ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ইন্টারনেটের গ্রাহক সেবা

প্রকাশিত: ০৩:৩৮, ১৪ মার্চ ২০১৬

ইন্টারনেটের গ্রাহক সেবা

ফাইবার অপটিক্যাল কেবল নেটওয়ার্কের আওতা বাড়ছে। এই কেবলের মাধ্যমে ১৮ হাজার ১৩২টি সরকারী সংস্থা অবিভক্ত নেটওয়ার্কের মধ্যে চলে এসেছে। একই সঙ্গে চলতি বছরেই সাড়ে ৪ হাজার ইউনিয়ন পরিষদ ফাইবার অপটিক্যাল কেবলের আওতায় চলে আসবে। এসবই অগ্রগতির উদাহরণ। তবে কেবল নেটওয়ার্কের আওতা বাড়ার সমান্তরালে গ্রাহক সেবার আওতা বাড়ছে কিনা সেটাও বিবেচ্য। সরকার বিভিন্ন সময়ে দফায় দফায় ইন্টারনেটের দাম কমালেও মানুষ তার সুফল পায়নি। ব্যবসায়ীরা ইন্টারনেট কিনছেন কম দামে, কিন্তু গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করছেন আগের দামেই। তাহলে দাম কমার ফলে গ্রাহকদের কি সুবিধা হলো? ইন্টারনেট ব্যবহার সাশ্রয়ী, সহজলভ্য ও সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা যথাযথভাবে পালন না করা অনভিপ্রেত। ইন্টারনেট ব্যবহারের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর স্পষ্ট নির্দেশ ছিল দাম কমানোর। দৃশ্যত এর দাম কমানো হলেও কার্যত গ্রাহক পর্যায়ে কমেনি এবং সুফলও তারা ভোগ করতে পারছে না। মাঝখান দিয়ে মুষ্টিমেয় কিছু ব্যক্তি মুনাফা লুটছে। মানব সমাজ এখন নানা ক্ষেত্রেই ইন্টারনেটনির্ভর। ইন্টারনেট যুগে বিশ্ব প্রবেশ করা এক যুগান্তকারী ঘটনা, তা আর কাউকে এখন বুঝিয়ে বলতে হয় না। যোগাযোগের এই মাধ্যমটি বিশ্ব মানব সমাজ তথা সভ্যতাকে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনে দিয়েছে। সব ক্ষেত্রে গতিশীলতার পাশাপাশি সবাইকে এনে দিয়েছে নৈকট্য। এক কথায় বলতে গেলে ইন্টারনেট মাধ্যম বিশ্ববাসীকে করেছে এক গ্রামভুক্ত। এই বাস্তবতায় বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকবে এমনটা ভাবা যায় না। এই প্রবাহে যুক্ত থেকে উন্নয়ন যাত্রাকে সমৃদ্ধ করতে সরকার সচেতন শুরু থেকেই। এ খাতে বরাদ্দও করা হয় আশানুরূপভাবে। এ দেশে ইন্টারনেটের ব্যবহার ও ব্যাপক চাহিদা বৃদ্ধিতে জনকল্যাণে বর্তমান সরকার ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়। সর্বসাধারণে যে ধারণাটি প্রতিষ্ঠিত হয় তা হলো- ইন্টারনেট ব্যবহার শুধু সেবামাধ্যম নয়, এটা এখন অধিকারের পর্যায়ে। গণতান্ত্রিক সরকারের অন্যতম দায়িত্ব নাগরিকের মৌলিক অধিকার রক্ষা ও নিশ্চিত করা। এ দায়িত্ব পালনের বোধ থেকেই প্রধানমন্ত্রী বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে এর আওতায় আনতে ও ব্যবহার সহজলভ্য করতে ইন্টারনেট সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। যাতে একেবারে সাধারণ আয়ের মানুষটিও সারাবিশ্বের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন। ৪১ শতাংশ দাম কমিয়ে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) ৬টি সুপারিশ পাঠায় বিটিআরসিকে। সেসব সুপারিশ বাস্তবায়িত হয়েছে কি? তবে বিএসসিসিএলের উদ্যোগ প্রশংসার যোগ্য। সারাদেশের সব মানুষকে একটি নম্বরে নাগরিক সেবা সম্পর্কিত তথ্য প্রদানের উদ্দেশ্যে ‘ন্যাশনাল কল সেন্টার’ গড়ে তোলা হয়েছে। এটি গ্রাহকদের কার্যকর সেবা প্রদান করুক সেটাই প্রত্যাশা। আশার কথা ৩৪ হাজার তরুণ-তরুণীকে তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবী হিসেবে গড়ে তোলার কার্যক্রম সম্প্রতি হাতে নেয়া হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে চীন বা কোরিয়ার মতো বাংলাদেশের একটি দীর্ঘমেয়াদী মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন জরুরী। বলাবাহুল্য এতে গ্রাহকদের সেবার আওতা বাড়ানোর বিষয়টি অগ্রাধিকার দাবি করে।
×