘটনায় নূর হোসেন পালিয়ে যাওয়ার পরে তিনি ২০১৪ সালের ৮ মে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি জিডি করতে সক্ষম হন। মেধাবী সন্তানের নৃশংস হত্যাকা-ের পর থেকে তার স্ত্রী আছিয়া বেগম শোকে বর্তমান অসুস্থ। পুলিশ হত্যা মামলা রেকর্ডভুক্ত না করায় তিনি আদালতে নালিশী দরখাস্ত করেন ২০১৪ সালের ২০ মে। বাদী আরও বলেন, নূর হোসেনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার ছেলে হত্যার রহস্য উন্মোচিত হবে। মেধাবী সন্তান হারিয়ে তিনি এবং তার স্ত্রী এখন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
×