ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রকৌশলীকে চার দফা শোকজ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলজিইডিতে অচলাবস্থা ॥ উন্নয়ন কাজের গতি হ্রাস

প্রকাশিত: ০৬:২১, ১৫ মার্চ ২০১৬

ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলজিইডিতে অচলাবস্থা ॥ উন্নয়ন কাজের গতি হ্রাস

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ॥ বেহল অবস্থা ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলজিইডির। কাজ চলছে ঠিকই। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন কাজ পিছিয়ে দেয়া হচ্ছে। এতে সরকারী উন্নয়ন কর্মকা- ব্যাহত হচ্ছে। অন্তত ৭০ কোটি টাকার কাজ অজ্ঞাত কারণে শ্লথ করে দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে এক প্রকৌশলীকে চার দফা শোকজ করা হয়েছে। তারপরও কোন কাজ হচ্ছে না। একের পর এক শোকজ করা হলেও উল্টো নানামুখী তদবির, লবিং এবং গ্রুপিং চালিয়ে আসছে ওই প্রকৌশলী। সবকিছু মিলিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলজিইডিতে চলছে চরম অস্থিরতা। অভিযোগ পাওয়া গেছে, জেলা টেন্ডার কমিটির সদস্য সচিব ও এলজিইডির সিনিয়র প্রকৌশলী মামুন খান পরিকল্পিতভাবে বিশেষ সুবিধা আদায়ের জন্য মূল্যায়ন কার্যক্রম বিলম্ব করছেন। এতে চলমান কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে। সরকারী বিলম্বের মাধ্যমে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার কৌশল বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছে। অভিযুক্ত এ প্রকৌশলীর সরকারী কাজ বিলম্ব করায় একাধিক সংসদ সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দরপত্র গ্রহণে সময়ক্ষেপণ, মূল্যায়ন বিলম্ব, প্রতিবেদন দাখিলে সময়ক্ষেপণ, একজনের কাজ অন্যজনকে প্রদান, ফাইল আটকে রাখাসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। অনুসন্ধানে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এলজিইডির সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মামুন খান যোগদানের পর থেকেই নানা কায়দা কৌশলে সরকারী উন্নয়ন প্রকল্পের গতি শ্লথ করে দেয়। সূত্র জানায়, শহরের গোকর্ণ ঘাটে তিতাস নদীর ওপর নবীনগর-ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়কের ব্রিজ নির্মাণে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরও অন্তত দেড় মাস বিলম্ব করা হয়। ৩২ কোটি ৮৭ লাখ টাকার কাজের বিলম্বের কারণে গতিই কমে গেছে। বিশেষ সুবিধা পেতে বিলম্বে দরপত্র প্রকাশের অভিযোগ রয়েছে। নবীনগরের কৃষ্ণনগর ব্রিজ নির্মাণ ও এপ্রোচ কাজের মূল্যায়ন বিলম্ব করা হয় একই কারণে। ১২ কোটি টাকার কাজের মূল্যায়ন বিলম্ব করায় কাজও শুরু হয় ধীরগতিতে। বিজয়নগর উপজেলার রামপুর-লক্ষ্মীপুর সড়কের সাড়ে সাত কোটি টাকার কাজ তার পছন্দের ঠিকাদারকে দেয়া হয়। তাকে দিতে গিয়েও বিলম্বের ঘটনা ঘটে। এদিকে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-সিমনা সড়কের নির্মাণ কাজও বার বার পিছিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় ঠিকাদাররা জানান, অন্তত ৭০ কোটি টাকার কাজ কৌশলে ঠেকিয়ে দেয়া হয়েছে। এসব কারণে এক সংসদ সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করে তার বিরুদ্ধে ১৭টি বিষয় নিয়ে উচ্চ পর্যায়ে অভিযোগ করেন। স্থানীয় সূত্র জানায়, দরপত্র মূল্যায়নে সময়ক্ষেপণ ফাইল আটক রেখে সরকারী কার্যক্রমে বাধাদানসহ বিভিন্ন অভিযোগে তাকে শোকজ করা হয়। বিজয়নগর উপজেলার রামপুর-মনিপুর, মির্জাপুর-হরষপুর সড়কের নির্মাণ কাজ শম্বুক গতিতে চলছে। এ কাজের ধীরগতিতে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে স্থানীয় সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। অন্যদিকে সরকারী জিওবির টাকা খরচ করা না করা নিয়ে এলজিইডিতে অচলাবস্থা চলছে। নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে অন্য কর্মকর্তাদের শীতল সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
×