ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ফুটপাথের অবৈধ স্থাপনাও আজ থেকে উঠে যাবে

সড়ক মহাসড়কের পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হবে

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১৬ মার্চ ২০১৬

সড়ক মহাসড়কের পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সারাদেশে সড়ক-মহাসড়কের পাশে আবারও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বুধবার সকাল থেকে এ অভিযান শুরুর কথা জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। মঙ্গলবার গুলিস্তান মোড়ে সিএনজি অটোরিক্সা মিটারে চলাচল নিশ্চিতকরণ এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কারীদের বিরুদ্ধে বিআরটিএ’র চলমান মোবাইল কোর্টের কার্যক্রম পরিদর্শনকালে এ কথা জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, স্থাপনা নির্মাণকারীদের অবৈধ স্থাপনা নিজ উদ্যোগে সরিয়ে নেয়ার জন্য ইতোমধ্যে দেয়া এক মাসের সময়সীমা আজ শেষ হচ্ছে। কিছু কিছু স্থাপনা সরিয়ে নেয়া হলেও যে সকল স্থাপনা সরিয়ে নেয়া হয়নি সেসবের বিরুদ্ধে আগামী দিন থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে। সাম্প্রতিক সময়ে সড়ক-মহাসড়কের পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরুর সিদ্ধান্ত হয় অন্তত ১০ বার। আটঘাট বেঁধে অভিযান পরিচালনার ঘোষণাও দেয়া হয় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। এজন্য আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকেও অন্য মন্ত্রীদের সহযোগিতা কামনা করা হয়। কিন্তু এ বিষয়ে কয়েক দফা ঘোষণা দেয়ার পরও কাজের কাজ কিছু হয়নি। অভিযান শুরুর পর পরই তা থেমে যায়। এ বিষয়ে মন্ত্রী নিজেই একাধিকবার বলেছেন, রাজনৈতিক কারণে উচ্ছেদ অভিযান সম্ভব নয়। অভিযান শুরুর পর পরই রাজনৈতিক চাপ বেড়ে যায়। ভোটের কারণে অভিযানের সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটতে হয়। এবার অভিযানের অগ্রগতি কতটুকু হবে তাই দেখার বিষয়। এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, নির্ধারিত ভাড়া এবং মিটারে চলাচলকারী অটোরিক্সার সংখ্যা ইতোমধ্যে বাড়ছে। তবে যে সকল চালক এ নির্দেশনা মানছে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তিনি ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন রুটে মহিলাদের জন্য নির্ধারিত বাসে মহিলা যাত্রীদের চলাচলের অনুরোধ জানিয়েছেন। এ সময় মন্ত্রী সিএনজি অটোরিক্সাসহ বাসযাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন। পরিদর্শনকালে বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান মোঃ নজরুল ইসলাম, পরিচালক (প্রশাসন) মশিয়ার রহমান, পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) বিজয় ভূষণ পালসহ উর্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী আসা উপলক্ষে সকাল থেকেই গুলিস্তান এলাকায় ফুটপাথ ছিল অনেকটাই দখলমুক্ত। পথচারীরা ভালভাবেই চলছিলেন। কিন্তু তা ছিল সাময়িক। এ দৃশ্য দেখে মন্ত্রী নিজেও অনেকটা পুলকিত। তাই ফুটপাথ আর দখল রাখতে দেয়া হবে না বলে জানান সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ফুটপাথ আর দখলে রাখতে দেয়া হবে না। সাধারণ মানুষের চলাচলে ফুটপাথ দখলমুক্ত করা হবে। যারা এখনও দখলে রেখে ফুটপাথে ব্যবসা করছেন তারা সময় থাকতে উঠে যান। ফুটপাথ দখলকারী অবৈধ ব্যবসায়ীদের মঙ্গলবারের মধ্যে উঠে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, বুধবার থেকে ফুটপাথের অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে। কিন্তু বাস্তব চিত্র হলো, মন্ত্রী গুলিস্তান এলাকা ত্যাগ করার দুই ঘণ্টার মধ্যে আবারও দখল হয় ফুটপাথ, রাস্তা। দখলের রাজ্যে ফিরে আসে হকাররা। এর আগেও মন্ত্রী একাধিকবার এই এলাকায় ফুটপাথ দখলমুক্ত করার চেষ্টা চালান। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্তকর্তাদের দায়িত্বও দিয়েছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত কাজের কাজ কিছুই হয়নি। অভিযানের একপর্যায়ে মন্ত্রী ঢাকা-মাওয়া-নারায়ণগজ্ঞ, গুলিস্তান-মিরপুর রুটের বিভিন্ন বাসে ওঠেন। যাত্রীদের সঙ্গে বাড়তি ভাড়া আদায়ের বিষয়ে কথা বলেন। অনেক যাত্রী বাড়তি ভাড়া নেয়ার অভিযোগ করেন। আবার কেউ কেউ নিয়ম মেনে ভাড়া আদায়ের কথাও বলেন। তাছাড়া বেশ কয়েকটি অটোরিক্সা থামিয়ে চালকসহ যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এ সময় চালকরা মালিকদের বিরুদ্ধে বাড়তি জমা আদায়ের অভিযোগ করেন। তারা জানান, সরকার নির্ধারিত ৯০০ টাকার পরিবর্তে বেশিরভাগ মালিক বাড়তি অর্থ আদায় করছে দিনের পর দিন। কিন্তু পেটের তাগিদে তাদের গাড়ি চালানো ছাড়া উপায় নেই। এ সময় মন্ত্রী অভিযুক্ত গাড়ির মালিকদের বিরুদ্ধে পর্যায়ক্রমে অভিযান পরিচালনার কথা বলেন।
×