ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা দক্ষিণ সিটির বাসিন্দারা উন্নত মানের ইন্টারনেট সেবা পাবেন ॥ সাঈদ খোকন

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ১৫ মার্চ ২০১৬

ঢাকা দক্ষিণ সিটির বাসিন্দারা উন্নত মানের ইন্টারনেট সেবা পাবেন ॥ সাঈদ খোকন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) সব প্রাইমারি রাস্তাসহ বিভিন্ন বড় রাস্তার মোড় ও পাবলিক প্লেসে বিনামূল্যে ইন্টারনেট সেবা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) ও ডিএসসিসি যৌথ উদ্যোগে এ সেবা প্রদান করবে। এতে দক্ষিণ সিটির বাসিন্দাররা উন্নতমানের ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা পাবেন। অতি দ্রুতই এ কার্যক্রম শুরু করা হবে। সোমবার দুপুরে বিটিসিএলের টেলিফোন ভবনে ‘আপনার সচেতনতাই পরিবর্তনের শক্তি’ সেøাগানে ডিএসসিসি ও বিটিসিএলের যৌথ উদ্যোগে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানের আলোচনা সভায় মেয়র এ ঘোষণা দেন। ঘোষণার আগে তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম ফকরুদ্দিন আহম্মেদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। পরিচ্ছন্ন বছর ২০১৬ পালন উপলক্ষে বিশেষ পরিচ্ছন্ন অভিযানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন, ডিএসসিসি ও বিটিসিএলের যৌথ উদ্যোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রাইমারি রাস্তা, বিভিন্ন বড় রাস্তার মোড় ও পাবলিক প্লেসগুলোতে ফ্রি ইন্টারনেট সেবা দেয় হবে। মেয়র বলেন, ঢাকা দক্ষিণকে আধুনিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নগরী গড়ে তুলতে সব ধরনের পদক্ষেপ আমরা হাতে নিয়েছি। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী মে মাসের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণে দেড় হাজার পরিচ্ছন্নতা বাক্স বসান হবে। শহরকে পরিষ্কার রাখতে অতি দ্রুত রাস্তার পাশে প্রতি ১০০ গজ পরপর ডাস্টবিন বসানো হবে। এগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার ও রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সবার। আমরা এর মাধ্যমে অতি দ্রুতই সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন শহর উপহার দিতে সক্ষম হব। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে মেয়র বলেন, আমাদের বর্তমানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক দুর্বলতা রয়েছে। আমরা এ দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে চাই। তা দূর করতে প্রাতিষ্ঠানিক যেসব দুর্বলতা রয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে হবে এজন্য আমরা সমন্বয় করতে চাই। এই নগরী আমাদের সবার। তাই একে পরিষ্কার রাখতে সবাইকে কাজ করতে হবে। নিজের ঘরকে যেমন আমরা পরিষ্কার রাখি, ঠিক তেমনিভাবে এই শহরকেও পরিষ্কার রাখতে হবে। তবেই সব জায়গা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব হবে। আমাদের নিজেদের প্রয়োজনেই এই শহরকে পরিচ্ছন্ন হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। ঢাকা দক্ষিণকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন মেয়র। মেয়র শহরের সৌন্দর্য রক্ষায় ও বিশ্বের কাছে ঢাকাকে সুন্দরভাবে তুলে ধরতে আগামী ৩ মাসের মধ্যেই সকল আবাসিক, বাণিজ্যিক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের ভবনকে রং করার নির্দেশ বাস্তবায়নের অনুরোধ জানান। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম ফকরুদ্দিন আহম্মেদ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন শহর হিসেবে ঢাকাকে গড়ে তুলতে সার্বিকভাবে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ঢাকাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে এ উদ্যোগ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে। তিনি মাটির নিচের কেবলের কাজ করতে গিয়ে খোঁড়াখুঁড়ির জন্য সিটি কর্পোরেশনের যে অনুমতি নিতে হয় তা আরও সহজ করার জন্য মেয়রের বিশেষ হস্তক্ষেপ ও সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, নিজেরা যদি সচেতন হয়ে ময়লা আবর্জনা ফেলি, তাহলে কিন্তু অনেকাংশ ময়লামুক্ত শহর হবে। এসব কাজে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল বলেন, ঢাকা দক্ষিণকে বাসযোগ্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন শহর হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমানে অনেক অগ্রগতিও হয়েছে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন। বক্তব্য শেষে মেয়রসহ অন্যান্য অতিথিরা মিলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানের উদ্বোধন করেন। এর আগে বিটিসিএল ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানের ব্যানারে মেয়রের নামের সাথে স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার ফরিদ উদ্দীন রতনের নাম না থাকায় তার কিছু উগ্র সমর্থক ক্ষিপ্ত হয়ে ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায় ও অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মিল্লাতুল ইসলামকে শারীরিকভাবে হেনস্থা করে। কমিশনার ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতেই এ ঘটনা ঘটলেও কমিশনারকে এ বিষয়ে কোন কথা বলতে দেখা যায়নি। একপর্যায়ে তার সমর্থকরা তাদের জামায়াত-শিবিরের এজেন্ট বলে গালিগালাজ করতে থাকে ও কয়েক ব্যক্তি দৌড়ে গিয়ে ধর ধর বলে চিৎকার করতে থাকেন। এ সময় দ্বিতীয়বারের মতো জনসংযোগ কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তাকে গায়ে ধাক্কা দিতে দিতে বিটিসিএল ভবন এলাকা থেকে বের করে দেন। এ সময় সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কমিশনারের সমর্থকদের মাঝে বাগবিত-তা শুরু হয়। সাংবাদিকরা ওয়ার্ড কমিশনারকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিশনার ফরিদ উদ্দীন বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমার কিছুই জানা নেই। যদি এমন কিছু ঘটেই থাকে আর দলীয় লোক হয় তাহলে আমি এদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে প্রয়োজনীয় শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করব। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বেশি সুবিধার নয়। তারা উভয়েই দুর্নীতিবাজ। তাদের নামে দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তাদের বিরুদ্ধে আপনারা লিখেন।
×