ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মারাত্মক সাইবার ঝুঁকি

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ১৭ মার্চ ২০১৬

মারাত্মক সাইবার ঝুঁকি

ফিরোজ মান্না ॥ মারাত্মক সাইবার ঝুঁকিতে বাংলাদেশ। অব্যাহত সাইবার সন্ত্রাস, ই-ব্যাংকিং কেলেঙ্কারি, এটিএম কার্ড জালিয়াতি এবং সর্বশেষ বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ লোপাট এই ঝুঁকিরই বহির্প্রকাশ। নিরাপত্তার পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়া ডিজিটাল কর্মকা-ের ব্যাপক প্রসারই এই পরিস্থিতি সৃষ্টির কারণ বলে মনে করছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা। ইন্টারনেট, যার কোন সীমানা নেই। বেঁধেও রাখা যায় না। তবে ইন্টারনেটকে নানা পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। বর্তমান বিশ্বে সাইবার এ্যাটাক অস্ত্র যুদ্ধের চেয়েও ভয়াবহ। এই ভয়াবহ জিনিসটি নিয়ন্ত্রণের জন্য দরকার দক্ষ জনবলের। দেশে সেই জনবল তৈরির আগেই ইন্টারনেট সাধারণ মানুষের হাতে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। ফলে প্রতিনিয়ত ব্যক্তি থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হ্যাকারদের টার্গেটে পরিণত হচ্ছে। সম্প্রতি এটিএম কার্ড জালিয়াতি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ঘটনা তার একটি প্রমাণ। বড় কোন ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্টরা নড়েচড়ে বসেন। তখন নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে নানা পরিকল্পনার কথা বলা হয়। এবারও সাইবার নিরাপত্তা জন্য একটি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার গঠন কথা বলা হচ্ছে। বর্তমানে সাইবার ক্রাইমের জন্য বাংলাদেশ ১৯ তম অবস্থানে রয়েছে। এই র‌্যাঙ্কিং বিবেচনায় নিয়ে আগে থেকেই সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন ছিল। সরকার ও বেসরকারী দুই পর্যায় থেকেই সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে। তা না হলে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটতে থাকবে। এমন আশঙ্কা তথ্যপ্রযুক্তিবিদদের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হ্যাকারদের প্রথম টার্গেট হচ্ছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এরপর অন্য সামাজিক অপরাধ। সাইবার ক্রাইম ঠেকাতে কঠোর আইনী ব্যবস্থা গড়ে তোলা, ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করা জরুরী। সবার হাতে ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি নিরাপত্তাও পৌঁছে দিতে হবে। বাংলাদেশে নিরাপত্তার কথাটি বিবেচনায় রাখা হয়নি। দেশে এখনও সাইবার নিরাপত্তার বিষয়ে কোন আইন নেই। ওয়েবসাইট বা ব্লগ পরিচালনার জন্য নেই কোন সুনির্দিষ্ট নীতিমালা। বড় কোন ঘটনা ঘটার পর সরকারীভাবে বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা শুরু হয়। এবারও তার কোন ব্যতিক্রম কিছু হচ্ছে না। বিটিআরসির পক্ষ থেকে সাইবার নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থা গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই উদ্যোগ কতদূর এগিয়ে যাবে তা নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তিবিদরা সংশয় প্রকাশ করেছেন। বিটিআরসির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ড. শাহজাহান মাহমুদ জানালেন, সাইবার অপরাধ দমনে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি নিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থা গঠন করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ওই সংস্থা আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমসহ বিভিন্ন ধরনের সাইবার অপরাধের ওপর নজরদারি, অপরাধ তদন্ত ও দোষীদের শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় নেবে। নতুন সংস্থা গঠনের প্রস্তাবটি বিটিআরসি তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। মন্ত্রণালয় প্রস্তাবটি প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন জন্য যাবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। অনুমোদন পেলেই সংস্থা গঠনের কাজ শুরু হবে। সরকারী উদ্যোগের বাইরে বেসরকারীভাবে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়ার এ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সাবেক সভাপতি হাবিবুল্লাহ এন করিম। তিনি বলেন, ইন্টারনেট এক্সসেস যত বেশি, তত বেশি নেই সাইবার নিরাপত্তা। নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে ‘ডাবল লেয়ারে’ কাজ করা প্রয়োজন। একটি নিরাপত্তা ব্যবস্থা দিয়ে সাইবার নিরাপত্তা দেয়া কোনভাবেই সম্ভব হবে না। সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন জনসচেতনা। আমাদের দেশের মানুষ ইয়াহু বা জি-মেইল ব্যবহার করেন। মাঝে মাঝে এসব ই-মেইলে এমন সব মেইল আসে যেগুলো পাঠায় হ্যাকাররা। কিন্ত মনে হবে ইয়াহু বা জি-মেইল থেকে পাঠিয়েছে। ওই সব মেইলে পাসওয়ার্ড চাওয়া হয়। গ্রাহকরা না বুঝে পাসওয়ার্ড দিয়ে দেয়। তখন হ্যাকাররা সঙ্গে সঙ্গে পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে এ্যাকাউন্টটি হ্যাক করে দেয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষেত্রেও এই একই ঘটনা ঘটেছে। তারা ব্যাংকের একটি বা দুটি আইডি হ্যাক করে সব তথ্য নিয়ে গেছে। এর পরই টাকা তোলার ‘ওয়াডার’ কিভাবে হয় তারা জেনে ফেলে। যে কারণে সহজেই তারা বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিতে পেরেছে। ওয়েবসাইট ছাড়াও মোবাইল ফোনে চলছে সাইবার ক্রাইম। অপরাধীরা আইপি ফোনকল ব্যবহার করছে। আর এ কল শনাক্ত করা কঠিন। কারণ এই ফোনে এক ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার করে র‌্যান্ডম কল নম্বর তৈরি করা যায়। পরবর্তীতে ওই নম্বরগুলোতে কোন কল ঢুকবে না। ওই নম্বরগুলো ওভাবেই তৈরি করা হয়। দেশে আইপি ফোনের বেশ কয়েকটি লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। এই লাইসেন্সগুলো দেয়ার আগে সেফটি সিকিউরিটির কথা চিন্তা করা হয়নি। নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের আগে চিন্তা করা প্রয়োজন যে, এটা গ্রাহকদের জন্য কতখানি নিরাপদ বা কতখানি বিপজ্জনক। তবে হ্যাঁ, আইপি ফোন ব্যবহার করে কম খরচে গ্রাহক কথা বলতে পারছেন। উল্টো দিকে এর বিপদও বাড়াছে। বিটিআরসি বিষয়টি নিয়ে ভাবছে না। দেশের ভেতর থেকে কল করে যাচ্ছে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নামে। একটা গ্রুপ প্রতিনিয়ত তালিকা তৈরি করে কল দিচ্ছে। দিনে এক শ’ জন মানুষকে কল করে চাঁদা দাবি করলে ৫ জনে তো ভয় পেয়ে টাকা দিয়ে দিচ্ছে। বিনা চালানে বিরাট অঙ্কের টাকা হাতে চলে যাচ্ছে। এটাই ওদের বড় লাভ। ওদের ধরার কোন প্রযুক্তি এখনও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আসেনি। বিটিআরসি জানিয়েছে, সাইবার অপরাধ দমন ও সাইবার নিরাপত্তা বাড়াতে বিটিআরসি আইন প্রয়োগকারী প্রতিষ্ঠান, গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সঙ্গে আরও নিবিড় যোগাযোগ এবং সমন্বয় করে কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছে। প্রস্তাব করা হয়েছে, কেন্ত্রীয় সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা গঠন করার। একই সঙ্গে বিটিআরসি বিদ্যমান সামর্থ্য ও সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সাইবার অপরাধীদের শনাক্তকরণসহ পুলিশের তদন্ত কাজে সহায়তার জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার পদক্ষেপ নিয়েছে। যদিও বিটিআরসির পাশাপাশি সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কিত বিভিন্ন দফতর এবং নিরাপত্তা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো নিজস্ব অধিক্ষেত্র অনুসারে সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছে। এর পরেও কেন্দ্রীয় একটি সংস্থার প্রয়োজন রয়েছে বলে বিটিআরসি মনে করে। তথ্যপ্রযুক্তিবিদ সুমন আহমেদ সাব্বির মনে করেন, সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইন্টারনেট সবার কাছে পৌঁছে দেয়ার আগে নিরাপত্তার বিষয়টি আগে ভাবা উচিত ছিল। সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টি ক্ষেত্র বিশেষে ভিন্ন রকমের হবে। প্রতিষ্ঠানে যে ধরনের নিরাপত্তার প্রয়োজন ব্যক্তি পর্যায়ে সে ধরনের নিরাপত্তার দরকার হবে না। বর্তমান বিশ্বে সাইবার এ্যাটাক অস্ত্র যুদ্ধের চেয়েও ভয়াবহ। হ্যাকারদের প্রথম টার্গেট থাকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে জনসচেতনতা। এই সচেতনা থাকলে দুর্ঘটনা ঘটবে তবে এত ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটবে না। ইন্টারনেটের সুফল জনসাধারণ পেলেও উল্টো দিকে ভয়াবহ কুফল পাচ্ছেন তারা। ইন্টারনেট ব্যবহারের বিষয়ে ব্যবহারকারীরা কোনভাবেই সচেতন থাকছেন না। বিটিআরসির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে দেশের পুলিশসহ আইন প্রয়োগকারী ও বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। বৈঠকের বিষয়ে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে জানানোও হয়েছে। কেন্দ্রীয় সংস্থা গঠন করার পর সাইবার অপরাধ দমনে বিটিআরসির পক্ষ থেকে সংস্থাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেয়া হবে। ভবিষ্যতে সাইবার অপরাধ দমনে আরও উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করার উদ্যোগ নেয়া হবে। বাক, চিন্তা ও যোগাযোগের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখার পাশাপাশি সুস্থ ও সাবলীল সামাজিক মাধ্যম গঠনে বিটিআরসি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে চালিয়ে যাচ্ছে সাইবার অপরাধ। এসব সাইবার অপরাধ দমনে বিদ্যমান জনবল ও কারিগরি সক্ষমতা না থাকায় বিটিআরসি সাধারণ নাগরিকের চাহিদামতো সহযোগিতা দিতে পারছে না। এ কারণেই আলাদা একটি সংস্থা গঠনের প্রয়োজন রয়েছে। জানা গেছে, ফেসবুক, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বিটিআরসি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এসব মাধ্যমগুলোর সঙ্গে বিটিআরসি বা অন্য কোন সংস্থার কোন ধরনের সমঝোতা স্মারক বা চুক্তি না থাকলেও তাদের নিজম্ব নিয়মকানুন অনুসারে জনস্বার্থে প্রয়োজনমতো বিটিআরসি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে আসছে। অন্যদিকে, সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে ‘বাংলাদেশ কম্পিউটার সিকিউরিটি ইনসিডেন্ট রেসপনস টিম’ (সিএসআইআরটি) একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেছে। কম্পিউটার ও সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে এই ওয়েবসাইট কাজ করবে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এই ওয়েবসাইটটি চালু করেছে । ওয়েবসাইটি সাইবার অপরাধ দমনে ভূমিকা রাখছে। এই ওয়েবসাইটে সাইবার অপরাধের একটি পরিসংখ্যান দেয়া হয়েছে। এখানে বিশ্ব সাইবার নিরাপত্তা গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাইমেনটেকর (নরটন এ্যান্টি ভাইরাস নির্মাতা) একটি লিঙ্ক রয়েছে। অপর একটি লিঙ্কে দেখানো হয়েছে বিশ্বে সাইবার হুমকির পরিসংখ্যান। সাইটটি সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে সহায়তা, পরামর্শ ও বিশেষ তথ্যভা-ার বা ডাটাবেজ তৈরির জন্য এ ওয়েবসাইট কাজ করবে। সাইবার অপরাধ রোধ ও অপরাধী শনাক্তকরণের জন্য ১১ সদস্যের সিএসআইআরটি দল কাজ করেছে। বর্তমানে সাইবার ‘ক্রাইম‘ ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠায় বিটিআরসি এমন ব্যবস্থা নিয়েছে। সাইবার অপরাধের আরেকটি দিক হচ্ছে, এ্যামেজিং আড্ডা। এই আড্ডা সাইটটি সেলিব্রেটিদের ‘নুড ইমেজ’ সংগ্রহ করে ওয়েবসাইটে ছেড়ে দিয়েছে। এই ইমেজ দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। এ কারণে পেশাগত জীবনে তারা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। আর এ ঘটনার ভিডিও চিত্রই আপলোড করেছে ‘এ্যামেজিং আড্ডা ডট কম’ নামে একটি সাইট। ভিডিও চিত্র ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা একবার হলেও দেখেছেন। এই ভিডিও চিত্রে এমন ‘লেবেল’ ব্যবহার করা হয়েছে- যা যে কেউ দেখতে আগ্রহী হয়ে উঠবে। এই সাইটের মোট ২৫টি কর্নার আছে। এর মধ্যে ২৪টি কর্নার খুব সাধারণ। কোনটিতে বাংলাদেশের ঐহিত্য, কোনটিতে বাংলা গান, কোনটিতে শিল্প, সাহিত্যের নানা বিষয় রয়েছে। কোনটিতে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ডাউনলোড করার জন্য রাখা হয়েছে। একদম শেষের কর্নারে রাখা হয়েছে অশ্লীলতা। এই কর্নারে ‘এ্যাডাল্ট ফান, এ্যাডাল্ট পিকচার, বাংলা চটি ভা-ার, দেশী ভিডিও, বিদেশী ভিডিও সেকশন রাখা হয়েছে। আর দেশী ভিডিও সেকশনের মাধ্যমেই আপলোড করা হচ্ছে নিত্য নতুন স্ক্যান্ডাল ভিডিও ক্লিপ। ‘দেশীয় ভিডিও’ সেকশনে বর্তমানে প্রায় দেড় হাজার স্ক্যান্ডাল ভিডিও ক্লিপ রয়েছে। এসব ক্লিপের আর্কাইভ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ‘মিডিয়া ফায়ার,’ ‘ওরোন’ সফটোনিক’ ‘ফাইলসনিক’-এর মতো বিশ^খ্যাত অনলাইন আর্কাইভ সেন্টারকে। প্রতিটি ভিডিও ক্লিপের সঙ্গে এসব আর্কাইভ সাইটের লিঙ্ক দেয়া রয়েছে ডাউনলোড করার জন্য। এসব আর্কাইভ সেন্টার ভাড়া নিয়ে যে কেউ যে কোন ফাইল সংরক্ষণ করতে পারে। কিছু সময়ের জন্য বিনামূল্যেও ফাইল সংরক্ষণ করা যায়। কোন ধরনের ফাইল দেয়া হচ্ছে সে দায় আর্কাইভ কর্তৃপক্ষ নেয় না। তারা শুধু সংরক্ষণ এবং ডাউনলোড সুবিধা দেয়। এ্যামেজিং আড্ডা বিপুল সংখ্যক ভিডিও ফাইল আর্কাইভ করার অর্থ তারা বাণিজ্যিকভাবে এসব আর্কাইভ সেন্টার ব্যবহার করছে। এ সাইটের দেশী ভিডিও সেকশনে বিভিন্ন পর্ণ সাইটের বিজ্ঞাপনও দেখা যায়। যদিও এরই সাইটে রেজিস্ট্রেশন কিন্তু সাইট পরিচালনার ধরন বলে দেয়, সাইটটি ব্যবসায়িক ভিত্তিতেই পরিচালিত হচ্ছে। বিশেষ করে বিজ্ঞাপন প্রচার এবং ‘ভিডিও ক্লিপ’গুলোতে সাইটের লেবেল লাগানোর বিষয়টি ব্যবসায়িক ভিতিতে পরিচালনার বিষয়টি নিশ্চিত করে। এই সাইটে দেখা যায় স্কুল, কলেজ থেকে শুরু করে গ্রামের অতি সাধারণ নারীকে ব্যবহার করে ধারণ করা ভিডিও চিত্রের ফাইল রয়েছে। দু’-একটি ভিডিও চিত্র দেখে বোঝা যায়, এসব ভিডিও চিত্র গোপনে ধারণ করা হয়েছে। এসব অপরাধ দমনে কোন কার্যকর উদ্যোগ নাই। নিয়ন্ত্রণনহীন এমন সেলফোন কিংবা তথ্যপ্রযুক্তি সার্ভিস দুনিয়ার কোথাও নেই। বাংলাদেশেও থাকা উচিত নয়।
×