ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জাফর ওয়াজেদ

দর্পণে এ কার ছায়া

প্রকাশিত: ০৩:৩৯, ১৪ মার্চ ২০১৬

দর্পণে এ কার ছায়া

সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ প্রসারে ও প্রচারে যে অবদান রেখে আসছেন বিএনপি-জামায়াত জোট নেত্রী, তা থেকে তিনি এক পা পিছিয়ে এসে ‘গণমুখী’ হয়ে উঠছেন, এমনটা যারা মনে করেন কিংবা বলার চেষ্টা করেন, তারা আসলে বোকার স্বর্গে বসবাস করছেন। এ কথা বলা যায় নির্দ্বিধায়। প্রবাদ রয়েছে ‘কয়লা ধুইলেও ময়লা যায় না’। দলের কাউন্সিলকে সামনে রেখে জঙ্গী নেত্রী হিসেবে খ্যাত বেগম খালেদা জিয়া বলেছেনও যে, যারা আন্দোলন, সংগ্রামে ছিল, তাদের দলের ভাল পদে রাখা হবে।’ এমন ইঙ্গিতও দিয়েছেন যে, বিগত আন্দোলন সংগ্রামে যেসব নেতা নিষ্ক্রিয় ছিলেন, দলে তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হবে না। বেগম জিয়া ঘোষণা দিয়েছেন ‘প্রবীণ সদস্য যারা আছেন; তারা দলকে অনেক কিছু দিয়েছেন। তাদের উপদেষ্টা পদে দিয়ে তরুণদের দায়িত্ব দিতে চাই। এটা আমার ইচ্ছা। এ কথার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, তার ইচ্ছা-আকাক্সক্ষাই সব। কিন্তু বিগত আন্দোলন-সংগ্রাম বলতে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালের বিভিন্ন সময়ে দেশজুড়ে যারা নাশকতা চালিয়েছে তাদের আসন হবে উচ্চে। কি সেই সংগ্রাম ও আন্দোলন, তা জানে দেশবাসী, যারা ভুক্তভোগী। চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে, পেট্রোলবোমা মেরে, জীবন্ত মানুষকে হত্যা, পুলিশকে পিটিয়ে মারার এবং জঙ্গীবাদের প্রসারের আন্দোলনে যারা সক্রিয় ছিল, তাদের নিয়ে তিনি দলকে সমৃদ্ধ করতে চান। খালেদার আন্দোলনের লক্ষ্যই ছিল শুধু সরকার উৎখাত নয়, যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা, দুর্নীতির মামলা থেকে পুত্রসহ নিজেকে উদ্ধার করাও। মানুষ হত্যায় যারা পারদর্শী, তারাই বেগম জিয়ার কাছে সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য হওয়াটাই স্বাভাবিক। সাধারণ মানুষকে ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে তিনি বিগত তিন বছরে হেন কাজ নেই যা করেননি। পেট্রোলবোমা হামলায় দগ্ধ মানুষের ভয়াল ও বীভৎসতা দেখার মধ্য দিয়ে হয়ত পাশবিক আনন্দ উপলব্ধি করেছেন; আর সম্ভবত সে কারণেই হতাহত মানুষের প্রতি সামান্য সমবেদনাও জানাতে ভুলে গেছেন। যেমনটা ভুলে গিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভারতে সফরকালে গঙ্গার পানি বণ্টন নিয়ে আলোচনা করতে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে খালেদার অগ্নিবোমায় দগ্ধ হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা মানুষ জ্বালার তীব্র কষ্ট-যন্ত্রণার দৃশ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার হয়েছে। শোনা গেছে পৈশাচিক হামলার বর্ণনা। হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, দগ্ধ রোগী ও তাদের স্বজনদের মুখে বিএনপি-জামায়াতের নিষিদ্ধ পেট্রোলবোমা হামলায় সর্বাঙ্গ পুড়ে যাওয়া বীভৎসতার বর্ণনা শুনে তীব্র ক্ষোভ ঝরে পড়েছিল দেশবাসীর কণ্ঠে। নিজ বাসভবন ছেড়ে দলীয় অফিসে আশ্রয় নিয়ে টানা তিন মাস ধরে হরতাল অবরোধের আন্দোলন ডেকে নির্মমভাবে মানুষ হত্যার নির্দেশ দিয়ে গেছেন। সেসব খালেদা জিয়া উপভোগ করেছেন হয়ত। কিন্তু মানুষ দুর্ভোগে পতিত হলেও সামান্য উৎকণ্ঠা প্রদর্শন করেননি। বরং মিথ্যাচারের স্বভাবসুলভ ভাষায় বলেছেন, সরকারী দল তার ডাকা কথিত আন্দোলন কর্মসূচীকে বানচাল করতে বোমা মেরে মানুষ এমনকি পুলিশ হত্যা করছে। ‘গরু মেরে জুতো দানের’ ভাষাটা রপ্ত থাকায় তিনি অবলীলায় সব দায়ভার সরকারের কাঁধে চাপিয়ে নিজেকে নির্ভার রাখতে চেয়েছেন। সামান্য অনুশোচনাও জাগেনি। মানুষ হত্যা অবশ্য তার জন্য নতুন কিছু নয়। কারণ তার স্বামী জিয়াউর রহমান হত্যার রাজনীতির পথ ধরেই ক্ষমতার মসনদে আসীন হয়ে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এবং রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করেই তার রাজনৈতিক দল গঠন করেছিলেন। বিএনপি যে হত্যার রাজনীতির ধারা থেকে সরে আসেনি, তার প্রমাণ বেগম জিয়া বারবার দেখিয়েছেন। ক্ষমতায় থাকাকালে বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। যেমন শাহ এএসএম কিবরিয়া, আহসানউল্লাহ মাস্টার, মনজুরুল ইমাম। শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র হয়েছিল একাধিকবার। তার জনসভায় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আওয়ামী লীগ নির্মূল করার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন পুত্র তারেকের সহায়তায়। ২৩ জন নিহত হওয়ার পর বেগম জিয়া বলেছিলেন, শেখ হাসিনাই ভ্যানিটিব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে এসে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। এমনকি একাধিকবার এমনও বলা হয়েছে প্রয়োজনে আরেকটি ১৫ আগস্ট ঘটানো হবে। আবার নিজেই ১৫ আগস্ট কেক কেটে ভুয়া জন্মদিন পালনের সংস্কৃতি অব্যাহত রেখেছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করা হলে খালেদা বলেছিলেন, এরা যুদ্ধাপরাধী নয়।... এমনকি আদালত নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন, তারেক রহমান তো দল ক্ষমতায় থাকাকালে বলেছিলেন, জামায়াত তাদের পরিবারের সদস্য। এই সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে দেশের সব ক’টি জেলায় ১৭ আগস্ট একযোগে বোমা হামলা চালিয়েছিলেন। যেসব ঘটনা বাংলার মানুষ ভুলে যায়নি। সবচেয়ে বিস্ময়কর যে, এসব ঘটনায় দায়ের করা মামলাগুলো হয় ঝুলে আছে, নতুবা বিলম্বিত হচ্ছে। আর তা হওয়ার কারণে খালেদা দুর্বিনীত হয়ে উঠেছেন। মুখে যা আসে তাই বলে বেড়াচ্ছেন। বিডিআর বিদ্রোহের সময় খালেদার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও সেসব রহস্য উদ্ঘাটন করা হয়নি বলেই তিনি সোৎসাহে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন আজও। নাশকতা ও মানুষ হত্যার কর্মসূচীতে জড়িতদের গ্রেফতার করা হলে তিনি বিষোদগার এবং সমালোচনা করেছেন। বিদেশীদের কাছে ধর্না দিয়েছেন জঙ্গী ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে সরকারের দৃঢ়তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে। বিদেশী প্রভুদের তিনি আজও মান্য করেন। তাই যে কোন বিষয়ে তাদের কাছে নালিশ জানাতে পিছপা হন না। এখনও দলিল-দস্তাবেজ নিয়ে কূটনীতিকদের মহমর্মিতা, সহায়তা পেতে আকুল হয়ে থাকেন। বোমাবাজি, সন্ত্রাসী, নাশকতাকারীদের দলে ঠাঁই দেয়াটা বেগম জিয়ার নৈতিক দায়িত্ব হয়ে উঠেছে। দলের যারা এসব কর্মকা-ে অংশ নেয়নি, তাদের নিষ্ক্রিয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তারা দলে ঠাঁই পাবে নাÑ এমন প্রচারও চলছে। রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক শিষ্টাচার মেনে চলার কাজটি বেগম জিয়া কখনও করেছেন এমন উদাহরণ তেমন মেলে না। ভারতের রাষ্ট্রপতির বাংলাদেশে সফরকালে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচী অনুযায়ী সাক্ষাতের কর্মসূচী তিনি অনায়াসে বাতিল করে দেন। আর এই সময়টাতে জামায়াতকে দিয়ে হরতাল ডেকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির প্রচেষ্টাও চালিয়েছিলেন। ঔচিত্যবোধ এবং পরিমিতিবোধের অভাবে মানুষ যে নিজেকে কতখানি হাস্যকর করতে পারেন, খালেদা জিয়া তার ভূরি ভূরি দৃষ্টান্ত রেখে আসছেন। দেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিতে তিনি কখনও পিছপা হননি। বাংলাদেশকে জিএসপি সুবিধা না দেয়ার আবেদন জানিয়ে তিনি মার্কিন পত্রিকায় স্বনামে পত্রও প্রকাশ করিয়ে বাহবা কুড়াতে চেয়েছেন। আবার সংসদে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছেন, এ চিঠি তিনি লেখেননি। চিঠি তিনি লিখতেই পারেন যে, কারণ তিনি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপে এখনও সচেষ্ট। দেশের ‘বারোটা’ বাজাতে তিনি কখনও পিছপা হননি। লুটপাট, দুর্নীতিতে তাই তার পুত্ররা এমনই কিন্তু ছিল যে, দুই পুত্রই পলাতক জীবন বেছে নিতে বাধ্য হয়। পলাতক থাকা ছোট পুত্রের মৃত্যুর পর সমবেদনা জানাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রীরা যখন শোকগ্রস্ত খালেদাকে সমবেদনা জানাতে তার অফিস কাম রেসিডেন্সে যান, তাদের বাড়ির গেটে আটকে দেয়া হয়। তাদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি, কেউ সৌজন্য সাক্ষাতও করেননি। বরং বলা হয়, ঘুমের ইনজেকশন নিয়ে তিনি ঘুমিয়ে আছেন। সেই ঘুমন্ত মুখটিও দেখাতে দেয়া হয়নি। অবশ্য এমন আচরণ বেগম জিয়াকেই মানায়। গত ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে মহিলা দল নেত্রীদের উদ্দেশে বেগম জিয়া যেসব কথা বলেছেন শেখ হাসিনা সম্পর্কে, তা আসলে তার নিজের চেহারাকেই পরিস্ফুটিত করেছেন। দর্পণে তিনি নিজের মুখ দেখতে গিয়ে ‘ইল্যুশন’ বা ‘হেলোমিনোশনে’ আক্রান্ত হয়েছিলেন বলা যায়। সারাক্ষণ হাসিনা বিদ্বেষ এবং হাসিনা উৎখাতের চিন্তায় আবর্তিত থাকার কারণে দর্পণে দেখা নিজের মুখটিতে প্রলেপ লাগিয়ে সেখানে হাসিনার মুখটিই বসিয়ে দিয়েছেন। শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে খালেদা জিয়া মূলত নিজের স্বরূপ উন্মোচন করেছেন। বলেছেন, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) ভদ্র ব্যবহার করেন না। ভদ্র ভাষায় কথা বলতেও জানেন না। এমন অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করেন, এটা আমাদের জন্য লজ্জার ও অপমানের।’ দুর্নীতির দায়ে পলাতক আসামি তারেক রহমান প্রকাশক হিসেবে বিএনপির মুখপত্র দৈনিক দিনকালের ৯ মার্চ সংখ্যায় প্রকাশিত খালেদার ভাষণে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, “এই আওয়ামী লীগ বলেন, হাসিনাই বলেন, এরা ভদ্র ভাষায় কথা বলতে জানে না। এদের মুখে কোন সুন্দর, ভদ্র ভাষা নেই। তাহলে যাদের মুখে ভদ্র ভাষা নেই, তারা মানুষের সঙ্গে ভদ্র আচরণ করবে কি করে?” শেখ হাসিনা ভদ্র ভাষা ও আচরণ জানেন না বলে খালেদা যে খেদ্যোক্তি করেছেন, তার বিপরীতে বেগম জিয়ার ভদ্র ও শ্লীল ভাষা ব্যবহারের ও ভদ্র আচরণের নমুনা যদি দেখা হয়, তাহলে ভিরমি খেয়ে পড়তে হবে দেশবাসীকে। সংসদে দাঁড়িয়ে তিনি এমপিদের উদ্দেশে একবার বলেছিলেন, ‘চুপ বেয়াদব।’ এটাই তবে ভদ্র ভাষা? বেগম জিয়ার ভদ্রতা, শ্লীলতার নমুনা ২০১৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর জনকণ্ঠ এ প্রকাশিত প্রতিবেদনটিই স্পষ্ট করবে তিনি আয়নায় কার মুখ দেখেন, সেদিন ছাপা হয়Ñ ‘আপনার মেয়েরা এত ঝগড়া করে কেন? এই মেয়েরা ঝগড়া করছ কেন। কিসের জন্য এত কথা বল। চুপ থাকো বেয়াদব কোথাকার। আপনাদের অফিসার কোথায়? এতক্ষণ তো অনেক কথা বললেন। মুখটা বন্ধ কেন। দেশ আজ কোথায় যাচ্ছে। এরা সবাই গোপালগঞ্জের। গোপালগঞ্জের নামই বদলে যাবে। গোপালগঞ্জ থাকবে না। যারা এসব করছে তাদের ওপর আল্লাহর গজব পড়বে। বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন তার বাড়ির নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে কথাগুলো বলেন। বেগম জিয়া রবিবার দুপুর তিনটায় নয়াপল্টনের উদ্দেশে গুলশানের বাসভবন থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি তার বাড়ির ভেতরে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় তিনি পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে ধমকের সুরে বলেন, ধাক্কাধাক্কি বন্ধ করেন। ধাক্কাধাক্কি করবেন না। আমরা কেউ ধাক্কাধাক্কি করতে আসিনি। আমাদের গায়ের ওপর উঠে পড়বেন না। দূরে থাকেন। আপনাদের জায়গা যেখানে সেখানে থাকেন। আপনাদের তো রাস্তায় থাকার কথা। বাড়িতে এসে গেছেন কেন? এক পর্যায়ে তিনি পুলিশের অফিসারদের লক্ষ্য করে বলেন, আপনাদের মেয়েরা এ রকম ঝগড়া করে কেন? এই মেয়েরা চুপ করো। কয়দিনের চাকরি হয়েছে, এত কথা বলো? কিসের জন্য এত কথা বলো। চুপ থাক। বেয়াদব কোথাকার। বেগম জিয়া নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হন দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে। এর পর তনি বাসার ভেতরে রাখা গাড়িতে বসেন কিছুক্ষণ। তার পর গাড়ি থেকে নেমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় তার এক হাতে ছিল জাতীয় পতাকা। বাড়ির উল্টো দিকে অপেক্ষায় থাকা গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে অন্য হাত নেড়ে তিনি পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন। (তার বক্তব্যের অডিও ও শ্রুতিলিখন বিডিনিউজ থেকে নেয়া।) ক্ষুব্ধ বেগম জিয়া বলেন, পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ। আজকে মিথ্যাবাদী সরকার সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে, মা-বোনদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। দেশের প্রতি, জনগণের প্রতি দরদ আছে আমাদের, মায়া আছে। সে জন্য আমরা জনগণকে গুলি করে হত্যা করতে পারি না। কিন্তু আপনারা যেভাবে হত্যা করছেন, তার জবাব আপনাদের দিতে হবে। প্রতিদিন আপনারা আসবেন, বসে থাকবেন গেটের সামনে। ঠিক আছে। প্রতিদিন আমিও এ রকম বের হব। চলুক, কত দিন চলে। কী মনে করেছেন কী? দেশটা কি আপনাদের একলার? পৈতৃক সম্পত্তি হয়ে গেছে আওয়ামী লীগের, যে গু-াবাহিনী দিয়ে আমাদের প্রোগ্রাম বন্ধ করতে চান? পুলিশ বাহিনী দিয়ে প্রোগ্রাম বন্ধ করতে চান? যদি সাহস থাকে, কাউন্টার প্রোগ্রাম করে দেখাতেন। সাহস নেই, দশটা লোকও আসে না। ভাড়াটিয়া লোক ভাড়া করে ডিসি এসপিদের দিয়ে লোক আনায়। বুঝি এটা। না হলে এ রকম করুণ পরিণতি হয়? জেনারেলের স্ত্রী বেগম জিয়া যদি নিজের চেহারাটা ভাল করে দেখতেন, তবে বুঝতে পারতেন, হীনতা, নিচতা, অভদ্রতা আর অশ্লীলতার সংজ্ঞা কোনটা এবং তিনি যা করে আসছেন তা ভদ্র সমাজে গ্রহণযোগ্য কিনা। বাংলায় প্রবাদ আছে, ‘চোরের মার বড় গলা।’ বেগম জিয়ার কণ্ঠে তার প্রতিধ্বনি আর যাই হোক জাতি শ্রবণে যে আগ্রহী নয়, সেটা উপলব্ধি করা উচিত। বিএনপির কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে জঙ্গী ও সন্ত্রাসীদের আগমন না ঘটিয়ে যদি, ভদ্র ও শ্লীলদের সমাগম ঘটাতে পারেন, তবে দেশের রাজনীতির পরিবেশটি ভদ্রোচিত হতে পারার সম্ভাবনা থেকে যায়। কিন্তু সে আশায় গুড়ে বালি অবস্থা যে হবে সেটা নিশ্চিত।
×