ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জনগণের কাছে উন্নত চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ১৭ মার্চ ২০১৬

জনগণের কাছে উন্নত চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে মেডিক্যাল কলেজ স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, জনগণের দোরগোড়ায় উন্নত চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য। এ জন্য সিলেটে একটি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে এবং জনসংখ্যার বিবেচনায় প্রতি জেলায় একটি করে মেডিক্যাল কলেজ স্থাপনের চিন্তা-ভাবনাও রয়েছে। জেলা-উপজেলার হাসপাতালে চক্ষু বিশেষজ্ঞদের সেবা দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। বুধবার সকালে রাজধানীর ফার্মগেট কৃষিবিদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ চক্ষু চিকিৎসক সমিতির ৪৩তম বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ চক্ষু বিজ্ঞান সমিতির সভাপতি অধ্যাপক শরফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, প্রতিমন্ত্রী জাহেদ মালেক, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা মোদাচ্ছের আলী প্রমুখ বক্তব্য দেন। স্বাগত বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক দীন মোহাম্মদ নূরুল হক । চট্টগ্রাম এবং রাজশাহীতে পূর্ণাঙ্গ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকেই মনে করেন চট্টগ্রাম এবং রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজই বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হবে। কিন্তু আমরা তা করছি না এবং করবও না। বিশ্ববিদ্যালয় দুটি সম্পূর্ণ পৃথক ও পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠান হবে। যেখানে শিক্ষার্থীরা স্নাতকোত্তর শিক্ষা লাভ করবে ও গবেষণার সুযোগ পাবে। স্নাতকোত্তর পর্যায়ের নিচের শিক্ষার্থীরা মেডিক্যাল কলেজে পড়াশোনা করতে পারবে। চোখের চিকিৎসকদের প্রতি দেশের মানুষের উন্নত ভবিষ্যত গড়ার লক্ষ্যে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা যারা চক্ষু চিকিৎসক, চক্ষু বিশেষজ্ঞ আছেন, বাংলাদেশ যেন সব সময় আলোকিত ভবিষ্যত পায় সে লক্ষ্যে কাজ করবেন। চক্ষু চিকিৎসার যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়ার আশাস দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা চাই, আমাদের দেশের মানুষ যেন মানসম্মত চিকিৎসা পায়, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। গ্রামের মানুষের স্বাস্থ্য সেবার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক করার কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আওমায়ী লীগ ক্ষমতায় আসার পর গ্রামাঞ্চলে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের কাজ শুরু হয়। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর তা বন্ধ করে দেয়। ২০০৯ সালে আমরা আবার ক্ষমতায় এসে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেছি। সেখান থেকে মানুষ সেবা পাচ্ছে। বর্তমানে সারাদেশে সাড়ে ১২ হাজারেরও বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে বিনামূল্যে বিভিন্ন ধরনের সেবা ও ওষুধ দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত সাত বছরে দেশে ২৪টি সরকারী হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে। এই সময়েই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘সেন্টার অব এক্সিলেন্স’ হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। উন্নত চক্ষু চিকিৎসা সেবার লক্ষ্যে গোপালগঞ্জে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা হচ্ছে বলে জানান তিনি। বর্তমানে সারাদেশে ৬১২টি সরকারী হাসপাতাল এবং সরকারী ও বেসরকারী মিলিয়ে মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে ১০০টি। হাসপাতালগুলোতে সর্বক্ষণিক চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৪ ঘণ্টা স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি আমরা। পোড়া রোগীদের জন্য বার্ন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত যেভাবে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে, মানুষ পুড়িয়ে তারা যে অবস্থার সৃষ্টি করেছে তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। মানুষ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করতে পারে এটা চিন্তারও বাইরে। কিন্তু তাদের আন্দোলন মানে মানুষ হত্যা, জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে মারা। সরকারের পক্ষ থেকে নার্সিং পেশায় সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নার্সিং সম্মানজনক পেশাÑ এটা মানুষকে বোঝাতে হবে। সাধারণ মানুষকে চোখের যতœ নেয়ার প্রতি আরও সচেতন করে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন শেখ হাসিনা। জন্মগত চোখের রোগ এড়াতে গর্ভকালীন সময়েই মায়েদের সচেতনতার কথা বলেন তিনি। বিশিষ্ট চক্ষু বিশেষজ্ঞ দীন মোহাম্মদ নূরুল হককে তার পেশাগত দক্ষতার স্বীকৃতি হিসেবে শহীদ ডাঃ আলিম চৌধুরী স্বর্ণপদকে ভূষিত করেন প্রধানমন্ত্রী।
×