ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সুপার টেনে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৪:১৫, ১৭ মার্চ ২০১৬

সুপার টেনে বাংলাদেশ

ক্রিকেট-দুনিয়ার অন্যতম সুপার পাওয়ার হিসেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল উঠে গেছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টেনে। এ জন্য তাদের অভিনন্দন প্রাপ্য। ভারতে শুরুও হয়ে গেছে বাংলাদেশের খেলা। গ্রুপ ম্যাচে চারটি দলের মুখোমুখি হচ্ছে তারা। দেশবাসীর প্রত্যাশা, টাইগাররা তাদের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলুক। কারণ ইতোমধ্যেই তারা প্রমাণ করেছে যে টি-টোয়েন্টিতে অভিজ্ঞতার ঝুলি ভারি না হলেও অত্যন্ত প্রতিশ্রুতিশীল দল হিসেবে উঠে এসেছে তারা। চলমান বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে তিন প্রতিপক্ষের সঙ্গে দারুণ লড়েছে টাইগাররা। দলের গুরুত্বপূর্ণ দুই বোলারের ওপর আইসিসির আকস্মিক ‘ফরমান’ হিমালয়তুল্য মানসিক চাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ দলের সামনে। কারণ এমনিতেই দলের নির্ভরযোগ্য বোলিং অস্ত্র মুস্তাফিজকে ছাড়াই মাঠে নামতে হয়েছে তাদের। বৃষ্টি, উচ্চতা এবং ঠাণ্ডা আবহাওয়া কিছুটা বিপাকে ফেললেও টিম স্পিরিট এবং দেশের কোটি দর্শকের প্রত্যাশার কথা ভেবে লড়াই চালিয়ে গেছে তারা। বিশেষ করে বাছাই পর্বের শেষ খেলায় ওমানকে যেভাবে বড় ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ- তাতে দেশের মানুষও বড় প্রাপ্তির স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। বাংলাদেশের ওই দারুণ জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান তামিম ইকবালের। ৬৩ বলে ১০৩ রানের অপরাজিত এই ইনিংস দিয়ে বাংলাদেশের হয়ে দুটি রেকর্ড গড়েছেন এই বাঁহাতি ওপেনার। আরেক বড় প্রাপ্তি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের ফর্মে ফিরে আসাটাও। প্রথমে ব্যাটিংয়ে ১৭ রান করেছেন। মাত্র ৯ বল খেললেও অনেক দিন পর স্বচ্ছন্দ মনে হলো সাকিবকে। আত্মবিশ্বাস ফুটে বেরোল বোলিংয়েও। ৩ ওভার বল করে ১৫ রানে ৪ উইকেট। জনকণ্ঠের প্রতিবেদনে আসল কথাটা উঠে এসেছে। সত্যিই তো, বাংলাদেশ ভীতিতে কাঁপছে সব দলই। যে দল বাংলাদেশের কাছে হারবে, তাদেরই যে বিদায় ঘণ্টা সবার আগে বেজে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। শুরুতেই কলকাতার ইডেন গার্ডেনে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশ। এরপর এক এক ব্যাঙ্গালুরুতে ২১ মার্চ অস্ট্রেলিয়া ও ২৩ মার্চ ভারতের মুখোমুখি হবে মাশরাফি বাহিনী। নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ২৬ মার্চ ইডেন গার্ডেনে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এই গ্রুপ থেকে দুটি ম্যাচ জিততে পারলেই সেমিফাইনালে ওঠার সুযোগ রয়েছে বাংলাদেশের। পাকিস্তান কোচ ওয়াকার ইউনুস তো সরাসরিই বাংলাদেশ ভীতির বিষয়টি ইঙ্গিত করেছেন। ভারতের সঙ্গে ম্যাচটির দিকে সবার দৃষ্টি থাকলেও, পাক কোচের দৃষ্টি বাংলাদেশ ম্যাচের দিকেই। বলেছেন, ‘ভারতের সঙ্গে ম্যাচের আগে আমাদের প্রথমে খেলতে হবে বাংলাদেশের সঙ্গে। আমরা এখন সেই ম্যাচটা উতরে যাওয়ার চিন্তা করছি। বাংলাদেশ বর্তমানে বেশ উন্নত দল। যে কোন দলের জন্যই এখন কঠিন হয়ে পড়েছে।’ বোঝাই যাচ্ছে, বাংলাদেশকে নিয়ে ভীতসন্ত্রস্ত ওয়াকার! অস্ট্রেলিয়া কোচ ড্যারেন লেহম্যান অবশ্য মোক্ষম কথাটি বলে দিয়েছেন, ‘টি২০ খেলা এমন, দিনটিতে যারা ভাল খেলে; তারাই জেতে। যে কোন দলই জিততে পারে। আর এ মুহূর্তে তো সব দলই সমান শক্তির।’ সুতরাং টাইগাররা যেমন দারুণ শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে অন্য দলগুলোর, তেমনি প্রতিপক্ষও তাদের ‘অস্ত্র’ শানাচ্ছে। সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিয়ে বোলিং-ফিল্ডিং-ব্যাটিং প্রতিটি পর্যায়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়েই প্রতিযোগিতার পরের ধাপে যাওয়া নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে দেশবাসীর শুভ কামনা টাইগারদের বড় প্রেরণা।
×