ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শ্রীনগরে ৫ হত্যা মামলা

আইয়ুব আলীর ফাঁসি কার্যকর স্থগিত

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১৫ মার্চ ২০১৬

আইয়ুব আলীর ফাঁসি কার্যকর স্থগিত

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বাঘড়া ইউনিয়নের আলোচিত পাঁচ হত্যা মামলার আসামি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব আলীর (৬০) ফাঁসির রায় কার্যকর স্থগিত হয়ে গেছে। রবিবার রাত সাড়ে ১০টায় তার ফাঁসি হওয়ার কথা ছিল। সে মতে, প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছিল শ্রীনগর থানার পুলিশ। তবে, পুলিশের একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছে, তারা সরকারী মেসেজ পেয়েছিলেন। রবিবার রাত সাড়ে ১০টায় আইয়ুব আলীর ফাঁসির রায় কার্যকর করা হবে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে। তার পরিবারের সদস্যদের মরদেহ হস্তান্তর ও কবরস্থান তৈরি করার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রায় কার্যকর হয়নি। আরেকটি সূত্র বলেছে, আগামী দুইদিনের জন্য ফাঁসির রায় কার্যকর স্থগিত করা হয়েছে। এর আগে পাঁচ খুনের মামলায় আদালত ২০০৫ সালে আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় দেয়। ২০১৩ সালে আপীল বিভাগ এ রায় বহাল রেখে রায় প্রদান করে। সম্প্রতি আইয়ুব আলী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা করে ব্যর্থ হন। জানা গেছে, ২০০১ সালের ৭ জুলাই বাঘড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলীকে হত্যার উদ্দেশে বাঘড়া স্বরূপ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন নিকারী বাড়িতে পরাজিত চেয়ারম্যান মনোয়ার আলী তার সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনীর সদস্য দুলাল, হাশেম ও বাদশাসহ কয়েকজনকে নিয়ে অবস্থান নেয়। সংবাদ পেয়ে আইয়ুব আলীর লোকজন ওই বাড়ি ঘেরাও করলে বাদশার গুলিতে আইয়ুব আলীর ভাতিজা আলাউদ্দিন নিহত হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওইদিন পুলিশের উপস্থিতিতে দুই গ্রুপের মধ্যে দিনব্যাপী সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশসহ ২ শতাধিক আহত হয় ও ইসমাইল নামে আইয়ুব আলী গ্রুপের আরেকজন মারা যায়। পরে বিকেলে উত্তেজিত জনতা পুলিশের কাছ থেকে হ্যান্ডকাফ পরিহিত অবস্থায় মনোয়ার আলী, বাদশা ও হাশেম আলীকে ছিনিয়ে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এতে আইয়ুব আলীকে হুকুমের আসামি করে শ্রীনগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলা চলাকালীন ২০০৩ সালে আইয়ুব আলী জেলে বসে বাঘড়া ইউপিতে একবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এদিকে গত ১১ মার্চ আইয়ুব আলীর ফাঁসির সংবাদে এলাকাবাসী ঢাকা-দোহার সড়কের আল আমিন বাজারে অবস্থান নিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় এবং আইয়ুব আলীর মুক্তি দাবি করে। ওইদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত প্রায় ৭ হাজার নারী-পুরুষ ঢাকা-দোহার সড়কের আল আমিন বাজার থেকে তালুকদার বাড়ি পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তায় অবস্থান নেয়। এ সময় ওই রাস্তায় সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এর পরদিন ১২ মার্চ ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাব সকালে আইয়ুব আলীর প্রাণভিক্ষায় রাষ্ট্রপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করতে মানববন্ধন করেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
×